কোরান কি সঠিকভাবে সংরক্ষন করা হয়েছে পর্ব-১
কি যেন বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এটা কি আলোচনা নাকি সমালোচনা ঠিক বুঝি উঠতে পারছিলাম না। আমরা উপস্থিত আছি বাদল, অভি, সাজিদ ও আমি।
বাদল ছেলেটা দেখি একটু ভদ্র টাইপের। ইন্টারি সেকেন্ডারি পড়ে। একটা সময় মাঝে মাঝে দেখতাম মাসজিদে নামায পড়তে আসত। এখন অবশ্য আসে না। কারণ জানা ছিল না। পরে জানতে পারলাম সে নাকি এখন পুরোপুরিভাবে সংশয়বাদী হয়ে গেছে।এখন তার কাছে নামায নাকি জিমনাস্টিক ছাড়া আর কিছুই মনে হয় না। তার কাছে এখন কুরান বড়জর ৬ষ্ঠ শব্দাতীর ইতিহাস ছাড়া আর কিছুই না। মাঝে মাঝে শুনি ও নাকি বলে বেড়ায় কুরানকে নাকি বিভিন্ন সময় সংযোজন বা বিয়োজন বা বিকৃত করেছে মুসলিমরা। তাই সেই এখন ইসলাম ত্যাগ করতে প্রায় রাজি হয়ে আছে।যেমন চিন্তা তেমন কাজ। সেই বিশ্বাসকেই আবার ডিফেন্স দিচ্ছে প্রতিবারের মত। এটা নিয়ে বাদল আলোচনা নাকি বলব সমালোচন করছে। আমার মনে হয় সমালোচন শব্দটা এখানে ম্যাচিউর। কারণ নাস্তিকরা ইসলাম নিয়ে আলোচনা থেকে সমালোচনাই বেশি করে থাকে।
-বাদল বলল ' কুরান নাকি সঠিকভাবে সংরক্ষন করা হয় নি '
- 'কিভাবে বুঝলি যে কুরান নাকি সঠিকভাবে সংরক্ষন করা হয়নি 'আমি বললাম।ও বললেই হলো নাকি এটা কি গাছ থেকে আপেল পড়া মত সহজ কথা।
-'কুরান নাকি সঠিকভাবে সংরক্ষন করা হয় নি এর বড় প্রমান হচ্ছে কোরানের কোনো প্রাচীন পান্ডুলিপি নাই'
- আমি বললাম ' যা বললে সবটুকুই ভুল বললে '!
-'আশ্চর্যকথা বাদল দার কথা যে ভুল তা আবার আপনি কিভাবে বুঝলেন । পারলে প্রমান করেন বাদল দার কথা ভুল? অভি বলল।'
অভি ছেলেটাকে একেবারে বলতে পারেন বাদলের অন্ধ শিষ্য। শিষ্যত্ব এতটা মেনে যে বাদল যা বলে তাই সত্য।বুঝতেই পারছেন বাদল কিভাবে মস্তিষ্ক ধুলাই করেছে। ও হলো বাদলের অবিশ্বাসীর রাজ্যের Chief Commander. বাদলের রাজ্যের জুড়ে পড়া ফুলগুলো সবার কাছে বেছে বেড়ায়। কথা বলার স্টাইল দেখেই বুঝতে আর বাকি না যে ছেলেটা কতটা ফাজিল হয়ে গেছে।
-'কি, কি হলো পারলেন না তো!'
আমি অবশ্য এখন আমার পাশে বসা একজন মানুষের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। সাজিদ।হ্যা সাজিদ ও এখন কিছুই বলছে না। ও, এত আবার কম কথা বলে। আমার গাঁ জ্বলে যাচ্ছে। অভির কানের নিচে দু'চারটি চর মারতে পারলেন মনে শান্তি পেতাম। হঠাৎ দিকে সাজিদের মুখ থেকে -
-' আরে এত উত্তেজিত হওয়া কি হলো। কে বলেছে যে কুরান প্রাচীন পান্ডুলিপি নেই। তুর কি জানস Birmingham University - তে কুরানের প্রাচীন পান্ডুলিপি পাওয়া গেছে।'
সাজিদ এবার কথা বলছে দেখ একটু শান্তি পেলাম। এবার দেখি আমাদের গুরু শিষ্যের দম কতটুকু
- 'সাজিদ আবার বলা শুরু করল Birmingham University -তে যে কুরান পাওয়া গেছে তা Oxford University -তে কার্বন ডেটিং করার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে এটা লেখা হয়েছে 568 থেকে 645 সালের মধ্যে। (1)এর জন্য David Thomas,যিনি Professor of Christianity and Islam. Birmingham University. তিনি বলেন"এই পরীক্ষাগুলো আমাদের একটি পরিসীমা প্রদান করে, দেখানো হয় যে 95% ও বেশি সম্ভবনা রয়েছে চার্চমেন্ট 568 থেকে 645 এর মধ্যে, তারা আমাদের ইসলামের প্রকৃত উৎসের মধ্যে নিয়ে যেতে পারে" (2)
-'তুই কি বলতে পারবে মুহাম্মাদ(সা)-এর জম্মগ্রহণ ও মৃত্যুবরণ করেছে কবে সাজিদ বলল'
-'Yes,I will can. 'মহাম্মাদের জম্ম হয়েছিল ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে এবং মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৬৩৩ খ্রিস্টাব্দে।'
- তুই কি খেয়াল করেসিস যে উপরের তথ্য অনুযায়ী প্রায় সেই কুরান লেখা হয়ে মুহাম্মাদ(সা)এর সময়।
-'আচ্ছা মেনে নিলাম।কিন্তু এ ও তো হতে পারে যে সেই কুরানের সাথে বর্তমান কুরানের অমিল বা ক্রমবিন্যাস ভিন্ন? বাদল বলল'
- 'না তোর ধারণা ঠিক না। বিংশ শতাব্দীতে সে কুরান পাওয়া গেছে তার সাথে বর্তমান প্রমিত কুরআন অমিল বা ক্রমবিন্যাস ভিন্ন নয়।বরং তা বর্তমান প্রমিত কুরানের অনুরূপ (3)এর জন্য ফরাসী কুরআন অনুবাদক D.Masson বলেছেন "আমরা বলতে পারে যে আমাদের কাছে বর্তমানে যে কুরান আছে তার মধ্যে বিশ্বস্ততার নীতি রয়েছে(4)
আমি শুধু সাজিদের দিকে তাকিয়ে আছে যে ও কিভাবে এত কিছু মনে রাখে।
-'সাজিদ আবার বলা শুরু করল এই আবিষ্কার পশ্চিমাদের কুরান সম্পর্কে ধারণাকে ছুঁ মেরে উড়িয়ে দিয়েছি। অধ্যাপক Joseph E B Lumbard যিনি Birmingham Univesity -তেকোরান কি সঠিকভাবে সংরক্ষন করা হয়েছে পর্ব-১
কি যেন বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এটা কি আলোচনা নাকি সমালোচনা ঠিক বুঝি উঠতে পারছিলাম না। আমরা উপস্থিত আছি বাদল, অভি, সাজিদ ও আমি।
বাদল ছেলেটা দেখি একটু ভদ্র টাইপের। ইন্টারি সেকেন্ডারি পড়ে। একটা সময় মাঝে মাঝে দেখতাম মাসজিদে নামায পড়তে আসত। এখন অবশ্য আসে না। কারণ জানা ছিল না। পরে জানতে পারলাম সে নাকি এখন পুরোপুরিভাবে সংশয়বাদী হয়ে গেছে।এখন তার কাছে নামায নাকি জিমনাস্টিক ছাড়া আর কিছুই মনে হয় না। তার কাছে এখন কুরান বড়জর ৬ষ্ঠ শব্দাতীর ইতিহাস ছাড়া আর কিছুই না। মাঝে মাঝে শুনি ও নাকি বলে বেড়ায় কুরানকে নাকি বিভিন্ন সময় সংযোজন বা বিয়োজন বা বিকৃত করেছে মুসলিমরা। তাই সেই এখন ইসলাম ত্যাগ করতে প্রায় রাজি হয়ে আছে।যেমন চিন্তা তেমন কাজ। সেই বিশ্বাসকেই আবার ডিফেন্স দিচ্ছে প্রতিবারের মত। এটা নিয়ে বাদল আলোচনা নাকি বলব সমালোচন করছে। আমার মনে হয় সমালোচন শব্দটা এখানে ম্যাচিউর। কারণ নাস্তিকরা ইসলাম নিয়ে আলোচনা থেকে সমালোচনাই বেশি করে থাকে।
-বাদল বলল ' কুরান নাকি সঠিকভাবে সংরক্ষন করা হয় নি '
- 'কিভাবে বুঝলি যে কুরান নাকি সঠিকভাবে সংরক্ষন করা হয়নি 'আমি বললাম।ও বললেই হলো নাকি এটা কি গাছ থেকে আপেল পড়া মত সহজ কথা।
-'কুরান নাকি সঠিকভাবে সংরক্ষন করা হয় নি এর বড় প্রমান হচ্ছে কোরানের কোনো প্রাচীন পান্ডুলিপি নাই'
- আমি বললাম ' যা বললে সবটুকুই ভুল বললে '!
-'আশ্চর্যকথা বাদল দার কথা যে ভুল তা আবার আপনি কিভাবে বুঝলেন । পারলে প্রমান করেন বাদল দার কথা ভুল? অভি বলল।'
অভি ছেলেটাকে একেবারে বলতে পারেন বাদলের অন্ধ শিষ্য। শিষ্যত্ব এতটা মেনে যে বাদল যা বলে তাই সত্য।বুঝতেই পারছেন বাদল কিভাবে মস্তিষ্ক ধুলাই করেছে। ও হলো বাদলের অবিশ্বাসীর রাজ্যের Chief Commander. বাদলের রাজ্যের জুড়ে পড়া ফুলগুলো সবার কাছে বেছে বেড়ায়। কথা বলার স্টাইল দেখেই বুঝতে আর বাকি না যে ছেলেটা কতটা ফাজিল হয়ে গেছে।
-'কি, কি হলো পারলেন না তো!'
আমি অবশ্য এখন আমার পাশে বসা একজন মানুষের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। সাজিদ।হ্যা সাজিদ ও এখন কিছুই বলছে না। ও, এত আবার কম কথা বলে। আমার গাঁ জ্বলে যাচ্ছে। অভির কানের নিচে দু'চারটি চর মারতে পারলেন মনে শান্তি পেতাম। হঠাৎ দিকে সাজিদের মুখ থেকে -
-' আরে এত উত্তেজিত হওয়া কি হলো। কে বলেছে যে কুরান প্রাচীন পান্ডুলিপি নেই। তুর কি জানস Birmingham University - তে কুরানের প্রাচীন পান্ডুলিপি পাওয়া গেছে।'
সাজিদ এবার কথা বলছে দেখ একটু শান্তি পেলাম। এবার দেখি আমাদের গুরু শিষ্যের দম কতটুকু
- 'সাজিদ আবার বলা শুরু করল Birmingham University -তে যে কুরান পাওয়া গেছে তা Oxford University -তে কার্বন ডেটিং করার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে এটা লেখা হয়েছে 568 থেকে 645 সালের মধ্যে। (1)এর জন্য David Thomas,যিনি Professor of Christianity and Islam. Birmingham University. তিনি বলেন"এই পরীক্ষাগুলো আমাদের একটি পরিসীমা প্রদান করে, দেখানো হয় যে 95% ও বেশি সম্ভবনা রয়েছে চার্চমেন্ট 568 থেকে 645 এর মধ্যে, তারা আমাদের ইসলামের প্রকৃত উৎসের মধ্যে নিয়ে যেতে পারে" (2)
-'তুই কি বলতে পারবে মুহাম্মাদ(সা)-এর জম্মগ্রহণ ও মৃত্যুবরণ করেছে কবে সাজিদ বলল'
-'Yes,I will can. 'মহাম্মাদের জম্ম হয়েছিল ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে এবং মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৬৩৩ খ্রিস্টাব্দে।'
- তুই কি খেয়াল করেসিস যে উপরের তথ্য অনুযায়ী প্রায় সেই কুরান লেখা হয়ে মুহাম্মাদ(সা)এর সময়।
-'আচ্ছা মেনে নিলাম।কিন্তু এ ও তো হতে পারে যে সেই কুরানের সাথে বর্তমান কুরানের অমিল বা ক্রমবিন্যাস ভিন্ন? বাদল বলল'
- 'না তোর ধারণা ঠিক না। বিংশ শতাব্দীতে সে কুরান পাওয়া গেছে তার সাথে বর্তমান প্রমিত কুরআন অমিল বা ক্রমবিন্যাস ভিন্ন নয়।বরং তা বর্তমান প্রমিত কুরানের অনুরূপ (3)এর জন্য ফরাসী কুরআন অনুবাদক D.Masson বলেছেন "আমরা বলতে পারে যে আমাদের কাছে বর্তমানে যে কুরান আছে তার মধ্যে বিশ্বস্ততার নীতি রয়েছে(4)
আমি শুধু সাজিদের দিকে তাকিয়ে আছে যে ও কিভাবে এত কিছু মনে রাখে।
-'সাজিদ আবার বলা শুরু করল এই আবিষ্কার পশ্চিমাদের কুরান সম্পর্কে ধারণাকে ছুঁ মেরে উড়িয়ে দিয়েছি। অধ্যাপক Joseph E B Lumbard যিনি Birmingham Univesity
২০১৫ সালে বাহিংহাম কোরানের প্রাচীন পত্র সংগ্রহে নেতৃত্ব দেন তিনি বলেন:
"সাম্প্রতিক সময়ের এই আবিষ্কার ;মৌলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই আবিষ্কার থেকে এটাই অনুমিত হয়ে উঠে ধ্রুপদী ইসলামের উৎস থেকে কুরআনের পাঠ্যের যে ইতিহাস বর্ণিত হয়;তা সঠিক।পশ্চিমা তাত্ত্বিকদের সিংহভাগ কুরআনের ইতিহাসে নিয়ে যে সন্দেহ পোষণ করেছে তা অসমর্থনযোগ্য(5)
সাজিদের কথা শুনতে শুনতে হঠাৎ অনুভব করলাম মৃদুমন্দ বাতাস বইছে। চোখে পড়ছে নদীতে ভেসে থাকা নৌকাগুলো। নৌকা থেকে আলো প্রতিফলিত হয়ে আমাদের চোখে এসে পড়ছে।সে এক অন্য অনুভূতি। বলে বুঝানো যাবে না ;অসাধারণ;অপূর্ব। পাশে চেয়ে দেখি গাছের পাতার উপর শিশির পড়ে আছে।হঠাৎ -
-আরে বুঝিছে যত্তসব ;তোদের কুরান তো নাকি সাতটি ভাষায় নাযিল হয়েছে। মুহাম্মাদ এখানে একটা ভুল করেছে!বাদল বলল।
উৎসুক মনে জিজ্ঞাসা করল অভি কিভাবে ভুল করেছে মুহাম্মাদ?অভি মুখের মৃদুমন্দ হাসি;ভাব দেখে মনে হয় বাদল বুঝি এবার সাজিদকে হার মানিয়ে দিবে সে জন্যই হাসি'
-বাদল বলল' মুহাম্মাদ এখানে সাত ভাষায় নাযিল করার কথা বলে ভুল করেছে কারন এই সাত ভাষায় কুরান পাঠ করলে সাত রকমের হয় এবং একটার সাথে আরেকটার অমিল দেখা যায় অর্থাৎ কুরানে কন্ডাডিকশন আছে! বলে হু হু করে হাসতে লাগলো। হাসির ফলে মুখে রীতি মত বড় সর একটা গর্ত লক্ষ করা যাচ্ছে। যদি মাছি মশা ঢুকে যায় বোধ হয় দিশা পাবে না।আমি সাজিদের কাছ থেকে জবাবের আশায় চেয়ে আছে তার দিকে।
-সাজিদ বলল' তোর ধারণা একেবারেই ভুল! প্রথমত কুরআন সাতটি ভাষায় নাযিল হয় নি ;বরং সাতটি উপভাষায়। তোরা কি ভাষা আর উপভাষার মধ্যে পার্থক্য ও বুঝিস না। আর কন্ডাডিকশন;এখানে কুরানে কোনো কন্ডাডিকশন নেই কারণ এই সাতটি উপভাষাকেই অনুমোদন করা হয়েছে। ধর, তো কাছে একটা বই আছে আর তুই এটাকে সাতটি উপভাষায় সাতজন কে অনুবাদ করতে বা পড়লে দিলে।একজন বরিশালে,আরেকজন চিটাগাং.....
আর তারা সবাই তা নিজেদের মতো করে পড়ল বা অনুবাদ করল এখন আমরা সবাই জানি যে বরিশালের আঞ্চলিক ভাষার সাথে চিটাগাংরের আঞ্চলিক ভাষার কিছু অর্থ ও শব্দগত পার্থক্য আছে। এখন আমি যদি বলে প্রথম জনের পড়া বা অনুবাদের সাথে দ্বিতীয় জনের পড়া বা অনুবাদের ক্ষেত্রে যেহেতু পার্থক্য আছে তাই বইয়ের মধ্যে কন্ডাডিকশন আছে। এখন কেউ যদি দাবি করে যে বইয়ের মধ্যে কন্ডাডিকশন তাহলে কি তার দাবি ঠিক হবে?
-অভি বলল 'না,ঠিক হবে না।'
-'কেন?'
-'কারণ আমি তো নিজেই তার অনুমোদন দিয়েছে।পড়তে বা অনুবাদ করতে।'
-'ঠিক তাই, কুরান ও সেই শেম কাজটা করেছে, কুরানকে ও সাতটি আঞ্চলিক ভাষায় পড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যেহেতু দেওয়া হয়েছে,তাই এর মধ্যে যদিও কিছু অর্থগত বা শব্দগত পার্থক্য থেকেও থাকে তাহলে ও আমরা তাকে কন্ডাডিকশন বলতে পারে না।'
চেয়ে দেখি মূহুর্তের মধ্যে অভি আর বাদলের মুখটা সেকা সেকা পাওরুটির মতো মনে হচ্ছে।
-'অভি বলল,আচ্ছা না হয় বুঝলাম যে কুরানে এখানে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু এটাও তো হতে পারে যে বর্তমানে আমরা যে কুরানকে দেখছি তা খলিফা উসমানের সময় পরিবর্তন করা হয়েছে। কারণ আমরা জানি যে উসমানই প্রথম কুরান সংকলন করে এবং বাকি কপি গুলো পুড়িয়ে ফেলেন। তাই এখানে সন্দেহ থাকে যে কুরান কে হয় তো পরিবর্তন করা হয়েছে!।'
নাস্তিকদের একটা স্বভাব হচ্ছে তারা সত্যকে গ্রহন করতে রাজি না। এরা ভালো উদ্দেশ কে দেখি খারাপভাবে। যেমন চিন্তা তেমন কাজ বৈ আর কি?
-সাজিদ বলল' তুকে প্রথমে একটা কথা বলে নেই আমাদের কাছে কোনো পরিবর্তিত কুরান নেই। এটা সেই কুরান যা আগে যাছিল এখন তাই, কোনো পরিবর্তন না।
উসমানই (রা) প্রথম কুরান সংকলন করেছিল আসলে বিষয়টা সেরকম না। উসমান(রা) ও আগে আবু বাকর(রা) করেছিল এবং তার মৃত্যুর পরে তা থাকে উমর(রা) কাছে
এবং তার মৃত্যু পর তা থাকে রাসুল(সা) এর স্ত্রী উমর(রা) র কন্যা হাফসা(রা)-র কাছে পরে যখন উসমান (রা) খলিফা হোন তখন কুরান পাঠের ভিন্নতা দেখা দিলে তিনি চূড়ান্তভাবে সংকলন করেন (6)আর তার মধ্যে কোনো প্রকার বিকৃতি বা পরিবর্তন করা হয়নি।
- 'কিভাবে সাজিদ, তুই বুঝি গেলে যে এখানে কুরানে কোনো প্রকার বিকৃতি বা পরিবর্তন করা হয় নি 'বাদল
বলল।
- হ্যা কুরানে কোনো প্রকার বিকৃতি বা পরিবর্তন করা হয়নি।
first of all -উসমান (রা) -এর কুরান সংকলনের সময় মুহাম্মাদ(সা) -এর স্ত্রী খাদিজা (রা), যায়নাব বিনতে খুযায়মাহ(রা) এবং যায়নাব বিনতে জাহশ বিন রিবাব(রা) ছাড়া সবাই জীবিত ছিলেন(7) যদি উসমান (রা) কতৃক সংকলিত কোরানে সংযোজন বা বিয়োজন করা হতো তাহলে তারা অবশ্যি উসমান(রা)-এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করত।মুহাম্মাদ(সা) -এর স্ত্রীদের মধ্যে তিনজন কোরানের হাফিয ছিলেন। কিন্তু ইতিহাসে এমন কোনো প্রমাণ নেই যে,তারা উসমান(রা) কতৃক সংকলিত কোরানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন।এতে বুঝা যায় যে তার সংকলিত কোরানে কোনো রকম সংযোজন বা বিয়োজন করা হয় নি।
Secondly উসমান (রা) কতৃক সংকলিত কোরানের আগেই আবু বাকর(রা) কুরান সংকলন করেছিলেন(8)
উসমান (রা) কতৃক সংকলিত কোরানের সময় ইসলামের চতুর্থ খলিফা আলী(রা) সহ আরো অনেক সাহাবী জীবিত ছিলেন(8.1)চিন্তা কর জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবী আলী(রা) উসমানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন না অথচ উসমান (রা) কুরানে বিকৃতি ঘটাছে?কেন?কারণ উসমান (রা) কতৃক সংকলিত কোরান বিশুদ্ধ ছিল।এই ব্যাপারে সাহাবীদের মধ্যে ঐক্যমত ছিল। এখানে কোনো সংযোজন বা বিয়োজন করা হয় নি। এ জন্য Ahmad Von Deffner তা বই An Introduction to Science of the Qur'an বইয়ে বলেছেন
"উসমান কতৃক যে অনুলিপি সংকলিত হয় তার ব্যাপারে সাহাবীদের ঐক্যমত ছিল(9)
Thirdly উসমান (রা) কতৃক সংকলিত কোরানে সংযোজন বা বিয়োজন বা বিকৃতি করার কোনো সুযোগই ছিল না। কারণ কোরানের হাফিয রসূল(সা)-এর স্ত্রী আয়িশাহ(রা) তখন জীবিত ছিল(10) তার কাছে কুরানের কপি ছিল (11)এবং তার দ্বারা উসমান (রা) কতৃক সংকলিত কোরান যাচাই বাছাই করা হতো(12) আর এর জন্য Introduction to the Qur'an
বইয়ের লেখক Richard Bell বলেছেন "আয়াতের পরিবর্তন, কাটছাঁট, বা বাতিল করা হয়েছে -এ অভিযোগ উসমান (রা) এর বিরুদ্ধে কখনো উঠে নি(13)
-সাজিদ বলল 'আচ্ছা বাদল দা যদি উসমান (রা) কুরানে পরিবর্তন করতেন তাহলে ইসলামের বিশ্বাস অনুযায়ী তার কি শাস্তি হতো? এটা কি তার জন্য অনিষ্টকর হতো না?'
-'যদি পরিবর্তন করত তাহলে তো উসমান কাফির হয়ে যেত। আর এটা তো অবশ্যি তার জন্য অনিষ্টকর হতো 'বাদল বলল।
সাজিদ এবার অভির দিকে মুখ করে তাকাল, অভি অবশ্য সাজিদ ঠোঁটের কিনারাই যে হাসি লেগে থাকে তা উপহার পেল।
-সাজিদ বলল 'আচ্ছা অভি ইসলামে কি কাফিরদের জানাযা পড়া জায়েয '
-'আমার জানা মতে ইসলামে কাফিরদের জানাযা পড়া হয় না'
- You are Right এখানে মজার বিষয় হচ্ছে উসমান (রা) জানাযা পড়া হয়েছে। যদি উসমান (রা) কুরান কোনো ধরনের পরিবর্তন আনতেন তাহলে তা সহজে ধরা পড়ত, কারণ প্রতিদিন অন্তত পাঁঁচবার সালাতে কুরান পাঠ্য করা হয়। এবং তখন সকল সাহাবী তাকে কাফির বলে জানত এবং তার জানাযা পড়া হতো না। কিন্তু ইতিহাস থেকে আমরা জানতে পারে যে উসমান(রা)-র জানাজার সালাত পড়া হয়েছে। এতে প্রমানিত হয় যে উসমান (রা) কুরানের কোনো পরিবর্তন করে নি।যার কারণ কেউ তাকে কাফির বলে জানত না এবং ফলস্বরূপ তারা তার জানাযার সালাত পড়েছে।
আমি অবশ্য তখন সাজিদের দিকে তাকিয়ে আছে, আমি তো কখন উসমান(রা)-র জানাযা তো ধরে থাক তার মৃত্যু নিয়েও এভাবে চিন্তা করে নি। সাজিদ দেখি মাটি থেকে হেরা বার করতে পারে। সাবাশ সাজিদ। এগিয়ে যা। ভাবছিলাম এবং মনে মনে বকবক করছিলাম। এর মধ্যেই আবার....সাজিদ-
-'অভি, বাদল দা যা বলল তার সাথে কি তুই একমত?
-Waht's say he?
-আমি বললাম 'বাদল দা বলেছে যদি উসমান (রা) কুরানে কোনো প্রকার বিকৃতি করত তাহলে তা উসমান(রা) জন্য অনিষ্টকর হতো '
-'Yes, I agree with him
-তার মানে তুই এখানে একমত যে যদি উসমান (রা) কুরানে কোনো প্রকার বিকৃতি করত তাহলে তা উসমান(রা) জন্য অনিষ্টকর হতো। এখন দেখ মুহাম্মদ (সা) বলেছেন 'উসমান যে কার্যকলাপই করুক না কেন তা তার কোনো অনিষ্ট করতে পারবে না (14)
অর্থাৎ মুহাম্মাদ(সা)-এর ভাষ্য অনুযায় উসমান এমন কাজ কখনো করবে না যা তার অনিষ্ট করতে পারবে। Am I right?
- 'Yes,Then I was say.
-সাজিদ বলল 'তার মানে মুহাম্মাদ(সা)-এর ভবিষ্যৎবাণী অনুযায় উসমান (সা) কখন কুরান বিকৃতি করতে পারে না। কারণ তা তার সাথে অনিষ্টকর কিছু করবে। তিনি কাফের হয়ে যেতে পারে। কিন্তু মুহাম্মাদ (সা) বলেছেন উসমান যে কাজই করুক না কেন তা তার অনিষ্ট করতে পারবে না। যদি তিনি বিকৃতি করতেন তাহলে কি হত?
-আমি বললাম 'তাহলে আবার কিই বা হতো, মুহাম্মাদ (সা)-এর ভবিষৎবাণী মিথ্যা হয়ে যেত '
-কিন্তু মুহাম্মাদ(সা)-এর ভবিষ্যৎবাণী কখনো মিথ্যা হতে পারে না। কারণ তা তিনি আল্লাহ'র পক্ষে থেকে বলেন। আর ইতিহাসে এমন কোনো প্রমাণ নেই যে মুহাম্মাদ(সা) কোনো ভবিষৎবাণী মিথ্যা হয়েছে। তাই এই কথা প্রমানিত হয় যে উসমান(রা)-র দ্বারা কখন কুরান বিকৃতি It Is Not Accessible for Othman(R.)
- আমি বললাম'আসলে আজ পর্যন্ত কুরান কোনো প্রকার বিকৃতি,পরিবর্তন, সংযোজন বা বিয়োজন করা হয় নি। আর এটা কখন সম্ভব নয় It's Totally Impossible Forever And Ever. দেখ অভি, The New Encyclopedia Britannica -র ভাষ্য মতে 'সকল পান্ডুলিপি প্রমাণ করে যে রাসূল(সা)-এর সময় থেকে এখন পর্যন্ত কুরআন সকল প্রকার বিকৃতি,সংযোজন,বিয়োজন বা পরিবর্তন থেকে সংরক্ষিত আছে (15)আর উসমান (রা) সংকলিত কুরানের সাথে বর্তমান কুরানের কোনো অমিল নেই। এ জন্য একই প্রশ্ন যখন Dr.Maurice Bucaille -কে করা হয়েছিল তিনি বলেছিলেন
" I said to him:go to our national library and you'll be able to find old text of the Qur'an of the 8th century of Christian era. and you will be a possition to compare the text of that the time and the text which is widespread now."(16)
সাজিদ আমার দেখি চেয়ে মুসকি একটা হাসি দিল।হাসিটা এরকমই ছিল যে সাজিদের চকচকে দুধের মতো দু'একটি দাঁত দেখা গেয়েছিল। সেদিনই বোধ প্রথম দর্শন আমার আর সাজিদের দাঁতের সাথে। উপস্থিত সবাই হাসির রহস্যটা না জানলে ও আমি কিন্তু ঠিকই জানতাম।আমি একদিন এর অন্তরগত রহস্যটা জানতে চেয়েছিলাম তার কাছে, মহামান্য বললেন, আমিও নাকি শিখে গিয়েছে। তখন আমার লজ্জা আর আর হাসি এক হয়ে গিয়েছিল। লজ্জা আর হাসি এক হলে মানুষকে কেমন দেখায় আমি তা জানি না।তবে বোধ আমার মত অন্য কাউ এত গম্ভীর দেখায় না।
বাদল দা আর অভি আমাদের না কয়েই হঠাৎ চলে যাচ্ছিল। সাজিদ হাত বারিয়ে ডাক দিবে তখন আমি না করলাম। এ দিক দিলে প্রায় সন্ধ্য হয়ে আসছে। চারদিকে হালকা অন্ধকার, পাখিগুলো এক ধরনের শব্দ করছে। সূর্যটা প্রায় ডুবে ডুবে যাবে ভাব। আমরা হাঁটা ধরলাম মাসজিদের দিকে। আর আমার মনে একটি যেন বারবার স্মরণ হচ্ছেছিল। আয়াতটি ছিল "নিশ্চয় আমিই কুরআন নাযিল করেছি আর অবশ্যই আমি তার সংরক্ষক "।
Reference.......
(1)https://www.birmingham.ac.uk/news/latest/2015/07/quran-manuscript-22-07-15.aspx
(2)www.bbc.com/news/business-33436021?SThisFB&fbclid=lwAR1EiTniMTSgadUtGbX0K3KbPuTllcH442eM2PW_01lZrZaH4EXsA6qDec8
(3)Behnam sadeghi & Mohsen Goudarzi "sana'a and the origins of the Qur'an,Der Islam,87(2012),26
(4)Le coran,trad.de.D.Masson, Edition Gallimard,1967,P.xl
(5)Lumbard,Joseph "New light on the History of the Quranic Text" m.huffpost.com/us/entry/us-7864930?ncid=engmodushpmg00000003&fbclid=lwAR3mENFWjit9BuoltKmGA2lT1STQiqXr4S-AqXSGpsh4qbKRTeGUESZ9FxRQ
(6)সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেন্সন) ৪/৪৯৮৭
(7)আর রাহীকুল মাকতুম(তা.পা) পৃ:538-546. (8)সহীহ বুখারী ৪/৪৯৮৬
(8.1) সর্বশেষ সাহাবী আবু তুফাইল মৃত্যুবরণ করে ১০০ হিজরের পরে।
(9) Ahmad Von Deffner,An Introduction to Science of the Qur'an
(10) আর রাহীকুল মাকতুম(তা.পা) পৃ:538-546.
(11)সহীহ বুখারী ৪/৪৯৯৩
(1২)তারিখুল মাদিনাহ,ইমাম শাব্বাহ পৃ:৯৯৭
(13)Richard Bell,An Introduction to the Qur'an, Bell,W.M,Watt,1995 P-51
. (14)সহীহ আত তিরমিযী(আলবানী) ৬/৩৭০১
(15)বিস্তারিত দেখুন:The New Encyclopedia Britannica (knowledge in depth) 15th edition Vol -2, PP-879-977(Biblical Literature), Vol-4,PP-459-545: Christianity,Vol-10 PP-145-155:Jesus Christ, Encyclopedia of Religion and Ethics, Edition by James Hestings,New York, Vol-2 PP-532-615:Vol-3 PP-579-600:Vol-7 PP-439-550:Israel, Jesus Christ, Historia Religionum edited by C.Jouso Bleeker and Gro Widengren Vol -1 PP-237-317.
(16)You tube:Dr.Maurice Bucaille, the Pharaoh Qur'an and Science। এখান থেকে উসমান(রা) সংকলিত কোরানের ভিডিও দেখতে পারেন www.youtube.com/ আমেরিকার লাইব্রেরিতে প্রাচীন কুরান দেখতে www.youtube.com
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন