বৃহস্পতিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

তাক্বলীদ !

                           তাক্বলীদ! 




কোন ইমামের তাক্বলীদ করা যাবে কিনা এই সম্পর্কে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ কিছু ইমামদের কথা পড়ুন।উপকৃত হবেন ইনআল্লাহ। হলে আমার লেখা সার্থক!
ইমাম আবূ হানীফা(রহঃ)-এর নিষেধাজ্ঞাঃ
1".যখন "ছহীহ হাদীস"পাবে, জেনো সেটাই আমার মাযহাব"(1)
2."আমরা কোথা থেকে গ্রহণ করেছে তা না জেনে আমাদের কথা গ্রহণ করা কারো জন্য বৈধ নয়"(2)
3."যে ব্যক্তি আমার দলীল জানি না আমার কথা দ্বারা ফৎওয়া প্রদান করা তার জন্য হারাম"(3)
4."নিশ্চয়ই আমরা মানুষ।আমরা আজকে যা বলি,আগামীকাল তার থেকে ফিরে আসে"(4)
5."তোমার জন্য আফসোস হে ইয়াকুব(আবু ইউসুফ) তুমি আমার থেকে যা শোন তা লিখে নিও না। কারণ আমি আজ যে মত প্রদান করি,কাল তা প্রত্যাখান করে এবং কাল যে মত প্রদান করি, পরশু তা প্রত্যাখান করি"(5)
6."আমি যদি আল্লাহ কিতাব (কুরআন) ও রাসূলূল্লাহ(সা)-এর কথার (হাদীছ)বিরোধী কোন কথা বলে থাকি,তাহলে
আমার কথা ছুঁড়ে ফেলে দিও"(6)
ইমাম মালিক(রহ)-এর নিষেধাজ্ঞাঃ
1."আমি একজন মানুষ মাত্র।আমি ভুল করি, আবার ঠিক ও করি।অতত্রব আমার সিদ্ধান্তগুলো তোমরা যাছাই কর।যেগুলো কুরআন ও সুন্নাহ'র অনুকূলে হবে সেগুলো গ্রহণ কর। আর যেগুলো কুরআন ও সুন্নাহ প্রতিকূলে হবে তা প্রত্যাখান কর"(7)
2."রাসূলূল্লাহ (সা)-এর পরে এমন কোনো ব্যক্তি নাই যার সকল কথাই গ্রহণীয় বা বর্জনীয়,একমাত্র রাসূলূল্লাহ(সা)ব্যতীত"(8)
           
ইমাম শাফেঈ(রহঃ)-এর নিষেধাজ্ঞাঃ
1."যদি তোমরা আমার বইয়ে রাসূল(সা)-এর সুন্নাহ বিরোধী কিছু পাও,তাহলে রাসূল (সা)-এর সুন্নাহ অনুযায়ী বল এবং আমার কথাকে প্রত্যাখান কর"
......"তোমরা রাসূল(সা)-এর কথাই অনুসরণ কর এবং অন্য কারো কথার দিকে  দৃকপাত কর না"(9)
2."আমি যেসব কথা বলেছি, তা যদি রাসূলূল্লাহ(সা)-এর ছহীহ হাদীসের বিপরীত হয়,তবে রাসূল(সা) -এর হাদীসই অগ্রগণ্য।অতত্রব তোমরা আমার "তাক্বলীদ " কর না "(10)
3."রাসূলূল্লাহ (সা)-এর প্রত্যেকটি হাদীসই আমার কথা,যদিও আমার থেকে তোমারা তা না শুনে থাকে"(11)
ইমাম আহমদ বিন হাম্বল(রহঃ)-এর নিষেধাজ্ঞাঃ
1."তুমি আমার তাক্বলীদ কর না এবং তাক্বলীদ কর না মালিক, শাফেঈ,আওযাঈ,ছাওরীর।রবং তারা যে উৎস থেকে গ্রহণ করছেন,সেখান থেকে তোমরাও গ্রহণ কর"(12)
2."যে ব্যক্তি রাসূল(সা)-এর হাদীছকে প্রত্যাখান করল,সে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেল"(13)
ইমাম রাযি(রহঃ)বলেনঃ
"শয়তানী ধোঁকা অনুসরণ করা ও তাক্বলীদ করার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই"(14)
শায়খুল ইসলাম ইবনে তায়মিয়্যহ বলেনঃ
"আর ইমামগন অর্থাৎ ইমাম আবু হানীফা,ইমাম মালিক,ইমাম শাফেঈ ও ইমাম আহমদ বিন(রহঃ)সকলেই তাদের তাক্বলীদ করতে নিষেধ করেছেন"(15)
ইমাম ইবনুল ক্বাইয়িম(রহঃ)বলেনঃ
"শারঈ বিষয় অজ্ঞ ব্যক্তিদের নির্দিষ্ট কোনো মাযহাবের তাক্বলাদ করা সিদ্ধ নয়,যদিও তারা তা করে থাকে"(16)
কামাল বিন হুমান হানাফী(রহঃ)বলেনঃ
"ছহীহ মতে নির্দিষ্ট কোন মাযহাবের অন্ধ অনুসরণ করা অপরিহার্য নয়।কেননা তার (মাযহাবের)অন্ধ অনুসরণ করা অপরিহার্য করা হয়নি"(17)
শায়খ আব্দুল আযীয বিন আব্দুল্লাহ বিন বায বলেনঃ
"চার মাযহাবের কোন এক মাযহাবের 'তাক্বলীদ করা ওয়াজীব মর্মে 'প্রচলিত কথাটি নিঃসন্দেহে ভুল;বরং চার মাযহাবসহ অন্যদের তাক্বলীদ করা ওয়াজীব নয়।কেননা করআন ও সুন্নাহের ইত্তেবা করার মধ্যেই হক নিহিত আছে,কোন ব্যক্তি তাক্বলীদের মধ্যে নয়"(18)
Reference.............

(1)হাশিয়াহ ইবনে আবেদীন ১/৬৩পৃঃ;রাদ্দুল মুহতাব ১/৪৬২ পৃঃ,নাসিরুদ্দীন আলবানী,ছহীহ আত-তিরমিযী মুক্কাদামা ৪২পৃঃ;
(2)তদেব ৬/২৯৩পৃঃ;
(3)ড.অছিউল্লাহ বিন মহাম্মাদ আব্বাস, আত তাক্বলীদ ওয়া হুকমুহু ফী যুইল কিতাব ওয়াস-সুন্নাহ পৃঃ২০;
(4)তদের;
(5)তদেব;
(6)ছালেহ ফুলানী, ইক্বাযু হিমাম পৃঃ৫০;
(7)ইমাম ইবনে হাযম,আল-ইহকাম ফী উছূলিল আহকাম ৫/১৪৯পৃঃ;
(8)আল-ইহকাম ফী উছূলিল আহকাম ৫/১৪৫পৃঃ;
(9)ইমাম নববী,আল মাজমূ ১/৬৩পৃঃ;
(10)ইবনে আবে হাতীম ৯৩ পৃঃ,সনদ ছহীহ;
(11)তদেব;
(12)ই'লামুল মু'ওয়াক্কিন'ঈন ২/২০৩পৃঃ;
(13)নাসীরুদ্দীন আলবানী, মুক্কাদামাতু ছিমাতি ছালাতিন নাবী(ছাঃ)৪৫-৪৬পৃঃ;
(14)তাফসীরুল কাবীর ৫/৭পৃঃ,'আহলে হাদীস আন্দোলন উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ 'দক্ষিণ এশিয়ার প্রেক্ষিতসহ, ১৫৩-১৫৪পৃঃ;
(15)ইমাম ইবনে তায়মিয়্যহ, মাজমুউ ফাতাওয়া ২০/২০
২১০-২২৬ পৃঃ;
(16)ইবনুল কাইয়িম, ই'লামুল মুক্কাওয়া'ঈন ৬/২০৩-২০৫ পৃঃ;
(17)আল-মাছূমী,হাদিয়্যাতুস সুলতান ৫৬পৃঃ;
(18)শায়খ আব্দুল আযীয বিন আব্দুল্লাহ বিন বায,মাজমূ'ফাতাওয়া ৩/৭২ পৃঃ

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

কোরান কি সঠিকভাবে সংরক্ষন করা হয়েছে?

কোরান কি সঠিকভাবে সংরক্ষন করা হয়েছে পর্ব-১ কি যেন বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এটা কি আলোচনা নাকি সমালোচনা ঠিক বুঝি উঠতে পারছিলাম না। আমরা উপ...