মঙ্গলবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

গাযওয়াতুল হিন্দ

গাযওয়াতুল হিন্দ







বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

হাদীছ নং ১:حَدَّثَنَاأَبُوالنَّضْرِ،حَدَّثَنَابَقِيَّةُ،حَدَّثَنَاعَبْدُاللهِبْنُسَالِمٍ،وَأَبُوبَكْرِبْنُالْوَلِيدِالزُّبَيْدِيُّ،عَنْمُحَمَّدِبْنِالْوَلِيدِالزُّبَيْدِيِّ،عَنْلُقْمَانَبْنِعَامِرٍالْوُصَابِيِّ،عَنْعَبْدِالْأَعْلَىبْنِعَدِيٍّالْبَهْرَانِيِّ،عَنْثَوْبَانَمَوْلَىرَسُولِاللهِصَلَّىاللهُعَلَيْهِوَسَلَّمَ،عَنِالنَّبِيِّصَلَّىاللهُعَلَيْهِوَسَلَّمَقَالَ:عِصَابَتَانِمِنْأُمَّتِيأَحْرَزَهُمُاللهُمِنَالنَّارِ:عِصَابَةٌتَغْزُوالْهِنْدَ،وَعِصَابَةٌتَكُونُمَعَعِيسَىابْنِمَرْيَمَরসূল(স) বলেন, আমার উম্মাতের দুইটি দলকে আল্লাহ তা’আলা জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করবেন। একটি দল যারা হিন্দুস্থানের জিহাদ করবে এবং আরেকটি দল যারা ঈসা ইবনে মারইয়াম(আ) এর সাথে থাকবে। (নাসাঈ, হা/৩১৭৫;মুসনাদে আহমাদ, ৫/২৭৮, হা/২২৩৯৬)তাহক্বীক্ব:ইমাম নাছিরুদ্দীন আলবানী বলেন, হাদীছটি ছহীহ। (নাছিরুদ্দীন আলবানী, তাহক্বীক্ব নাসাঈ, হা/৩১৭৫)ইয়াসির হাসান বলেন, হাদীছটি হাসান। (ইয়াসির হাসান, তাহক্বীক্ব নাসাঈ, হা/৩১৭৫)শু’আইব আরনাউত্ব বলেন, হাদীছটি হাসান। (শু’আইব আরনাউত্ব, তাহক্বীক্ব মুসনাদে আহমাদ, ৫/২৭৮, হা/২২৩৯৬)হামযাহ আহমাদ যাঈন বলেন, এর সানাদ দুর্বল আবু বাকর ইবনুল ওয়ালীদ যুবাইদী এর কারণে। (হামযাহ আহমাদ যাঈন, তাহক্বীক্ব মুসনাদে আহমাদ, ৫/২৭৮, হা/২২২৯৫)হাফিয যুবাইর আলী যাঈ বলেন, হাদীছটি হাসান। (যুবাইর আলী যাঈ, তাহক্বীক্ব নাসাঈ, হা/৩১৭৭)এই হাদীছের রাবী আবু বাকর ইবনুল ওয়ালীদ যুবাইদী কে অনেকে মাজহূল বলেছেন। কিন্তু তার ব্যাপারে ইমাম সুফিয়ান ছাওরী বলেন, তিনি ছিক্বাহ। (ইয়াক্বূব ইবনে সুফিয়ান আল-ফারিসী, কিতাবুল মা’রিফাতি ওয়াত-তারীখ, ৩/১০০)ইমাম ইবনে হিব্বান তাকে ছিক্বাহ বলেছেন। (ইবনে হিব্বান, আছ-ছিক্বাত, ৬/৪৭৮, রাবী নং ৮৬৭৮)ইমাম আবু বাকর মুহাম্মাদ ইবনে মূসা আল-হাযিমী ইমাম যুহরীর ছাত্রদেরকে ‘ত্বাবাক্বাতুছ ছানিয়াহ’ তে উল্লেখ করেছেন এবং তাদের সম্পর্কে বলেছেন যে, তারা মুসলিমের শর্তের উপর রয়েছেন। (মুহাম্মাদ ইবনে ত্বাহির আল-মাক্বদিসী ও আবু বাকর মুহাম্মাদ ইবনে মূসা আল-হাযিমী, শুরূত্বুল আইম্মাতিস সিত্তাহ ও শুরূত্বুল আইম্মাতিল খামসাহ, পৃঃ ৫৭)উক্ত রাবী ইমাম যুহরী এর ছাত্র। (মিযযী, তাহযীবুল কামাল, রাবী নং ৭২৬১)সুতরাং, আবু বাকর ইবনুল ওয়ালীদ যুবাইদী মাজহূল নন বরং হাসানুল হাদীছ। আলহামদুলিল্লাহএছাড়াও আবদুল্লাহ ইবনে সালিম তার মুতাবাআ’তকরেছেন। (মুসনাদে আহমাদ, ৫/২৭৮, হা/২২৩৯৬)আর আবদুল্লাহ ইবনে সালিম ছিক্বাহ ছিলেন। (মিযযী, তাহযীবুল কামাল, রাবী নং ৩২৮৫)সুতরাং, এই হাদীছটির সানাদ হাসান। আলহামদুলিল্লাহকিন্তু এই হাদীছটি ছাড়া “গাযওয়াতুল হিন্দ” এর ব্যাপারে আর কোন ছহীহ হাদীছ নেই।হাদীছ নং ২:حَدَّثَنِيمُحَمَّدُبْنُإِسْمَعِيلَبْنِإِبْرَاهِيمَ،قَالَ:حَدَّثَنَايَزِيدُ،قَالَ:أَنْبَأَنَاهُشَيْمٌ،قَالَ:حَدَّثَنَاسَيَّارٌأَبُوالْحَكَمِ،عَنْجَبْرِبْنِعَبِيدَةَ،عَنْأَبِيهُرَيْرَةَ،قَالَ:وَعَدَنَارَسُولُاللَّهِصَلَّىاللهُعَلَيْهِوَسَلَّمَغَزْوَةَالْهِنْدِ،فَإِنْأَدْرَكْتُهَاأُنْفِقْفِيهَانَفْسِيوَمَالِي،وَإِنْقُتِلْتُكُنْتُأَفْضَلَالشُّهَدَاءِ،وَإِنْرَجَعْتُفَأَنَاأَبُوهُرَيْرَةَالْمُحَرَّرُআবু হুরাইরাহ(রা) বলেন, আমাদেরকে রসূল(স) হিন্দুস্থানের জিহাদের ওয়াদা দিয়েছেন। আবু হুরাইরাহ(রা) বলেন, আমি যদি এতে যেতে পারি, তাহলে আমার জীবন ও আমার সম্পদ তাতে উৎসর্গ করবো। আর যদি আমি এতে নিহত হই, তবে আমি হবো মর্যাদাবান শহীদ। আর যদি আমি ফিরে আসি, তবে আমি হবো জাহান্নাম থেকে মুক্ত আবু হুরাইরাহ(রা)। (নাসাঈ, হা/৩১৭৩, ৩১৭৪; মুসনাদে আহমাদ, ২/২২৯, হা/৭১২৮; মুস্তাদরাক হাকিম, ৩/৫১৪, হা/৬১৭৭; সাঈদ ইবনে মানছূর, আস-সুনান, হা/২৩৭৪; নুআইম ইবনে হাম্মাদ, আল-ফিতান, হা/১২৩৭)তাহক্বীক্ব:আহমাদ শাকির বলেন, এর সানাদ ছহীহ। (আহমাদ শাকির, তাহক্বীক্ব মুসনাদে আহমাদ, ২/২২৯, হা/৭১২৮)ইমাম নাছিরুদ্দীন আলবানী বলেন, এর সানাদ দুর্বল। (নাছিরুদ্দীন আলবানী, তাহক্বীক্ব নাসাঈ, হা/৩১৭৩)ইয়াসির হাসান বলেন, এর সানাদ দুর্বল। (ইয়াসির হাসান, তাহক্বীক্ব নাসাঈ, হা/৩১৭৩)শু’আইব আরনাউত্ব বলেন, এর সানাদ দুর্বল জাবরইবনে আ’বিদাহ এর কারণে। (শু’আইব আরনাউত্ব, তাহক্বীক্ব মুসনাদে আহমাদ, ২/২২৯, হা/৭১২৮)হাফিয যুবাইর আলী যাঈ বলেন, এর সানাদ দুর্বলকেননা জাবর ইবনে আ’বিদাহ কে ইবনে হিব্বান ব্যতীত কেউ ছিক্বাহ বলেন নি। (যুবাইর আলী যাঈ, তাহক্বীক্ব নাসাঈ, হা/৩১৭৫)ইমাম ইবনে হিব্বান জাবর ইবনে আ’বিদাহ কে ছিক্বাহ বলেছেন। (ইবনে হিব্বান, আছ-ছিক্বাত,৪/১১৭, রাবী নং ২০৭৬)এছাড়া অন্য কোন মুহাদ্দিছ তাকে ছিক্বাহ বলেন নি। আর এটা সবারই জানা আছে যে, ইমাম ইবনে হিব্বান, ইমাম তিরমিযী, ইমাম হাকিম “মুতাসাহিল বা শিথিল” ছিলেন। তাদের একক ভাবে কাউকে ছিক্বাহ বলা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু যদি তাদের মধ্যে (ইমাম ইবনে হিব্বান, ইমাম তিরমিযী, ইমাম হাকিম) অন্তত ২জন কাউকে ছিক্বাহ বলেন এবং উক্ত রাবী সম্পর্কে যদি কোন জারাহ না থাকে, তবে ঐ রাবী অবশ্যই মাজহূল না হয়ে হাসানুল হাদীছ হবেন। আলহামদুলিল্লাহতাই জাবর ইবনে আ’বিদাহ মাজহূল।এই হাদীছটির অপর একটি সানাদ রয়েছে। (ইবনে আবী আছিম, কিতাবুল জিহাদ, হা/২৯১)কিন্তু এর সানাদে হাশিম ইবনে সাঈদ আছেন যিনি দুর্বল। (মিযযী, তাহযীবুল কামাল, রাবী নং ৬৫৩৮)এই হাদীছটির অপর আরেকটি সানাদ রয়েছে। (মুসনাদে আহমাদ, ২/৩৬৯, হা/৮৮২৩)কিন্তু এর সানাদে বারা’ ইবনে আবদুল্লাহ আছেন যিনি দুর্বল। (মিযযী, তাহযীবুল কামাল, রাবী নং ৬৫১)এছাড়াও হাসান বাছরী এই হাদীছটি বর্ণনা করেছেন আবু হুরাইরাহ(রা) থেকে। আর তিনি আবু হুরাইরাহ(রা) থেকে শুনেন নি। (ইবনে আবু হাতিম, কিতাবুল মারাসীল, রাবী নং ৫৪)এছাড়াও হাসান বাছরী মুদাল্লিস ছিলেন। (ইবনেহাজার আসক্বালানী, ত্বাবাক্বাতুল মুদাল্লিসীন, রাবী নং ৪০)আর একজন মুদাল্লিসের হাদীছ তখনই গ্রহণ করা যাবে যখন উক্ত রাবী ‘হাদ্দাছানা’ বা ‘সামি’তু’ বা ‘আখবারানা’ বা ‘ছানা’ বলবে অথবা উক্ত রাবীর বর্ণিত হাদীছের শাওয়াহিদ ছহীহ হাদীছ থাকবে। কিন্তু উক্ত হাদীছের কোন শাওয়াহিদ ছহীহ হাদীছ নেই। যেগুলো রয়েছে তা সবই দুর্বল।হাদীছ নং ৩:حَدَّثَنَابَقِيَّةُبْنُالْوَلِيدِ،عَنْصَفْوَانَ،عَنْبَعْضِالْمَشْيَخَةِ،عَنْأَبِيهُرَيْرَةَ،رَضِيَاللَّهُعَنْهُقَالَ:قَالَرَسُولُاللَّهِصَلَّىاللهُعَلَيْهِوَسَلَّمَ،وَذَكَرَالْهِنْدَ،فَقَالَ:لَيَغْزُوَنَّالْهِنْدَلَكُمْجَيْشٌ،يَفْتَحُاللَّهُعَلَيْهِمْحَتَّىيَأْتُوابِمُلُوكِهِمْمُغَلَّلِينَبِالسَّلَاسِلِ،يَغْفِرُاللَّهُذُنُوبَهُمْ،فَيَنْصَرِفُونَحِينَيَنْصَرِفُونَفَيَجِدُونَابْنَمَرْيَمَبِالشَّامِقَالَأَبُوهُرَيْرَةَ:إِنْأَنَاأَدْرَكْتُتِلْكَالْغَزْوَةَبِعْتُكُلَّطَارِفٍلِيوَتَالِدٍوَغَزَوْتُهَا،فَإِذَافَتْحَاللَّهُعَلَيْنَاوَانْصَرَفْنَافَأَنَاأَبُوهُرَيْرَةَالْمُحَرِّرُ،يَقْدَمُالشَّامَفَيَجِدُفِيهَاعِيسَىابْنَمَرْيَمَ،فَلَأَحْرِصَنَّأَنْأَدْنُوَمِنْهُفَأُخْبِرُهُأَنِّيقَدْصَحِبْتُكَيَارَسُولَاللَّهِ،قَالَ:فَتَبَسَّمَرَسُولُاللَّهِصَلَّىاللهُعَلَيْهِوَسَلَّمَوَضَحِكَ،ثُمَّقَالَ:هَيْهَاتَهَيْهَاتَআবু হুরাইরাহ(রা) বলেন, রসূল(স) হিন্দুস্থানের প্রসঙ্গে বলেন, অবশ্যই তোমাদের একটি দল হিন্দুস্থানে যুদ্ধ করবে। আল্লাহ তা’আলা সেই দলের যোদ্ধাদের সফলতা দান করবেন। তারা হিন্দুস্থানের রাজাদেরকে শিকল পড়িয়ে টেনে আনবে। আল্লাহ তা’আলা (যারা যুদ্ধ করবে) তাদেরকে ক্ষমা করে দিবেন এবং যারা ফিরে আসবে, তারা ঈসা ইবনে মারইয়াম(আ) কে সিরিয়ায় পাবে।আবু হুরাইরাহ(রা) বলেন, আমি যদি সেই গাযওয়াপেতাম, তাহলে আমার সকল নতুন ও পুরাতন সামগ্রী বিক্রয় করে দিতাম এবং এতে অংশগ্রহণকরতাম। যখন আল্লাহ তা’আলা আমাদের সফলতা দান করতেন এবং আমরা ফিরতাম, তখন আমি একজন মুক্ত আবু হুরাইরাহ(রা) হতাম, যে কিনা সিরিয়ায় ঈসা ইবনে মারইয়াম(আ) কে পাওয়ার গর্ব নিয়ে ফিরতো।আবু হুরাইরাহ(রা) বলেন, হে রসূল(স)! আমার অনেক ইচ্ছা হয় সেই সময়টা পেতে, যখন আমি ঈসা ইবনে মারইয়াম(আ) এর এত নিকটবর্তী হতে পারতাম ও আমি তাকে বলতে পারতাম যে, আমি রসূল(স) এর একজন ছাহাবী। তখন রসূল(স) মুচকি হাসলেন এবং বললেন, খুব কঠিন, খুব কঠিন। (নুআইম ইবনে হাম্মাদ, আল-ফিতান, হা/১২৩৬; মুসনাদে ইসহাক্ব ইবনে রাহওয়াইহ, হা/৫৩৭)তাহক্বীক্ব:এই হাদীছের রাবী বাক্বিয়্যাহ ইবনুল ওয়ালীদ মুদাল্লিস ছিলেন। (ইবনে হাজার আসক্বালানী, ত্বাবাক্বাতুল মুদাল্লিসীন, রাবী নং ১১৭)যদিও ইসমাঈল ইবনে আইয়্যাশ তার মুতাবাআ’ত করেছেন। (মুসনাদে ইসহাক্ব ইবনে রাহওয়াইহ, হা/৫৩৭)কিন্তু তিনিও মুদাল্লিস ছিলেন। (ইবনে হাজারআসক্বালানী, ত্বাবাক্বাতুল মুদাল্লিসীন, রাবী নং ৬৮)আর একজন মুদাল্লিসের হাদীছ তখনই গ্রহণ করা যাবে যখন উক্ত রাবী ‘হাদ্দাছানা’ বা ‘সামি’তু’ বা ‘আখবারানা’ বা ‘ছানা’ বলবে অথবা উক্ত রাবীর বর্ণিত হাদীছের শাওয়াহিদ ছহীহ হাদীছ থাকবে। কিন্তু উক্ত হাদীছের কোন শাওয়াহিদ ছহীহ হাদীছ নেই। যেগুলো রয়েছে তা সবই দুর্বল।এছাড়াও এই হাদীছের অপর রাবী ছফওয়ান ইবনে আমর “কিছু শাইখ বর্ণনা করেছেন আবু হুরাইরাহ(রা) থেকে” এভাবে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন। এখানে তার “কিছু শাইখ” মাজহূল। এটিও হাদীছটি দুর্বল হওয়ার অন্যতম কারণ।হাদীছ নং ৪:حَدَّثَنَاالْحَكَمُبْنُنَافِعٍ،عَمَّنْحَدَّثَهُعَنْكَعْبٍ،قَالَ:يَبْعَثُمَلِكٌفِيبَيْتِالْمَقْدِسِجَيْشًاإِلَىالْهِنْدِفَيَفْتَحُهَا،فَيَطَئُواأَرْضَالْهِنْدِ،وَيَأْخُذُواكُنُوزَهَا،فَيُصَيِّرُهُذَلِكَالْمَلِكُحِلْيَةًلَبَيْتِالْمَقْدِسِ،وَيُقْدِمُعَلَيْهِذَلِكَالْجَيْشُبِمُلُوكِالْهِنْدِمُغَلَّلِينَ،وَيُفْتَحُلَهُمَابَيْنَالْمَشْرِقِوَالْمَغْرِبِ،وَيَكُونُمَقَامُهُمْفِيالْهِنْدِإِلَىخُرُوجِالدَّجَّالِকা’ব(রা) বলেন, বাইতুল মুক্বাদ্দাসের (জেরুসালেমের) একজন রাজা তার একটি সৈন্যবাহিনী হিন্দুস্থানের দিকে পাঠাবেন। সৈন্যরা হিন্দুস্থানের ভূমি ধ্বংস করে দিবেএবং হিন্দুস্থানের ধন-ভাণ্ডার দখল করে নিবে। তারপর রাজা এসব ধন-সম্পদ দিয়ে বাইতুল মুক্বাদ্দাস (জেরুসালেম) সজ্জিত করবে। এই দলটি বাইতুল মুক্বাদ্দাসের (জেরুসালেমের) রাজার দরবারে হিন্দুস্থানেররাজাদেরকে উপস্থিত করবে। ঐ রাজার নির্দেশে তার সৈন্যবাহিনী পূর্ব থেকে পশিম পর্যন্ত সকল এলাকা বিজয় করবে এবং হিন্দুস্থানে ততক্ষণ পর্যন্ত অবস্থান করবে, যতক্ষণ না দাজ্জালের আগমন ঘটে। (নুআইম ইবনে হাম্মাদ, আল-ফিতান, হা/১২৩৫)তাহক্বীক্ব:এই হাদীছের রাবী হাকাম ইবনে নাফি “আমাকে হাদীছ বলেছেন তিনি, যিনি কা’ব(রা) থেকে হাদীছ বর্ণনা করেছেন” এভাবে হাদীছটি বর্ণনাকরেছেন। অর্থাৎ, যিনি কা’ব(রা) থেকে হাদীছ বর্ণনা করেছেন, তিনি মাজহূল।সুতরাং, মাজহূল রাবীর বর্ণনা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।হাদীছ নং ৫:حَدَّثَنَاالْوَلِيدُ،ثَنَاصَفْوَانُبْنُعَمْرٍو،عَمَّنْحَدَّثَهُ،عَنِالنَّبِيِّصَلَّىاللهُعَلَيْهِوَسَلَّمَقَالَ:يَغْزُوقَوْمٌمِنْأُمَّتِيالْهِنْدَ،يَفْتَحُاللَّهُعَلَيْهِمْحَتَّىيَأْتُوابِمُلُوكِالْهِنْدِمَغْلُولِينَفِيالسَّلَاسِلِ،فَيَغْفِرُاللَّهُلَهُمْذُنُوبَهُمْ،فَيَنْصَرِفُونَإِلَىالشَّامِ،فَيَجِدُونَعِيسَىابْنَمَرْيَمَعَلَيْهِالسَّلَامُبِالشَّامِরসূল(স) বলেন, আমার উম্মাতের কিছু লোক হিন্দুস্থানে যুদ্ধ করবে। আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে সফলতা দান করবেন। এমনকি তারা হিন্দুস্থানের রাজাদেরকে শিকলবদ্ধ করবে। আল্লাহ তা’আলা ঐ সকল লোকদেরকে (যারা যুদ্ধ করবে) ক্ষমা করে দিবেন। যখন তারা সিরিয়ার দিকে অগ্রসর হবে, তখন তারা ঈসা ইবনে মারইয়াম(আ) কে সেখানে পাবে। (নুআইম ইবনে হাম্মাদ, আল-ফিতান, হা/১২৩৯)তাহক্বীক্ব:এই হাদীছের রাবী ছফওয়ান ইবনে আমর “আমাকে হাদীছ বলেছেন তিনি, যিনি রসূল(স) থেকে হাদীছবর্ণনা করেছেন” এভাবে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন। অর্থাৎ, যিনি রসূল(স) থেকে হাদীছ বর্ণনা করেছেন, তিনি মাজহূল।সুতরাং, মাজহূল রাবীর বর্ণনা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।এখানে অনেকে বলতে পারেন যে, তিনি হয়তো কোন ছাহাবী থেকে হাদীছ বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তিনি শুধুমাত্র একজন ছাহাবী আবদুল্লাহ ইবনেবুসর(রা) ছাড়া অন্য কোন ছাহাবী থেকে হাদীছ বর্ণনা করেন নি। (যাহাবী, সিয়ারু আ’লামিন নুবালা, ৬/৩৮০, রাবী নং ১৬০)এমনকি ইমাম ইবনে হিব্বান তাকে তাবি-তাবিঈ বলেছেন। (ইবনে হিব্বান, মাশাহীরু উলামায়িল আমছার, রাবী নং ১৪১৩)অর্থাৎ, তিনি হয়তো কোন ছাহাবী কে দেখেন নি। আল্লাহু আ’লামতিনি বেশীরভাগ হাদীছ তাবিঈদের থেকে বর্ণনা করেছেন। তাই শুধুমাত্র ধারণা করে বলা উচিত নয় যে, তিনি হয়তো কোন ছাহাবী থেকে হাদীছ বর্ণনা করেছেন। আল্লাহু আ’লামসুতরাং, “গাযওয়াতুল হিন্দ” এর ব্যাপারে আলোচ্য প্রথম হাদীছটি ছাড়া অন্য হাদীছসমূহ দুর্বল। আলহামদুলিল্লাহমূলত ৪৪ হিজরি সনে মু’য়াবিয়াহ(রা) এর আমলে মুসলমানগণ হিন্দুস্থানে অভিযান পরিচালনা করেন। সুলত্বান মাহমুদ হিন্দুস্থানে চতুর্দিক থেকে আক্রমণ করেন। তিনি হিন্দুস্থানে প্রবেশ করে শত্রু নিধন করেন, তাদের অনেককে বন্দী করেন এবং বিপুল পরিমাণ গণীমাতের মাল হস্তগত করেন। তিনি সোমনাথ মন্দির ধ্বংস করেন এবং সেখানকার প্রধান মূর্তি বিধ্বস্ত করেন। তিনি বিপুল পরিমাণ তরবারী ও মাল প্রভৃতি হস্তগত করে আল্লাহর সাহায্যপ্রাপ্ত হয়ে প্রত্যাবর্তন করেন। (ইবনে কাছীর, আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ, ৯/২১৮, ২১৯)কিন্তু ভবিষ্যতে হিন্দুস্থানে জিহাদ হবে কিনা সেটা আল্লাহই ভালো জানেন। এই বিষয়ে বেশী বাড়াবাড়ি করা উচিত নয়।তাই আমাদের সকলের উচিত তাক্বলীদ মুক্ত হয়ে ক্বুর’আন ও ছহীহ হাদীছ দৃঢ়ভাবে গ্রহণ করা এবং মেনে চলা। আল্লাহ আমাদের সকলকে হিদায়াতদান করুক। আমীন

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

কোরান কি সঠিকভাবে সংরক্ষন করা হয়েছে?

কোরান কি সঠিকভাবে সংরক্ষন করা হয়েছে পর্ব-১ কি যেন বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এটা কি আলোচনা নাকি সমালোচনা ঠিক বুঝি উঠতে পারছিলাম না। আমরা উপ...