শনিবার, ২৫ আগস্ট, ২০১৮

সূরা বাক্বারাহ'র একটি আয়াত সম্পর্কে কিছু হাদীস!

                               সূরা বাক্বারাহ'র একটি আয়াত সম্পর্কে কিছু হাদীস!




সূরা আল-বাক়ারাহ ২:২২৩
نِسَآؤُكُمْ حَرْثٌ لَّكُمْ فَأْتُوا۟ حَرْثَكُمْ أَنَّىٰ شِئْتُمْۖ وَقَدِّمُوا۟ لِأَنفُسِكُمْۚ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَٱعْلَمُوٓا۟ أَنَّكُم مُّلَٰقُوهُۗ وَبَشِّرِ ٱلْمُؤْمِنِينَ
তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শস্য ক্ষেত্র। তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদেরকে ব্যবহার কর। আর নিজেদের জন্য আগামী দিনের ব্যবস্থা কর এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাক। আর নিশ্চিতভাবে জেনে রাখ যে, আল্লাহর সাথে তোমাদেরকে সাক্ষাত করতেই হবে। আর যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে সুসংবাদ জানিয়ে দাও।
কুরআন অ্যাপ পেতে :https://goo.gl/w6rESk
হাদীস নংঃ১
জাবির(রা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,ইহুদীরা বলতো, যদি স্বামী স্ত্রীর পিছন দিক দিয়ে তা সম্মুখভাগে সহবাস করে তাহলে সন্তান ট্যারা হবে।অতঃপর"তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের শস্যক্ষেত্র।তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদের ব্যবহার করো-(সূরা বাক্বারাহ ২:২২৩)এই আয়াত অবতীর্ণ হয়।রসূলুল্লাহ(সা) তারপর বললেন,সম্মূখ ও পিছন উভয় দিক দিয়ে করা যাবে যদি তা লজ্জাস্থান হয়(1)
হাদীস নংঃ২
ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,আনসারী মূর্তি পুজকদের এই গোত্রটি ইয়াহূদী আহলে কিতাবদের এ গোত্রের সাথে বসবাস করত।আর আনসানগণ জ্ঞানের দিক দিয়ে ইয়াহূদীদের অনেক ক্ষেত্রেই অনুসরণ করত।আর আহলে কিতাবদের একটা অভ্যাস ছিল যে, তারা শুধুমাত্র তাদের স্ত্রীদের এক দিক দিয়েই সহবাস করতো,আর স্ত্রীরা তার দ্বারা সবচেয়ে বেশি আবৃত হতো।সুতরাং আনসারদের এই গোত্রটি ইয়াহূদীদের ঐ কাজটি গ্রহণ করেছিল।আর কুরাইশদের এই গোত্র তাদের মহিলাদের নিকৃষ্টভাবে খোলাখুলি করতো,এবং তাদের সস্মুখ দিয়ে, পিছন দিয়ে,চীৎ করে উপভোগ করতো।অতঃপর মহাজিরগণ যখন মদীনায় আগমন করলেন,তখন একজন কুরাইশী ব্যাক্তি আনসারী এক মহিলাকে বিবাহ করলেন।সে তার স্ত্রীর কাছে তাদের নিয়মে কাজ করলেন।কিন্তু মহিলা খারাপ মনে করলেন,এবং বললেন আমাদেরকে শুধুমাত্র একদিক দিয়েই সহবাস করা হয়।সুতরাং তুমি তাই কর নতুবা আমার থেকে দূরে থাক।এমন কি তার ব্যাপারটি বিকট আকার ধারণ করল,শেষ পর্যন্ত আল্লাহ রসূল(সা)-এর নিকট সংবাদ পৌঁছাল।অতঃপর আল্লাহ এই আয়াত টি নাযিল করলেন" তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের শস্যক্ষেত্র।তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদের ব্যবহার করো"-(সূরা বাক্বারাহ ২:২২৩)অর্থাৎ সম্মুখ করে, পিছন করে, চীৎ করে।মূল উদ্দেশ্য তার দ্বারা সন্তান হওয়ার স্থান যেন হয়(2)
হাদীস নংঃ৩
উম্মু সালামাহ (রা) বর্ণিত।তিনি বলেন,মুহাজিরগণ যখন মদীনায় আনসারদের নিকট আগমন করলেন তখন তাদের মহিলাদের বিবাহ করলেন।আর মুহাজির মহিলারা চীৎ হতো, কিন্তু আনসারী মহিলারা চীৎ হতো না। একদা এক মহাজির ব্যক্তি তার আনসারী স্ত্রীকে এরূপ ইচ্ছা করল,কিন্তু সে আল্লাহ ও রসূল কে জিজ্ঞাসা না করা পর্যন্ত তা করতে অস্বীকৃতি জানাল,রাবী বলেন সেই মহিলা  রসূল(সা)-এর নিকট আসল, কিন্তু জিজ্ঞাসা করতে লজ্জাবোধ করল। তাই উম্মু সালামাহ তাকে জিজ্ঞাসা করলেন অতঃপর "
তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের শস্যক্ষেত্র।তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদের ব্যবহার করো"-(সূরা বাক্বারাহ ২:২২৩)আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। তিনি বললেন না, শুধুমাত্র এক রাস্তায় সহবাস করা যাবে(3)
Reference...........
(1)বুখারী ৮/১৫, মুসলিম ৪/১৫৬, নাসাঈ৭৬/১-২, ইবনু আবী হাতিম ৩৩৯/১, মাহমুদিয়া ৮/৭৯/১,
জুরজানী ২৯৩/৪৪০, বাইহাকী ৭/১৯৫,
ইবনু আসাকির ৮/৯২/২ ও ওয়াহিদী ৫৩,
আর ওয়াহিদী বলেন-শাইখ আবূ হামিদ বিন শারকী বলেন,এটা এমন মহীয়ান হাদীস যা একশ হাদীসের সমতুল্য।
(2)আবূ দাউদ ১/১৩৭, হাকিম ২/১৯৫/২৭৯,
বাইহাকী ৭/১৯৫, ওয়াহিদের আসবাব ৫২,
ইমাম খাত্তাবীর গরীবুল হাদীস ৭৩/২, তার সনদ হাসান।ইমাম হাকিম মুসলিমের শর্তানুযায়ী তাকে সহীহ বলেছেন।আর ইমাম যাহাবী তাকে সমর্থ দান করেন।ত্বাবারানী নিকট (৩/১৮৫পৃঃ)সংক্ষিত অপর একটি সূত্র রয়েছে।আরো দেখুনঃআদাবুয যিফাফ১/৩২পৃঃশাইখ আলবানী(রঃ)।

(3)মুসনাদে আহমদ (৬/৩০৫/৩০২-৩১৮পৃঃ)।তিরমিযী ৩/৭৫পৃঃ, ও তিনি তাকে সহীহ বলেছেন এবং
আবূ ইয়ালা ৩২৯/১পৃঃইবনু আবী হাতিম তার তাফসীরে মুহাম্মাদীয়া ৩৯/১পৃঃও ইমাম বাইহাকী ৭/১৯৫পৃঃ বর্ণনা করেছেন।
আর তার সানাদ মুসলিমের শর্তানুযায়ী সহীহ। আদাবুয যিফাফ ১/৩৩পৃঃ শাইখ আলবানী (র)।

বিজ্ঞান কি সৃষ্টিকর্তাকে ব্যাখ্যা করতে পারে?

                        বিজ্ঞান কি সৃষ্টিকর্তাকে ব্যাখ্যা করতে পারে?

না তা পারে না
ডার্ক এনার্জির ধারণা আবিষ্কারের জন্য ২০১১ সালে নোবেল পুরস্কার  পাওয়া টিমের একজন, প্রফেসর অ্যালেক্সে ফিলিপ্পেনকো এক সাক্ষাতকারে বলেন,
“… আমি মহাবিশ্বকে একজন বিজ্ঞানীর দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনা করতে চাই … কোন অতিমানবিক বা স্বকীয় স্রষ্টা আছেন কিনা বা এই মহাবিশ্বের কোন উদ্দেশ্য আছে কিনা সে বিষয়ে আমি কিছু বলব না – এই প্রশ্নগুলোর উত্তর বিজ্ঞানীরা দিতে পারে না…।” (1)
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের National Academy of sciences এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছেঃ
"প্রাকৃতিক মহাবিশ্বকে জানার জন্য বিজ্ঞান ব্যবহার করা  হয়।প্রাকৃতিক কারণে আলোকে প্রাকৃতিক মহাবিশ্ব ব্যাখ্যা করা পর্যন্তই বিজ্ঞানের সীমারেখা।অতিপ্রাকৃত ব্যাপার নিয়ে বিজ্ঞানের বলার কিছু নেই।সুতরাং ঈশ্বর আছে কি নেই, এমন প্রশ্ন করা বিজ্ঞানে অবান্তর,যতক্ষণ পর্যন্ত  বিজ্ঞান তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখে।"(2)
ধর্মবেত্তা ডেভিড মার্শাল বলেন:
"এই নব্য নাস্তিকরা বাস্তবতার বিভিন্ন দিক একেবারেই বুঝতে পারে না।প্রথমত, বোকা নাস্তিকদের বিজ্ঞানের সীমারেখা সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধারণা নেই।দ্বিতীয়ত,তাদের তত্ত্বগুলো অসং্খ্যা বাস্তবতাকে সরাসরি উপেক্ষা করে।
তৃতীয়ত,গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞেসা করা থেকে তারা সবসময় নিজেদের বিরত রাখে।চতুর্থত, তাদের তত্ত্বকে ভরাডুমির হাত থেকে বাঁচাতে তারা চমৎকার এক ছলনার আশ্রয় নেয়।সেই ছলনা হলো-"মনে করি"(3)
জন হুট বলেনঃ
"বিবর্তন মানুষের অনুভব করার ক্ষমতাকে ব্যাখ্যা করতে পারে না।আমাদের বিভিন্ন বিষয় অনুভবের ক্ষমতা দেখলে বোঝা যায় বিবর্তন ছাড়াও অন্য এক শক্তি আমাদের উপর কাজ করছে, যার ফলে আমরা চিন্তা করতে পারে যার ফলে আমাদের মন অন্য সবার থেকে আলাদা"(4)

Reference...........
(1)Scientists only understand 4% of universe’ Retrieved from: https://www.rt.com/news/universe-physics-laws-energy-329
(2)National Academy of sciences,Teaching about Evolotion and the nature of science (Washington, DC:National Academy of sciences,1998)page:58
http://www.nap.edu/catalog/5787.html
(3)David Marshal, The truth brhind the new Atheism, Eugene,Or:Harvest House,2007
অবিশ্বাসের দর্শন পৃঃ৪০
(4)John F.Haught,God and the new Atheism, Westminster John Knox press,2007 P.46

রায়হান আবীর ও অভিজিৎ রায়ের মিথ্যাচার?

রায়হান আবীর ও অভিজিৎ রায়ের মিথ্যাচার?




















 তাদের দু'জনের লিখিত বইয়ের মধ্যে এই কথা গুলো লেখা আছেঃ "জীববিজ্ঞানের মতো বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার গবেষণা থেকে এটি স্পষ্ট বোঝা গেছে। গাছ থেকে আপেল পড়ার মতোই বিবর্তন বাস্তব -এ নিয়ে আর কোনো সন্দেহ নেই"(1) আসুন আমরা দেখে তাদের দাবির সত্যতা: ডারউইনের বিবর্তনবাদ ডারউইনের বিবর্তনবাদ অনুসারে একজন আদি পিতা ও মাতা—যারা ঠিক আজকের মানুষের মতো মানুষ ছিলেন না—বিশেষ কোনো জেনেটিক মিউটেশনের কারণে তারা প্রথম একজন আধুনিক মানব শিশুর জন্ম দেন। এটি দৈব চক্রে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা মাত্র: এর পেছনে কোনো উদ্দেশ্য নেই, কোনো সৃষ্টিকর্তার হাত নেই। প্রকৃতির হাজার খেলার মধ্যে এটি ছিল একটি খেলা। এই একই প্রক্রিয়ায় পৃথিবীতে সকল প্রাণের উদ্ভব হয়েছে। বিবর্তনবাদ অনুসারে প্রাণের সৃষ্টি হয়েছে দৈব চক্রে। কোনো কারণে ৩.৬ বিলিয়ন বছর আগের আদি পৃথিবীতে, কোনো এক জায়গার কাদা মাটিতে কিছু অজৈব পদার্থ কাকতালীয়ভাবে একসাথে মিশে প্রথম অ্যামাইনো অ্যাসিড তৈরি করে। এরকম অনেকগুলো অ্যামাইনো অ্যাসিড কোনো কাকতালীয় কারণে অত্যন্ত নিখুঁতভাবে একসাথে হয়ে প্রোটিন তৈরি হয়। তারপর কয়েকটি বিশেষ প্রোটিন কোনো কাকতালীয় কারণে একসাথে হয়ে ডিএনএ তৈরি হয় এবং তারপর সেখান থেকে আরও বিরাট কোনো কাকতালীয় কারণে প্রথম এককোষী প্রাণীর সৃষ্টি হয়। সেই এককোষী প্রাণীরা বহু বছর ধরে বিবর্তিত হয়ে একসময় কোনো কারণে বহুকোষী প্রাণীতে পরিণত হয়। তার বহু বছর পরে সেই বহুকোষী প্রাণীরা বিবর্তিত হয়ে আরও জটিল জলচর প্রাণীতে পরিণত হয়। তারপর সেই জলচর প্রাণীগুলো একসময় হাত-পা গজিয়ে ডাঙায় উঠে এসে নানা ধরনের স্থলচর প্রাণীতে পরিণত হয়। এরপর সেই স্থলচর প্রাণীগুলো কোটি কোটি বছর ধরে বিবর্তিত হয়ে একসময় গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগির মতো প্রাণীতে পরিণত হয়। এবং সবশেষে একই প্রক্রিয়ায় ধাপে ধাপে বানরররূপী আদিমানব থেকে উদ্ভব হয়েছে আধুনিক মানুষের। এখানে লক্ষ্য করুন এই গোটা প্রক্রিয়ায় কতগুলো কাকতালীয় ব্যাপার রয়েছে। এই প্রতিটি কাকতালীয় ঘটনা ঘটার সম্ভাব্যতা হচ্ছে কমপক্ষে কোটি কোটি কোটি সম্ভাবনার মধ্যে একটি। যেমন ৩০০ অণু দিয়ে গঠিত একটি প্রোটিন তৈরি হবার সম্ভাবনা হচ্ছে ১০৩৯০ এর মধ্যে একটি। ১০ এর পরে ৩৯০টি শূন্য দিলে যে বিরাট সংখ্যা হয় ততগুলো সম্ভাবনার মধ্যে একটি। যার অর্থ হচ্ছে— এটা গাণিতিক ভাবে দেখলে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। বিবর্তনবাদ কি আসলেই কোনো প্রমাণিত বিজ্ঞান? বিবর্তনবাদ যদি সত্যি হতো তাহলে— ১) আমরা এক প্রাণী থেকে অন্য প্রাণীতে বিবর্তিত হওয়ার সময়, তার মাঝামাঝি অবস্থার অনেক নিদর্শন প্রকৃতিতে দেখতে পারতাম। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা যে লক্ষ লক্ষ ফসিল পেয়েছি, তার কোথাও কোনোদিনও এক প্রাণী থেকে অন্য প্রাণীতে বিবর্তিত হওয়ার সময় মাঝামাঝি অবস্থার কোনো প্রাণী দেখা যায়নি।[1] যেমন এখনও পর্যন্ত এমন কোনো বানর বা গরিলার ফসিল পাওয়া যায়নি—যেটার মাথা ছিল মানুষের মতো, বা যেটার গায়ের লোম মানুষের মতো একদম ছোট, বা যেটার হাত মানুষের হাতের মতো—যেগুলো দেখে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, গরিলা বা বানর থেকে ধীরে ধীরে বিবর্তন হয়ে মানুষ এসেছে। ২) প্রাণীদের মধ্যে সূক্ষ্ম বিবর্তনের (Microevolution) নিদর্শন মিললেও বড় ধরনের বিবর্তনের কোনো প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি, যেখানে এক প্রজাতির প্রাণী বিবর্তিত হয়ে আরেক প্রজাতির প্রাণীতে পরিণত হয়েছে। Macroevolution-এর পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই। বিজ্ঞানিরা গবেষণাগারে মাছির বিবর্তন করার চেষ্টা করেছিলেন। অনেক চেষ্টার পরে দেখা গেল তিন ধরনের মাছি তৈরি হলো—১) আগে যেরকম ছিল সেরকমই, ২) মিউটেটেড বা বিকৃত, অথবা ৩) মৃত।[2] ২০১০ সালে একটি গবেষণায় মাছির ৬০০ প্রজন্ম পরীক্ষা করেও কোনো বিবর্তনের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।[3] একইভাবে ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়ার ৪০,০০০ প্রজন্মের উপর বিবর্তনের চেষ্টা করেও বিবর্তনবাদের পক্ষে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।[4] সুতরাং অতীতেও বিবর্তন হয়ে একটি প্রজাতির প্রাণী অন্য প্রজাতির প্রাণীতে রূপান্তরের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি, বর্তমানেও না। ৩) বিবর্তনবাদ দাবি করে যে, জেনেটিক মিউটেশনের মাধ্যমে প্রাণীদের মধ্যে বিবর্তন হয়ে উন্নততর এবং বেশি টেকসই প্রাণীর সৃষ্টি হয় এবং এইভাবেই আদি-মানুষ থেকে আধুনিক মানুষ এসেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণায় উলটো প্রমাণ পাওয়া গেছে। উদ্ভিদ এবং মানুষ উভয়েরই উপর গবেষণায় দেখা গেছে বেশিরভাগ মিউটেশনের ফলে দেহে কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয় না। কিন্তু খারাপ মিউটেশন হয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে এবং এগুলো কোষের বংশপরম্পরায় টিকে থাকে। একে বলা হয় জেনেটিক এনট্রপি। প্রত্যেক মানুষ তার নিজের মিউটেশন এবং তার পূর্ব পুরুষদের মিউটেশন বহন করে এবং তারপর তার বংশধরের মধ্যে দিয়ে দেয়।[6] সাম্প্রতিক কালে হিউমেন জিনোম গবেষণার উন্নতির ফলে বিজ্ঞানীরা ২১৯ জন মানুষ এবং ৭৮ জন বাবা-মা এবং তাদের সন্তানদের মধ্যে গবেষণা করে দেখেছেন, প্রতি বংশ পরম্পরায় ৬০টি নতুন মিউটেশন যোগ হয়![8] বিবর্তনবাদীরা দাবি করে: ২.৪ মিলিয়ন বছর আগে, এক বানর/গরিলার কাছাকাছি দেখতে আদি মানুষ থেকে আধুনিক মানুষের উদ্ভব হয়েছে। যার অর্থ দাঁড়ায় এই পর্যন্ত মানুষের প্রায় ১২০,০০০ প্রজন্ম এসেছে। এখন প্রতি প্রজন্ম যদি ৬০টি মিউটেশন যোগ করে, তাহলে ১২০,০০০ প্রজন্মে আজকে মানুষের মধ্যে ৭,২০০,০০০ মিউটেশন থাকার কথা। এতো মিউটেশন হলে মানুষ আর মানুষ থাকত না, এবং অনেক আগেই মানব জাতি পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেত। ৪) এক প্রজাতির প্রাণীর থেকে অন্য প্রজাতির প্রাণীর মধ্যে ধাপে ধাপে বিবর্তন কখনও সম্ভব নয়। যেমন, সরীসৃপের দ্বিমুখী ফুসফুস কখনই পাখির একমুখী ফুসফুসে বিবর্তিত হতে পারে না। সেটা হতে হলে বিবর্তন শেষ না হওয়া পর্যন্ত সরীসৃপকে শ্বাস নেওয়া বন্ধ করে দিতে হবে—যেটা কেবল হাস্যকরই নয় বরং অযৌক্তিক। সুতরাং বিবর্তনবাদীরা যে-দাবি করে সরীসৃপ থেকে পাখির বিবর্তন হয়েছে, সেটা ভুল।[7] একইভাবে উভচর প্রাণীর তিন-কক্ষ-বিশিষ্ট হৃদপিণ্ড থেকে স্তন্যপায়ী প্রাণীর চার-কক্ষ-বিশিষ্ট হৃদপিণ্ডের বিবর্তন হওয়া কখনও সম্ভব নয়, কারণ সেটা হতে হলে প্রথমে উভচর প্রাণীর হৃদপিণ্ডের মধ্যে নতুন দেওয়াল সৃষ্টি হতে হবে, যা রক্ত চলাচল ব্যহত করবে, না হয় নতুন রক্তনালীর সৃষ্টি হতে হবে, যা রক্ত চলাচলকে ব্যহত করবে। এরকম অনেক প্রমাণ রয়েছে যা থেকে সহজেই দেখানো যায় যে, এক প্রজাতির প্রাণীর মধ্যে ধীরে ধীরে বিবর্তন হয়ে অন্য প্রজাতির প্রাণী সৃষ্টি হওয়া সম্ভব নয়। কারণ বিবর্তনের সময় মাঝামাঝি যেই অবস্থাগুলো হতে হবে, সেগুলো প্রাণীর জন্য কোনোভাবেই কল্যাণকর নয়। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে এইধরনের অর্ধেক বিবর্তন সেই প্রাণীর জন্য মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সুতরাং বিবর্তনবাদ শুধুই একটি থিওরি। এর পক্ষে কোনো গ্রহণযোগ্য ও যৌক্তিক প্রমাণ নেই। প্রকৃতিতে কী ধরনের বিবর্তন হয়? একটি ব্যাপার পরিষ্কার করা দরকার: Microevolution বা সূক্ষ্ম-বিবর্তন অবশ্যই প্রকৃতিতে হয়। এবং সেটা হয় একই প্রজাতির মধ্যে, অল্প কিছু জেনেটিক পরিবর্তন থেকে। আর এভাবেই একসময় উপ-প্রজাতির সৃষ্টি হয়।[9] কিন্তু এই সূক্ষ্ম বিবর্তন হতে হতে একসময় Macroevolution বা স্থুল-বিবর্তন হয়ে এক প্রজাতির প্রাণী সম্পূর্ণ অন্য প্রজাতির প্রাণীতে পরিণত হয় না—যেটা বিবর্তনবাদীরা প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে এটা নিয়ে বিবর্তনবাদীদের মধ্যেই দ্বিমত রয়েছে।[10] কাজেই বলা যায়, বানরের মধ্যে সূক্ষ্ম বিবর্তন হয়ে বিভিন্ন প্রজাতির বানর তৈরি হয়, কিন্তু তারা শেষ পর্যন্ত বানরই থাকে; মানুষ হয়ে যায় না। বিবর্তনের টেক্সট বইগুলোতে বিবর্তনবাদের পক্ষে যে সব উদাহরণ দেখানো হয়— যেমন ডারউইনের পাখির ঠোটের ‘বিবর্তন’, ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়ার ‘বিবর্তন’ হয়ে এন্টিবায়োটিকের প্রতি রেজিস্টেন্স, এইচআইভি ভাইরাসের ‘বিবর্তন’—এগুলো সবই হয় একই প্রজাতির মধ্যে। পাখি বিবর্তনের পরে পাখিই থাকে, ব্যাকটেরিয়া শেষ পর্যন্ত ব্যাকটেরিয়াই থাকে।[11] অতএব তাদের দাবি মিথ্যা ছাড়া আর কিছুই নয়। " হে বিবর্তনবাদীরা: আপনারা যারা এই আর্টিকেল পড়ে কমেন্ট করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে যাচ্ছেন, অনুগ্রহ করে আপনার এবং আমার সময় নষ্ট করবেন না। আপনার যা বলার উপরের এই রেফারেন্সগুলোর লেখকদেরকে বলুন"




 Reference..............

 [1] Appendix in Morris, J. and F. Sherwin. 2009. The Fossil Record. Dallas, TX: Institute for Creation Research.

[2] Nüsslein-Volhard, C. and E. Wieschaus. 1980. Mutations affecting segment number and polarity in Drosophila. Nature. 287 (5785): 795-801.

[3] Burke, M. K. et al. 2010. Genome-wide analysis of a long-term evolution experiment with Drosophila. Nature. 467 (7315): 587-590.

[4] Barrick, J. E. et al. 2009. Genome evolution and adaptation in a long-term experiment with Escherichia coli. Nature. 461 (7268): 1243- 1247.

 [5] Some bacteria began to access citrate for food. However, the new function probably resulted from loss-of-information mutations. See Behe, M. J. 2010. Experimental Evolution, Loss-of-Function Mutations and “The First Rule of Adaptive Evolution.” The Quarterly Review of Biology. 85 (4): 419-445.

[6] Sanford, J. 2008. Genetic Entropy & the Mystery of the Genome. Waterloo, NY: FMS Publications.

[7] Thomas, B. Do New Dinosaur Finger Bones Solve a Bird Wing Problem? ICR News. Posted on icr.org July 9, 2009, accessed March 9, 2012.

[8] Kong, A. et al. 2012. Rate of de novo mutations and the importance of father’s age to disease risk. Nature. 488 (7412): 471-475.

 [9]  Leonard, B. Critical Analysis of Evolution — Grade 10. Draft Reflecting Changes Made at March 2004 State Board of Education Meeting, page 314. Ohio Department of Education. Available online at www.texscience.org.

 [10] Allaby, M. (ed.) 1992. The Concise Oxford Dictionary of Zoology. New York: Oxford University Press.


[11] http://www.icr.org/article/7165/

বৃহস্পতিবার, ১৬ আগস্ট, ২০১৮

"তাওহীদ পাবললিকন্স"এর তথ্য বিভ্রান্তি?

"তাওহীদ পাবললিকন্স"এর তথ্য বিভ্রান্তি?
বিভ্রান্তিঃ১
আমি খুবই আর্শ্চয হয়েছে যখন দেখেছে "তাওহীদ পাবলিকেন্স" এর বুখারীতে নিজেদের পক্ষে সাফায় গাইতে গেয়ে তারা সাহবী আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ(রা)নামে এক চরম তথ্য বিভ্রান্তিকর তথ্য দেওয়া হয়েছে।নিচে দেওয়া হলোঃ
"সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ(রা) মুয়াব্বিযাতাইন- সূরাহ্ নাস ও ফালাক সূরাহ্দ্বয় কুরআনের অংশ নয় মনে করতেন"(19)উল্লেখ একই কথা বলা আছে আবূ দাঊদ গ্রন্থের অনুবাদে,টীকা সংযোজন করেছে আহসানুল্লাহ বিন সানাউল্লাহ(20)
এখানে এই বিষয়য় আলোচনা করা হলোঃ
মুয়াওয়িযাতাইন(সুরা ফালাক ও নাস) এর ব্যাপারে ইবন মাসউদ(রা) এর অবস্থানঃ
আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ(রা) যে সুরা ফালাক ও সুরা নাসকে কুরআনের অংশ বলে বিশ্বাস করতেন—এই কথার পেছনে বেশ কিছু শক্তিশালী প্রমাণ রয়েছে।
১।স্বয়ং ইবন মাসউদ(রা) থেকে মুয়াওয়িযাতাইন এর বিবরণঃ
আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ(রা) থেকে সুরা ফালাক ও সুরা নাস এর মর্যাদার বর্ণণা পাওয়া যায়।
عن ابن مسعود قال: استكثروا من السورتين يبلغكم الله بهما في الآخرة المعوذتين
ইবন মাসউদ(রা) থেকে বর্ণিতঃ “দুইটি সুরা বেশি করে পড়ো, আল্লাহ এর জন্য আখিরাতে তোমাদের মর্যাদা বাড়িয়ে দেবেন।আর তারা হচ্ছেঃ আল মুয়াওয়িযাতাইন(সুরা ফালাক ও সুরা নাস)।” [৪]
এটা কী করে সম্ভব হতে পারে যে আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ(রা) সুরা ফালাক ও সুরা নাসের মর্যাদা বর্ণণা করবেন, অথচ এই সুরাদ্বয়কে কুরআনের অংশ বলে মনে করবেন না তথা এদের অস্তিত্ব অস্বীকার করবেন? সুবহানাল্লাহ; ইসলামবিরোধীদের অভিযোগের অসারতা এই রেওয়ায়েতের দ্বারা স্পষ্টভাবে ফুটে উঠছে।
২। ইবন মাসউদ(রা) থেকে বর্ণিত সকল কিরাতে মুয়াওয়িযাতাইন এর উপস্থিতিঃ
প্রাচীন যুগ থেকেই কুরআন সংরক্ষণের প্রধানতম মাধ্যম ছিল হাফিজগণের স্মৃতি। আল্লাহ তা’আলা প্রিয় নবী (ﷺ)কে বলেনঃ
وأنزلت عليك كتابا لا يغسله الماء
“আমি তোমার উপর কিতাব নাজিল করেছি যা পানি দ্বারা ধুয়ে যাওয়া সম্ভব নয়” [৫]
{{ পানি দ্বারা সেই জিনিস ধুয়ে যাওয়া সম্ভব যা কাগজের উপর কালি দ্বারা লেখা হয়। যা স্মৃতিতে সংরক্ষিত থাকে, তার পক্ষে ধুয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।}}
মুসলিম কিরাত বিশেষজ্ঞগণ সবসময়েই কুরআনকে অবিচ্ছিন্ন বর্ণণাক্রম দ্বারা হিফাজত করেছেন যা স্বয়ং রাসুল(ﷺ) পর্যন্ত পৌঁছেছে।মুতাওয়াতির কিরাতগুলো কুরআনের সংরক্ষিত থাকবার একটি বড় প্রমাণ।
সকল মুতাওয়াতির কিরাতের মধ্যেই সুরা ফালাক ও সুরা নাস বিদ্যমান(এবং অবশ্যই সুরা ফাতিহাও সেগুলোতে রয়েছে।)।এই কিরাতগুলোর মধ্যে চারটি কিরাত রয়েছে, যেগুলোর বর্ণণাক্রম আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ(রা) থেকে রাসুল(ﷺ) পর্যন্ত পৌঁছেছে।
নিম্নে আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ(রা) থেকে বর্ণণাকৃত কিরাতগুলোর ব্যাপারে সংক্ষিপ্তভাবে আলোকপাত করা হল।
ক) আসিম এর কিরাতঃ এর বর্ণণাক্রম যির থেকে আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ(রা) থেকে মুহাম্মাদ(ﷺ) পর্যন্ত পৌঁছেছে।
উল্লেখ্য যে, উক্ত আসিম(মৃত্যু ১২৮ হিজরী) এবং যির(মৃত্যু ৮৩ হিজরী) মুসনাদ আহমাদ এর বর্ণণাকারীদের অন্তর্ভুক্ত।এই বর্ণণাকারীগণ থেকে এমন বিবরণ পাওয়া যায় যাতে বলা হয়েছে যে ইবন মাসউদ(রা) তাঁর মুসহাফে সুইটি সুরা(ফালাক ও নাস) উল্লেখ করেননি। অথচ তাঁদের থেকেই আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ(রা) এর সূত্রে যে কিরাত বর্ণিত হয়েছে, তাতে সুরা ফালাক ও সুরা নাস বিদ্যমান, আলহামদুলিল্লাহ।অতএব স্বয়ং বর্ণণাকারীগণ থেকে প্রমাণিত হল যে, মুসহাফে উল্লেখ না করলেও আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ(রা) এই সুরাদ্বয়কে কুরআনের অংশ হিসাবে তিলাওয়াত করতেন। [৬]
খ) হামজা এর কিরাতঃ এর বর্ণণাক্রম আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ(রা)এর সূত্রে নবী মুহাম্মাদ(ﷺ) পর্যন্ত পৌঁছেছে। [৭]
গ)আল কিসাই এর কিরাতঃ এর বর্ণণাক্রমও আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ(রা) থেকে মুহাম্মাদ(ﷺ) পর্যন্ত পৌঁছেছে। [৮]
ঘ) খালাফ এর কিরাতঃ এর বর্ণণাক্রমও আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ(রা) থেকে মুহাম্মাদ(ﷺ) পর্যন্ত পৌঁছেছে। [৯]
এই মুতাওয়াতির কিরাতগুলোর বর্ণাক্রমের মধ্যে আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ(রা) রয়েছেন এবং কিরাতগুলোর প্রত্যেকটিতে সুরা ফাতিহা, সুরা ফালাক ও সুরা নাস রয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ।এর ফলে সামান্যতম সন্দেহেরও আর অবকাশ রইলো না যেঃ সাহাবী আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ(রা) সুরা ফাতিহা, সুরা ফালাক ও সুরা নাসকে আল কুরআনের অংশ হিসাবে তিলাওয়াত করতেন।
কিছু বিপরীত বর্ণণা সম্পর্কে আলোচনাঃ
এবার আমরা কিছু রেওয়ায়েতের পর্যালোচনা করব যেগুলো ব্যবহার করে ইসলামবিরোধিরা অপপ্রচার চালায়।
বর্ণণা ১:
আবদাহ এবং আসিম যির থেকে বর্ণণা করেছেন, তিনি বলেনঃ
قلت لأبي: إن أخاك يحكهما من المصحف، قيل لسفيان: ابن مسعود؟ فلم ينكر
“আমি উবাই(রা)কে বলেছি, “আপনার ভাই ইবন মাসউদ(রা) সেগুলোকে(সুরা ফালাক ও নাস) তাঁর মুসহাফ থেকে মুছে ফেলেছেন”, এবং তিনি এতে কোন আপত্তি করলেন না।” [১০]
বিভ্রান্তি অপনোদনঃ
আমরা এই বর্ণণাটিতে দেখছি যে, ইবন মাসউদ(রা) সুরাগুলো মুছে ফেলেছেন শুনেও কুরআনের আলিম সাহাবী উবাই বিন কা’ব(রা) কোন আপত্তি বা প্রতিবাদ করছেন না।অথচ ইসলামের একটি সুপ্রতিষ্ঠিত আকিদা হচ্ছেঃ কেউ যদি কুরআনের একটি আয়াতও অস্বীকার করে, তাহলে সে ইসলাম থেকে বের হয়ে যায় এবং কাফির হিসাবে পরিগণিত হয়।অতএব ইবন মাসউদ(রা) যদি আসলেই সুরাদ্বয়কে কুরআনের অংশ হিসাবে মানতে অস্বীকার করতেন, তাহলে উবাই(রা) অবশ্যই কোন না কোন প্রতিক্রিয়া দেখাতেন। অথচ তিনি তেমন কিছুই করেননি।এ থেকে সুপষ্টভাবে প্রতিভাত হচ্ছে যেঃ উবাই(রা) এটা বুঝতে পেরেছিলেন যে ইবন মাসউদ(রা) উক্ত সুরাদ্বয়কে কুরআনের অংশ হিসাবে মানতে অস্বীকার করছেন না। শুধুমাত্র নিজ মুসহাফে উল্লেখ করেননিমাত্র।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হচ্ছেঃ যে আসিম ও যির এই রেওয়ায়েতের বর্ণণাকারী, তাঁরা স্বয়ং আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ(রা) এর সূত্রে বর্ণিত কিরাত থেকে সুরা ফালাক ও সুরা নাস পাঠ করেছেন।
বর্ণণা ২:
عن عبد الرحمن بن يزيد، قال: كان عبد الله، ” يحك المعوذتين من مصاحفه، ويقول: إنهما ليستا من كتاب الله “
আব্দুর রহমান বিন ইয়াজিদ বর্ণণা করেছেনঃ ইবন মাসউদ(রা) মুয়াওয়িযাতাইন(সুরা ফালাক ও সুরা নাস)কে তাঁর মুসহাফ থেকে মুছে ফেলেছেন এবং বলেছেন এগুলো কুরআনের অংশ নয়। [১১]
একই বিবরণ ইমাম তাবারানী(র) এর মু’জামুল কাবিরেও এসেছে। [১২]
বিভ্রান্তি অপনোদনঃ
এই বর্ণণাটি সত্য হতে পারে না কেননা এটি একটি শাজ বা বিচ্ছিন্ন বর্ণনা যা শুধুমাত্র আব্দুর রহমান বিন ইয়াজিদ বর্ণণা করেছেন।হাদিস শাস্ত্রে মুতাওয়াতিরের বিপরীতে বিচ্ছিন্ন বর্ণণা দ্বারা কোন বিষয় প্রমাণিত হয় না।এমনকি ঐ বর্ণণার সনদ সহীহ হলেও।এক্ষেত্রে একে মু’আল্লাল বা ত্রুটিপূর্ণ বর্ণণা বলে। [১৩]
বিপরীত বর্ণণাগুলো সম্পর্কে উলামাগণের অভিমতঃ
ইমাম নববী(র) বলেনঃ
أجمع المسلمون على أن المعوذتين والفاتحة من القرآن وأن من جحد منها شيئا كفر وما نقل عن ابن مسعود باطل ليس بصحيح.
“এ ব্যাপারে মুসলিমগণের ইজমা রয়েছে যে মুয়াওয়িযাতাইন ও সুরা ফাতিহা কুরআনের অংশ এবং যে তা অস্বীকার করে সে কাফির হয়ে যায়।আর এ ব্যাপারে ইবন মাসউদ(রা) থেকে যা বর্ণিত আছে তা মিথ্যা এবং সহীহ নয়।”
[১৪]
আবু হাফস ইবন আদিল আল হাম্বালী(র) লিখেছেনঃ
هذا المذهب عن ابن مسعود نقل كاذب باطل
“ইবন মাসউদ(রা) এর থেকে বর্ণিত এই অভিমতটি মিথ্যা ও বানোয়াট।” [১৫]
আল খিফাজী(র) বলেনঃ
وما نقل عن ابن مسعود رضي الله عنه من أنّ الفاتحة والمعوّذتين ليست من القرآن لا أصل له
“আর, ইবন মাসউদ(রা) থেকে সুরা ফাতিহা ও মুয়াওয়িযাতাইন কুরআনের অংশ নয় মর্মে যা বর্ণিত হয়েছে তার কোন ভিত্তি নেই।” [১৬]
এছাড়া ইমাম ইবন হাজম(র) থেকেও অনুরূপ বর্ণিত আছে। [১৭]
ইমাম সুয়ুতি(র) আবু বকর আল বাকিলানী(র) থেকে উদ্ধৃত করেছেনঃ
لم يصح عنه أنها ليست من القرآن ولا حفظ عنه. إنما حكها وأسقطها من مصحفه إنكارا لكتابتها لا جحدا لكونها قرآنا لأنه كانت السنة عنده ألا يكتب في المصحف إلا ما أمر النبي صلى الله عليه وسلم بإثباته فيه ولم يجده كتب ذلك ولا سمعه أمر به.
“এটি মোটেও তাঁর{ইবন মাসউদ(রা)} থেকে প্রমাণিত নয় যে এই সুরাদ্বয় কুরআনের অংশ নয়।কুরআনের অংশ হিসাবে অস্বীকার করে তিনি এই সুরাদ্বয়কে তাঁর মুসহাফ থেকে মোছেননি বা বাদ দেননি।তাঁর নিকট বিষয়টি এরূপ ছিল যে, তিনি নবী(ﷺ) এর নির্দেশ ব্যতিত কিছুই মুসহাফে লিখতেন না।এবং তিনি এ ব্যাপারে কিছু লিখিত পাননি বা এ ব্যাপারে কোন নির্দেশ শোনেননি। ” [১৮]
অতএব, উপরিউক্ত আলোচনা ও দলিল-প্রমাণ দ্বারা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হল যেঃ সাহাবী আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ(রা) এর বিরুদ্ধে ৩টি সুরাকে(ফাতিহা, ফালাক ও নাস) কুরআনের অংশ হিসাবে না মানার যে অভিযোগ তোলা হয় তা থেকে তিনি সম্পূর্ণ মুক্ত এবং এই সম্মানিত সাহাবী অন্য সকল মুসলিমের ন্যায় একই কুরআন পাঠ করতেন।সেই সাথে উসমান(রা) কর্তৃক সংকলিত কুরআনের বিরুদ্ধে ইসলামবিদ্বেষীদের অভিযোগও মিথ্যা প্রমাণিত হল।
এবং আল্লাহ ভালো জানেন।
বিভ্রান্তিঃ২
" ফির‘আউনের মরদেহ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘আজ আমি তোমার দেহটি রক্ষা করব, যাতে তুমি তোমার পরবর্তীদের জন্য নিদর্শন হয়ে থাক’’- (সূরা হূদ ১১/৯২)। কয়েক বছর পূর্বে ফির‘আউনের দেহ সুউচ্চ পিরামিড থেকে উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে তা কায়রোর যাদুঘরে রক্ষিত আছে"(21)
এখানে সব কিছুই ঠিক আছে কিন্তু রেফারেন্স ভুল দেওয়া হয়েছে সঠিক হবে সূরা ইউনুস ১০:৯২।
বিভ্রান্তিঃ৩
"আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে একইভাবে বর্ণিত আছে। অর্থাৎ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বনী ইসরাঈল যদি না হত তবে গোশত দুর্গন্ধময় হতো না। আর যদি হাওয়া (আঃ) না হতেন তাহলে কোন নারীই স্বামীর খিয়ানত করত না।(22)

এই হাদীসের টীকায় লেখা আছেঃ* বনী ইসরাঈল আল্লাহ তা’আলার নিকট থেকে সালওয়া নামক পাখীর গোশত খাওয়ার জন্য অবারিতভাবে পেত। ‎তা সত্ত্বেও তা জমা করে রাখার ফলে গোশত পচনের সূচনা হয়। আর মাতা হাওয়া নিষিদ্ধ ফল ভক্ষণে আদম ‎‎(‘আঃ)-কে প্রভাবিত করেন(23)
এখানে সবকিছুই বোধ হয় ঠিক আছে কিন্তু এখানে বলা হয়েছে"মাতা হাওয়া নিষিদ্ধ ফল ভক্ষণে আদম ‎‎(‘আঃ)-কে প্রভাবিত করেন" এই কথাটা আমি মানতে পারছে না কারণ পবিত্র কুরআনের বা হাদীসের কোথাও এই কথা নেই।এই সম্পর্কে কুরআনের আয়ার নিম্নরূপ উল্লেখ এখানে কোথাও বলা হয়নি " আর মাতা হাওয়া নিষিদ্ধ ফল ভক্ষণে আদম ‎‎(‘আঃ)-কে প্রভাবিত করেন"
আয়াত নিম্নরূপঃ
1.
وَقُلْنَا يَٰٓـَٔادَمُ ٱسْكُنْ أَنتَ وَزَوْجُكَ ٱلْجَنَّةَ وَكُلَا مِنْهَا رَغَدًا حَيْثُ شِئْتُمَا وَلَا تَقْرَبَا هَٰذِهِ ٱلشَّجَرَةَ فَتَكُونَا مِنَ ٱلظَّٰلِمِينَ
এবং আমি আদমকে হুকুম করলাম যে, তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস করতে থাক এবং ওখানে যা চাও, যেখান থেকে চাও, পরিতৃপ্তিসহ খেতে থাক, কিন্তু এ গাছের নিকটবর্তী হয়ো না। অন্যথায় তোমরা যালিমদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে পড়বে(24)
2.
فَأَكَلَا مِنْهَا فَبَدَتْ لَهُمَا سَوْءَٰتُهُمَا وَطَفِقَا يَخْصِفَانِ عَلَيْهِمَا مِن وَرَقِ ٱلْجَنَّةِۚ وَعَصَىٰٓ ءَادَمُ رَبَّهُۥ فَغَوَىٰ
অতঃপর তারা উভয়েই এর ফল ভক্ষণ করল, তখন তাদের সামনে তাদের লজ্জাস্থান খুলে গেল এবং তারা জান্নাতের বৃক্ষ-পত্র দ্বারা নিজেদেরকে আবৃত করতে শুরু করল। আদম তার পালনকর্তার অবাধ্যতা করল, ফলে সে পথ ভ্রষ্ঠ হয়ে গেল।(25)
3.
وَيَٰٓـَٔادَمُ ٱسْكُنْ أَنتَ وَزَوْجُكَ ٱلْجَنَّةَ فَكُلَا مِنْ حَيْثُ شِئْتُمَا وَلَا تَقْرَبَا هَٰذِهِ ٱلشَّجَرَةَ فَتَكُونَا مِنَ ٱلظَّٰلِمِينَ
হে আদম তুমি এবং তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস কর। অতঃপর সেখান থেকে যা ইচ্ছা খাও তবে এ বৃক্ষের কাছে যেয়োনা তাহলে তোমরা গোনাহগার হয়ে যাবে।(26)
4.
فَوَسْوَسَ لَهُمَا ٱلشَّيْطَٰنُ لِيُبْدِىَ لَهُمَا مَا وُۥرِىَ عَنْهُمَا مِن سَوْءَٰتِهِمَا وَقَالَ مَا نَهَىٰكُمَا رَبُّكُمَا عَنْ هَٰذِهِ ٱلشَّجَرَةِ إِلَّآ أَن تَكُونَا مَلَكَيْنِ أَوْ تَكُونَا مِنَ ٱلْخَٰلِدِينَ
অতঃপর শয়তান উভয়কে প্ররোচিত করল, যাতে তাদের অঙ্গ, যা তাদের কাছে গোপন ছিল, তাদের সামনে প্রকাশ করে দেয়। সে বললঃ তোমাদের পালনকর্তা তোমাদেরকে এ বৃক্ষ থেকে নিষেধ করেননি; তবে তা এ কারণে যে, তোমরা না আবার ফেরেশতা হয়ে যাও-কিংবা হয়ে যাও চিরকাল বসবাসকারী।(27)
4.
فَوَسْوَسَ إِلَيْهِ ٱلشَّيْطَٰنُ قَالَ يَٰٓـَٔادَمُ هَلْ أَدُلُّكَ عَلَىٰ شَجَرَةِ ٱلْخُلْدِ وَمُلْكٍ لَّا يَبْلَىٰ
অতঃপর শয়তান তাকে কুমন্ত্রনা দিল, বললঃ হে আদম, আমি কি তোমাকে বলে দিব অনন্তকাল জীবিত থাকার বৃক্ষের কথা এবং অবিনশ্বর রাজত্বের কথা?(28)
5.
فَدَلَّىٰهُمَا بِغُرُورٍۚ فَلَمَّا ذَاقَا ٱلشَّجَرَةَ بَدَتْ لَهُمَا سَوْءَٰتُهُمَا وَطَفِقَا يَخْصِفَانِ عَلَيْهِمَا مِن وَرَقِ ٱلْجَنَّةِۖ وَنَادَىٰهُمَا رَبُّهُمَآ أَلَمْ أَنْهَكُمَا عَن تِلْكُمَا ٱلشَّجَرَةِ وَأَقُل لَّكُمَآ إِنَّ ٱلشَّيْطَٰنَ لَكُمَا عَدُوٌّ مُّبِينٌ
অতঃপর প্রতারণাপূর্বক তাদেরকে সম্মত করে ফেলল। অনন্তর যখন তারা বৃক্ষ আস্বাদন করল, তখন তাদের লজ্জাস্থান তাদের সামনে খুলে গেল এবং তারা নিজের উপর বেহেশতের পাতা জড়াতে লাগল। তাদের প্রতিপালক তাদেরকে ডেকে বললেনঃ আমি কি তোমাদেরকে এ বৃক্ষ থেকে নিষেধ করিনি এবং বলিনি যে, শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।(29)
এখান থেকে বুঝা যায় শয়তান তাদেরকে প্রভাবিত করে বৃক্ষ খেতে কিন্তু হাওয়া (আ)আদম(আ)কে প্রভাবিত করে তা কিন্তু বলা হয়নি।তাই এটা একটা চরম তথ্য বিভ্রাট।
মুলত এটা "বাইবেল"এর কথা বাইবেল বলছেঃ
" সেই নারী দেখল গাছটা সুন্দর এবং এর ফল সুস্বাদু, আর এই ভেবে সে উত্তেজিত হল য়ে ঐ গাছ তাকে জ্ঞান দেবে| তাই নারী গাছটার থেকে ফল নিয়ে খেল| তার স্বামী সেখানেই ছিল, তাই সে স্বামীকেও ফলের একটা টুকরো দিল আর তার স্বামীও সেটা খেল|"(30)
  তাই এগুলো সংশোধন করা প্রয়োজন আছে বলে মনে হয়,আমি আশা রাখে হবে ইনশাআল্লাহ।

Reference.............
[৪] আলী আল মুত্তাকী, কানজুল উম্মাল, (বৈরুতঃ আর রিসালাহ পাবলিকেশন্স, ১৯৮১) হাদিস নং ২৭৪৩
[৫] মুসলিম, আস সহীহ, (রিয়াদঃ মাকতাবা দারুস সালাম, ২০০৭) হাদিস ৭২০৭
[৬] আল জাযরী, আন নাশর ফি কিরাআত আল ‘আশার, (কায়রোঃ মাকতাবা আত তিজারিয়াহ আল কুবরা) খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ১৫৫
[৭] প্রাগুক্ত; খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ১৬৫
[৮] প্রাগুক্ত; খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ১৭২
[৯] প্রাগুক্ত; খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ১৮৫
[১০] আহমাদ বিন হাম্বাল, আল মুসনাদ, (বৈরুতঃ আর রিসালাহ পাবলিকেশনস, ২০০১) হাদিস নং ২১১৮৯
[১১] আহমাদ বিন হাম্বাল, আল মুসনাদ, হাদিস নং ২১১৮৮
[১২] আত তাবারানী, মু’জামুল কাবির, (কায়রোঃ মাকতাবা ইবন তাইমিয়া, ১৯৯৪) হাদিস নং ৯১৫০
[১৩] মু’আল্লাল বা ত্রুটিপূর্ণ বর্ণণার ব্যাপারে জানতে দেখতে পারেনঃ Ibn as-Salah, An Introduction to the Science of Hadith, Translated by Dr. Eerik Dickinson (Berkshire: Garnet Publishing Ltd., 2006) page 57 & 67
[১৪] আস সুয়ুতি, আল ইতকান, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ২৭১
[১৫] ইবন আদিল আল হাম্বালী, আল বাব ফি উলুমুল কিতাব, (বৈরুতঃ দারুল কুতুব আল ইলমিয়্যাহ, ১৯৯৮) খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ২৪৯
[১৬] আল খিফাজী, ইনায়া আল কাযি ওয়া কিফায়া আর রাজি ‘আলা তাফসিরুল বাইযাওয়ি, (বৈরুত, দারুস সদর) খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ২৯
[১৭] ইবন হাজম, আল মুহাল্লা(বৈরুতঃ দারুল ফিকর) খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৩২
[১৮] আস সুয়ুতি, আল ইতকান, (কায়রো: হাইয়া আল মিসরিয়্যাহ, ১৯৭৪) খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ২৭১
[19]বুখারী১/১০/৮৬হাঃ৭৩৯নং টীকা,পৃঃ৩৫৭
[20]আবূ দাঊদ১/২/১১৯নং হাদীস, টীকা নং ৭৪৭,পৃঃ৪৯১,
[21]বুখারী, টীকা নং১০৫,পৃঃ৪১৩,
[22]বুখারী ৩/৬০/১ক হাদীসঃ৩৩৩০,৫১৮৪, ৫১৮৬) (মুসলিম ১৭/১৯ হাঃ ১৪৭০, আহমাদ ৮০৩৮) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩০৮৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩০৯২)
[23]বুখারী পৃঃ৪৩২
[24]আল-বাক়ারাহ ২:৩৫,কুরআন অ্যাপ পেতে :https://goo.gl/w6rESk
[25] সূরা ত়াহা ২০:১২১,কুরআন অ্যাপ পেতে :https://goo.gl/w6rESk
[26]আল-আ‘রাফ ৭:১৯,কুরআন অ্যাপ পেতে :https://goo.gl/w6rESk
[27]আল-আ‘রাফ ৭:২০,কুরআন অ্যাপ পেতে :https://goo.gl/w6rESk
[28]তাহা ২০:১২০,কুরআন অ্যাপ পেতে :https://goo.gl/w6rESk
[29].আল-আ‘রাফ ৭:২২,কুরআন অ্যাপ পেতে :https://goo.gl/w6rESk
[30]Book of Genesis 3:6

পর্বঃ২, অভিজিৎ রায়ের মিথ্যাচার?


পর্বঃ২অভিজিৎ রায়ের মিথ্যাচার?




তিনি তার বইয়ে লেখেছেনঃ
"কখনও বলা হয়েছে মুহাম্মাদকে সাহায্যে জন্য প্রস্তুত আছেন এক হাজার জন ফেরেশতা(৮:৯-১০)কখনোবা বলেছেন এই সাহায্যেকারী ফেরেশতাদের সং্খ্যা আসলে তিন হাজার(৩:১২৪,১২৬)।কখন আল্লাহ বলেছেন তার একটি দিন পার্থিব এক হাজার বছরের সমান (২২:৪৭,৩২:৫)কখনোবা বলেছেন তা দিন পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান(৭০:৪)"(8)
জবাবঃ সংশ্লিষ্ট আয়াতগুলো নিচে উল্লেখ করা হল।
( 124 )   إِذْ تَقُولُ لِلْمُؤْمِنِينَ أَلَن يَكْفِيَكُمْ أَن يُمِدَّكُمْ رَبُّكُم بِثَلَاثَةِ آلَافٍ مِّنَ الْمَلَائِكَةِ مُنزَلِينَ
( 125 )   بَلَىٰ ۚ إِن تَصْبِرُوا وَتَتَّقُوا وَيَأْتُوكُم مِّن فَوْرِهِمْ هَٰذَا يُمْدِدْكُمْ رَبُّكُم بِخَمْسَةِ آلَافٍ مِّنَ الْمَلَائِكَةِ مُسَوِّمِينَ
অর্থঃ “ তুমি [মুহাম্মাদ(ﷺ)] যখন বলতে লাগলে মু’মিনদেরকে-তোমাদের জন্য কি এটা যথেষ্ট নয় যে, তোমাদের সাহায্যার্থে তোমাদের প্রভু আসমান থেকে অবতীর্ণ ৩০০০ ফেরেশতা পাঠাবেন?
অবশ্য তোমরা যদি ধৈর্য ধর এবং তাকওয়া অবলম্বন কর আর তারা যদি তারা দ্রুত গতিতে তোমাদের উপর আক্রমণ করে, তাহলে তোমাদের প্রভু ৫০০০ চিহ্নিত ফেরেশতা দিয়ে তোমাদের সাহায্য করবেন।” [1]
إِذْ تَسْتَغِيثُونَ رَبَّكُمْ فَاسْتَجَابَ لَكُمْ أَنِّي مُمِدُّكُم بِأَلْفٍ مِّنَ الْمَلَائِكَةِ مُرْدِفِينَ
অর্থঃ “  তোমরা যখন ফরিয়াদ করতে আরম্ভ করেছিলে তোমাদের প্রভুর [আল্লাহ] নিকট, তখন তিনি তোমাদের ফরিয়াদের মঞ্জুরী দান করলেন যে, আমি তোমাদিগকে সাহায্য করব ধারাবহিকভাবে আগত হাজার ফেরেশতার মাধ্যমে।” [2]
( 6 )   وَقَالُوا يَا أَيُّهَا الَّذِي نُزِّلَ عَلَيْهِ الذِّكْرُ إِنَّكَ لَمَجْنُونٌ
( 7 )   لَّوْ مَا تَأْتِينَا بِالْمَلَائِكَةِ إِن كُنتَ مِنَ الصَّادِقِينَ
( 8 )   مَا نُنَزِّلُ الْمَلَائِكَةَ إِلَّا بِالْحَقِّ وَمَا كَانُوا إِذًا مُّنظَرِينَ
অর্থঃ “তারা বললঃ হে ঐ ব্যক্তি, যার প্রতি কুরআন নাযিল হয়েছে— তুমি তো একজন উম্মাদ! যদি তুমি সত্যবাদী হও, তবে আমাদের কাছে ফেরেশতাদেরকে আনো না কেন?
আমি ফেরেশতাদেরকে একমাত্র ফায়সালার জন্যেই নাযিল করি। [ফেরেশতাদের পাঠানো হলে] তখন তাদেরকে আর অবকাশ দেয়া হবে না।“ [3]
সুরা হিজরের আলোচ্য আয়াতটি (আয়াত ১৫:৮) প্রসঙ্গসহ পড়লেই দেখা যাচ্ছে যে এখানে মোটেও বদরের যুদ্ধের কথা বলা হচ্ছে না। সুরা হিজর একটি মাক্কী সুরা, এটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়। আর বদরের যুদ্ধ হয় তার অনেক পরে, রাসুল(ﷺ) মদীনায় হিজরত করার পর। [4]
আলোচ্য আয়াতের প্রেক্ষাপট হচ্ছে, মক্কার অবিশ্বাসীরা রাসুলুল্লাহ(ﷺ)কে বলেছিল, “হে ঐ ব্যক্তি, যার প্রতি কুরআন নাযিল হয়েছে— তুমি তো একজন উম্মাদ!” তারা আরো দাবি করে যে তিনি যদি সত্যবাদী হন, তাহলে তাদের কাছে ফেরেশতা নিয়ে আসেন না কেন? এর জবাবে আল্লাহ নাজিল করেন, “আমি ফেরেশতাদেরকে একমাত্র ফায়সালার জন্যেই নাযিল করি। তখন তাদেরকে আর অবকাশ দেয়া হবে না।“  যখন ফেরেশতাদের আগমনের পরেও বিশ্বাস স্থাপন করত না, যা তাদের অবস্থাদৃষ্টে নিশ্চিত, তখন তাৎক্ষণিকভাবে তাদেরকে ধ্বংস করে দেওয়া হত। যেমন সুরা আন’আমের ১ম শেষ আয়াতগুলোতে এর কারণ বর্ণিত হয়েছে। [5] 
কুরআনেই এর বাস্তব উদাহরণ পাওয়া যায়। নবী লুত(আ) এর জাতির সীমালঙ্ঘণের কারণে তাদের জন্য ফেরেশতা প্রেরণ করা হয় এবং তাদেরকে একেবারে ধ্বংস করে দেওয়া হয়। [6] এ ছাড়া বদর যুদ্ধেও মক্কার অবিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে ফয়সালামূলক যুদ্ধে মুসলিমদের সাহায্য করার জন্য ফেরেশতা অবতীর্ণ করা হয়।
অর্থাৎ এখানে অভিযোগকারীরা সম্পূর্ণ ভিন্ন ঘটনার উপর ও ভিন্ন প্রসঙ্গে নাজিল হওয়া একটি আয়াতকে অন্য ঘটনার সাথে জুড়ে দিয়ে কুরআন থেকে ‘স্ববিরোধিতা’(!) বের করার প্রয়াস পেয়েছেন।
এবার বদরের যুদ্ধের প্রেক্ষিতে নাজিলকৃত আয়াতগুলোর আলোচনায় আসি যেগুলোর ব্যাপারে স্ববিরোধিতার অভিযোগ তোলা হয়েছে।
বদরের যুদ্ধের সময়ে আল্লাহ তা’আলার পক্ষে থেকে যে সমস্ত ফেরেশতা সাহায্যের জন্য পাঠানো হয়েছিল, সুরা আনফাল ৮:৯ নং আয়াতে তাদের সংখ্যা ১০০০ জন ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ সুরা আলি ইমরানে (আয়াত ৩:১২৪-১২৫) ৩০০০ এবং ৫০০০ ফেরেশতারও উল্লেখ রয়েছে।
এর কারণ ছিল—প্রকৃতপক্ষে ৩টি ওয়াদার ভিন্নতা যা বিভিন্ন অবস্থার প্রেক্ষিতে করা হয়েছে।
১ম ওয়াদাটি ছিল ১০০০ ফেরেশতা প্রেরণের (সুরা আনফাল ৮:৯) , যার কারণ ছিল মহানবী(ﷺ) এর দুআ এবং সাধারণ মুসলিমদের ফরিয়াদ।
২য় ওয়াদা, যা ৩০০০ ফেরেশতার ব্যাপারে করা হয় এবং যা সুরা আলি ইমরানে (আয়াত ৩:১২৪) উল্লেখ করা হয়েছে। এটা সেই সময়ে করা হয়েছিল যখন মুসলিমদের কাছে এই সংবাদ এসে পৌঁছে যে, কুরাইশ বাহিনীর জন্য আরো বর্ধিত সাহায্য আসছে। তাফসির রুহুল মা’আনী গ্রন্থে ইবন আবি শায়বা ও ইবন মুনজির কর্তৃক শা’বীর উদ্ধৃতিক্রমে উল্লেখ রয়েছে যে, ইবন জাবির মুহারিবী মুশরিকদের সহায়তার উদ্যেশ্যে আরো সাহায্য নিয়ে এগিয়ে আসছে এ সংবাদে মুসলিমদের মাঝে এক ত্রাসের সৃষ্টি হয়। এরই প্রেক্ষিতে সুরা আলি ইমরানের ৩:১২৪ নং আয়াত নাজিল হয়। এতে ৩০০০ ফেরেশতাকে মুসলিমদের সাহায্যকল্পে আকাশ থেকে অবতীর্ণ করার ওয়াদা করা হয়।
আর ৩য় ওয়াদা ছিল ৫০০০ এর। তা ছিল এই শর্তযুক্ত যে—বিপক্ষ দল যদি প্রচণ্ড আক্রমণ করে বসে, তবে ৫০০০ ফেরেশতার সাহায্য পাঠানো হবে। আর তা সুরা আলি ইমরানের পরবর্তী আয়াতে (আয়াত ৩:১২৫) ব্যক্ত করা হয়েছে। ... কোন কোন তাফসিরবিদ বলেন যে, এ ওয়াদার শর্ত ছিল ৩টি। (১) দৃঢ়তা অবলম্বন (২) তাকওয়ার উপর স্থির থাকা থাকা এবং (৩) প্রতিপক্ষের ব্যাপক আক্রমণ।
১ম ২টি শর্ত সাহাবায়ে কিরামের(রা) এমনিতেই বিদ্যমান ছিল এবং তাঁদের এ আশায় প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত এতটুকু পার্থক্য আসেনি।
কিন্তু ৩য় শর্তটি অর্থাৎ ব্যাপক আক্রমণের ব্যাপারটি প্রথমে সংঘটিত হয়নি কাজেই ৫০০০ ফেরেশতার আগমনের প্রয়োজন হয়নি।
...
এখানে এ বিষয়টিও লক্ষণীয় যে, উক্ত আয়াতগুলোতে যে ৩টি দল (১০০০, ৩০০০ ও ৫০০০ জনের) প্রেরণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, তাদের প্রত্যেকটি দলের সাথেই একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ রয়েছে। সুরা আনফালের যে আয়াতে ১০০০এর ওয়াদা করা হয়েছে (আয়াত ৮:৯) তাতে ফেরেশতাদের বৈশিষ্ট্য বলতে গিয়ে مُرْدِفِينَ শব্দ বলা হয়েছে। এর শাব্দিক অর্থ হচ্ছেঃ ‘পেছনে লাগোয়া’। এ থেকে এ ইঙ্গিত বোঝা যায় যে এদের পেছনে আরো ফেরেশতা আসবে। পক্ষান্তরে সুরা আলি ইমরানের উল্লেখিত প্রথম আয়াতটিতে (আয়াত ৩:১২৪) ফেরেশতাদের বৈশিষ্ট্য مُنزَلِينَ বলা হয়েছে। অর্থাৎ এ সমস্ত ফেরেশতা আকাশ থেকে অবতারণ করা হবে। এতে একটি বিশেষ গুরুত্বের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, পূর্ব থেকেই যে সব ফেরেশতা পৃথিবীতে অবস্থান করছেন, তাদেরকে এ কাজে নিয়োগ না করে বিশেষ গুরুত্ব সহকারে এ কাজের জন্য আকাশ থেকে ফেরেশতা অবতারণ করা হবে।
আর সুরা আলি ইমরানের অন্য আয়াতে যেখানে ৫০০০ ফেরেশতার কথা উল্লেখ আছে (আয়াত ৩:১২৫) তাতে ফেরেশতাদের مُسَوِّمِينَ বৈশিষ্ট্য বলা হয়েছে। অর্থাৎ তাঁরা হবেন বিশেষ চিহ্ন ও বিশেষ পোশাকে ভূষিত। হাদিসের বর্ণণায় তাই রয়েছে যে, বদর যুদ্ধে অবতীর্ণ ফেরেশতাদের পাগড়ী ছিল সাদা। এ ছাড়া হুনাইন যুদ্ধে সাহায্যের জন্য আগত ফেরেশতাদের পাগড়ী ছিল লাল। [7]  
অতএব আলোচ্য আয়াতগুলোতে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন সংখ্যক ফেরেশতার দল দ্বারা মুসলিমদের সাহায্য করবার কথা বলা হয়েছে। এই তথ্যগুলোতে কোন প্রকারের বৈপরিত্য নেই।
আর একদিন কত দিনের সমান সেই সম্পর্কে আয়াত উল্লেখ করা হলোঃ
(1)
تَعْرُجُ ٱلْمَلَٰٓئِكَةُ وَٱلرُّوحُ إِلَيْهِ فِى يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهُۥ خَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ
ফেরেশতাগণ এবং রূহ আল্লাহ তা’আলার দিকে উর্ধ্বগামী হয় এমন একদিনে, যার পরিমাণ পঞ্চাশ হাজার বছর(9

এই আয়াত সম্পর্কে আমরা হাদীসে কি বলা আছে তা দেখে নেয়।

হাদীসঃ সুওয়াইদ ইবনু সাঈদ (রহঃ) ..... আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সোনা-রূপার অধিকারী যেসব লোক এ হাক (হক) (যাকাত) আদায় করে না, কিয়ামাতের দিন তার ঐ সোনা-রূপা দিয়ে তার জন্য আগুনের অনেক পাত তৈরি করা হবে, অতঃপর তা জাহান্নামের আগুনে গরম করা হবে। অতঃপর তা দিয়ে কপালদেশ ও পার্শ্বদেশ ও পিঠে দাগ দেয়া হবে। যখনই ঠাণ্ডা হয়ে আসবে পুনরায় তা উত্তপ্ত করা হবে। এরূপ করা হবে এমন একদিন যার পরিমাণ হবে পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান। আর তার এরূপ শাস্তি লোকদের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত চলতে থাকবে। অতঃপর তাদের কেউ পথ ধরবে জান্নাতের আর জাহান্নামের দিকে।
জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! উটের (মালিকের) কী অবস্থা হবে? তিনি বললেন, যে উটের মালিক তার উটের হাক (হক) আদায় করবে না তার উটের হকগুলোর মধ্যে পানি পানের তারিখে তার দুধ দোহন করে অন্যদেরকে দান করাও একটি হাক (হক), যখন কিয়ামাতের দিন আসবে তাকে এক সমতল ময়দানে উপুড় করে ফেলা হবে। অতঃপর তার উটগুলো মোটাতাজা হয়ে আসবে। এর বাচ্চাগুলোও এদের অনুসরণ করবে। এগুলো আপন আপন খুর দ্বারা তাকে পায়ে মাড়াতে থাকবে এবং মুখ দ্বারা কামড়াতে থাকবে। এভাবে যখন একটি পশু তাকে অতিক্রম করবে অপরটি অগ্রসর হবে। সারাদিন তাকে এরূপ শাস্তি দেয়া হবে। এ দিনের পরিমাণ হবে পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান। অতঃপর বান্দাদের বিচার শেষ হবে। তাদের কেউ জান্নাতের দিকে আর কেউ জাহান্নামের দিকে পথ ধরবে।
অতঃপর জিজ্ঞেস করা হলো- হে আল্লাহর রসূল! গরু-ছাগলের (মালিকদের) কী অবস্থা হবে? উত্তরে তিনি বললেন, যেসব গরু ছাগলের মালিক এর হাক (হক) আদায় করবে না কিয়ামাতের দিন তাকে এক সমতল ভূমিতে উপুড় করে ফেলে রাখা হবে। আর তার সে সব গরু ছাগল তাকে শিং দিয়ে আঘাত করতে থাকবে এবং খুর দিয়ে মাড়াতে থাকবে। সেদিন তার একটি গরু বা ছাগলের শিং বাকা বা শিং ভাঙ্গা থাকবে না এবং তাকে মাড়ানোর ব্যাপারে একটিও অনুপস্থিত দেখতে পাবে না। যখন এদের প্রথমটি অতিক্রম করবে দ্বিতীয়টা এর পিছে পিছে এসে যাবে। সারাদিন তাকে এভাবে পিষা হবে। এ দিনের পরিমাণ হবে পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান। অতঃপর বান্দাদের বিচার শেষ হবে এবং তাদের কেউ জান্নাতের দিকে আর কেউ জাহান্নামের দিকে পথ ধরবে।
অতঃপর জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! ঘোড়ার (মালিকের) কী অবস্থা হবে? তিনি (উত্তরে) বললেন, ঘোড়া তিন প্রকারের- (ক) যে ঘোড়া তার মালিকের জন্য গুনাহের কারণ হয়, (খ) যে ঘোড়া তার মালিকের পক্ষে আবরণ স্বরূপ এবং (গ) যে ঘোড়া মালিকের জন্য সাওয়াবের কারণ স্বরূপ। বস্তুতঃ সে ঘোড়াই তার মালিকের জন্য বোঝা বা গুনাহের কারণ হবে, যা সে লোক দেখানোর জন্য অহংকার প্রকাশের জন্য এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে শক্রতা করার উদ্দেশে পোষে। আর যে ব্যক্তি তার ঘোড়াকে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের জন্য পোষে এবং এর পিঠে সওয়ার হওয়া এবং খাবার ও ঘাস দেয়ার ব্যাপারে আল্লাহর হাক (হক) ভুলে না, এ ঘোড়া তার দোষ-ত্রুটি গোপন রাখার জন্য আবরণ হবে।
আর যে ব্যক্তি মুসলিমদের সাহায্যের জন্য আল্লাহর রাস্তায় ঘোড়া পোষে এবং কোন চারণভূমি বা ঘাসের বাগানে লালন পালন করতে দেয় তার এ ঘোড়া তার জন্য সাওয়াবের কারণ হবে। তার ঘোড়া চারণভূমি অথবা বাগানে যা কিছু খাবে তার সমপরিমাণ তার জন্য সাওয়াব লেখা হবে। এমনকি এর গোবর ও প্রস্রাবে সাওয়াব লেখা হবে। আর যদি তা রশি ছিড়ে একটি বা দুটি মাঠেও বিচরণ করে তাহলে তার পদচিহ্ন ও গোবরের সমপরিমাণ নেকী তার জন্য লেখা হবে। এছাড়া মালিক যদি কোন নদীর তীরে নিয়ে যায়- আর সে নদী থেকে পানি পান করে অথচ তাকে পানি পান করানোর ইচ্ছা মালিকের ছিল না তথাপি পানির পরিমাণ তার ‘আমালনামায় সাওয়াব লেখা হবে।
অতঃপর জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! গাধা সম্পর্কে বলুন। তিনি বললেন, গাধা সম্পর্কে কোন আয়াত আমার কাছে অবতীর্ণ হয়নি। তবে ব্যাপক অর্থবোধক এ আয়াতটি আমার উপর অবতীর্ণ হয়েছে, যে ব্যক্তি অণু পরিমাণ একটি ভাল কাজ করবে সে তার শুভ প্রতিফল পাবে আর যে এক অণু পরিমাণ মন্দ কাজ করবে সে তার মন্দ ফল ভোগ করবে (10)

তাই এখান থেকে বুঝা যায় পঞ্চশ হাজারের বিষয়টা আখিরাতের বিষয়।তাই আমরা নিঃসন্দেহে বলতে পারে যে নিচে উল্লেখকৃত আয়াতের সাথে এর কোনো বিরোধ নাই।এবং এটা অভিজিৎ রায়ে মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয় পবিত্র কোরআনের নামে।
(2)
وَيَسْتَعْجِلُونَكَ بِٱلْعَذَابِ وَلَن يُخْلِفَ ٱللَّهُ وَعْدَهُۥۚ وَإِنَّ يَوْمًا عِندَ رَبِّكَ كَأَلْفِ سَنَةٍ مِّمَّا تَعُدُّونَ
তারা আপনাকে আযাব ত্বরান্বিত করতে বলে। অথচ আল্লাহ কখনও তাঁর ওয়াদা ভঙ্গ করেন না। আপনার পালনকর্তার কাছে একদিন তোমাদের গণনার এক হাজার বছরের সমান।(11)
(3)
يُدَبِّرُ ٱلْأَمْرَ مِنَ ٱلسَّمَآءِ إِلَى ٱلْأَرْضِ ثُمَّ يَعْرُجُ إِلَيْهِ فِى يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهُۥٓ أَلْفَ سَنَةٍ مِّمَّا تَعُدُّونَ
তিনি আকাশ থেকে পৃথিবী পর্যন্ত সমস্ত কর্ম পরিচালনা করেন, অতঃপর তা তাঁর কাছে পৌছবে এমন এক 
যার পরিমাণ তোমাদের গণনায় হাজার বছরের সমান(12)

Reference.............
[1]  আল কুরআন, আলি ইমরান ৩:১২৪-১২৫
[2]  আল কুরআন, আনফাল ৮:৯
[3]  আল কুরআন, হিজর ১৫:৬-৮
[4]  আর রাহিকুল মাখতুম {শফিউর রহমান মুবারকপুরী(র)}, তাওহীদ পাবলিকেশন্স, পৃষ্ঠা ২৪৮
[5]  তাফসির মা’আরিফুল কুরআন, ৫ম খণ্ড {মুফতি শফি(র)}, সুরা হিজরের ৮নং আয়াতের তাফসির, পৃষ্ঠা ২৬৯-২৭০
[6]  সুরা হুদ ১১:৬৯-৮৩ ও সুরা যারিয়াত ৫১:২৪-৩৫ দ্রষ্টব্য
[7]  তাফসির মা’আরিফুল কুরআন, ৪র্থ খণ্ড {মুফতি শফি(র)}, সুরা আনফালের ৯নং আয়াতের তাফসির, পৃষ্ঠা ২১৩-২১৪
(8)অবিশ্বাসের দর্শন পৃঃ২৬৭,
(9)সূরা আল মা'আরিজ ৭০:৪,
(10)সহীহ মুসলিম -২৪/৯৮৭হাঃ২১৮০,২১৮১,ইসলামিক ফাউন্ডেশন হাঃ২১৫৯, ইসলামীক সেন্টার হাঃ২১৬১,
(11)সূরা আল হাজ্জ্ব ২২:৪৭,কুরআন অ্যাপ পেতে :https://goo.gl/w6rESk
(12)সূরা সাজ্বদাহ ৩২:৫,
কুরআন অ্যাপ পেতে :https://goo.gl/w6rESk

উইকিপিডিয়ার আবারও মিথ্যাচার!

                                           উইকিপিডিয়ার মিথ্যাচার!


উইকিপিডিয়ায় লেখা আছে নিচের লেখা গুলোঃ
"মুসলমানদের বিশ্বাস অনুযায়ী ইসলাম হল তাঁদের জন্য আল্লাহর প্রেরিত জীবন বিধান"(1)
এখানে কৌশলে বুঝানো হচ্ছে "ইসলাম শুধু মাত্র"মুসলিমদের জন্য,পুরো মানব জাতির জন্য নয়।
অথচ এটা ইসলামের নামে মিথ্যাচার ছাড়া কিছুই নয় কারণ পবিত্র কুরআনে অনেকবার বলা হয়েছে ইসলাম বা  কুরআন এসেছে বা মুহাম্মাদ(সা) নবী হিসেবে এসেছেন পুরো মানবজাতির জন্য। আর এখানে যদি আমি লেখাটা ভাবার্থ করে তাহলে বলা যায় বলা হচ্ছে, "মুসলিমরা বিশ্বাস করে ইসলাম এসেছে মুসলিমদের জন্য"অথচ মুসলিমরা এটা বিশ্বাস করে না।
আল্লাহ তা'য়ালা বলেছেনঃ
وَمَآ أَرْسَلْنَٰكَ إِلَّا رَحْمَةً لِّلْعَٰلَمِينَ
অনুবাদঃআমি আপনাকে বিশ্ববাসীর জন্যে রহমত স্বরূপই প্রেরণ করেছি(2)
وَمَآ أَرْسَلْنَٰكَ إِلَّا كَآفَّةً لِّلنَّاسِ بَشِيرًا وَنَذِيرًا وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ ٱلنَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ
অনুবাদঃ আমি আপনাকে সমগ্র মানবজাতির জন্যে সুসংবাদাতা ও সতর্ককারী রূপে পাঠিয়েছি;    কিন্তঅধিকাংশ মানুষ তা জানে না(3)
আল্লাহ তা'য়ালা কুরআনের অনেক সূরায় বলেছেন মহাম্মাদ(সা) ও কুরআন এসেছে মানবজাতি জন্য দেখুনঃ
কুরআন এসেছে মানবজাজাতির জন্য!
২১:১০৭
১৪:১
১৪:৫২
২:১৮৫
৩৯:৪১
৩৪:২৮
Reference.............
(1)https://bn.m.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%87%E0%A6%B8%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%87_%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80
(2)সূরা আল আম্বিয়া ২১ঃ১০৭;
(3)সূরা সাবা ৩৪ঃ২৮;

মঙ্গলবার, ১৪ আগস্ট, ২০১৮

"মুক্তমনা"ব্লগের লেখকের মিথ্যাচার?

                                  "মুক্তমনা"ব্লগের লেখকের মিথ্যাচার?


একজন লেখক দাবি করেছে নিচে যা উল্লেখ  করা হলোঃ
"কন্ট্রাডিকশন ১০ : কোরআনের ঐ সব আদেশ, নিষেধ, উপদেশ- যা মুহম্মদ সা: নিজেই মানেন নি(1)
১। সুরা ৪:৩
“আর যদি তোমরা ভয় কর যে, এতীম মেয়েদের হক যথাথভাবে পুরণ করতে পারবে না, তবে সেসব মেয়েদের মধ্যে থেকে যাদের ভাল লাগে তাদের বিয়ে করে নাও দুই, তিন, কিংবা চারটি পর্যন্ত। আর যদি এরূপ আশঙ্কা কর যে, তাদের মধ্যে ন্যায় সঙ্গত আচরণ বজায় রাখতে পারবে না, তবে, একটিই অথবা তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসীদেরকে; এতেই পক্ষপাতিত্বে জড়িত না হওয়ার অধিকতর সম্ভাবনা।”
এখান থেকে বুঝা যায় যে একজন মানুষ(সামর্থবান)সবোর্চ্চ চারটা বিয়ে করতে পারে। তার দাবি মুহাম্মাদ(সা) এর যেহেতু চারজজনের বেশি স্ত্রী ছিল তাই মুহাম্মাদ (সা) আল্লাহ আদেশ অমান্য করেছেন। এই দাবি যে কুরআন সম্পর্কে অজ্ঞতার ফসল ছাড়া আর কিছুই নয় তা যে কেউ কুরআন পাঠ করলে বুঝতে পারবে।আল্লাহ তা'য়ালা মুহাম্মাদ(সা) কে শুধু মাত্র তার জন্য চারজনের বেশি স্ত্রী রাখার অনুমতি দিয়েছেন আর তা কুরআনেই বলা আছে তাই তিনি আল্লাহ আদেশ অমান্য করেছেন,তা তার নামে মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই না।আল্লাহ তা'য়ালা বলেনঃ
يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِىُّ إِنَّآ أَحْلَلْنَا لَكَ أَزْوَٰجَكَ ٱلَّٰتِىٓ ءَاتَيْتَ أُجُورَهُنَّ وَمَا مَلَكَتْ يَمِينُكَ مِمَّآ أَفَآءَ ٱللَّهُ عَلَيْكَ وَبَنَاتِ عَمِّكَ وَبَنَاتِ عَمَّٰتِكَ وَبَنَاتِ خَالِكَ وَبَنَاتِ خَٰلَٰتِكَ ٱلَّٰتِى هَاجَرْنَ مَعَكَ وَٱمْرَأَةً مُّؤْمِنَةً إِن وَهَبَتْ نَفْسَهَا لِلنَّبِىِّ إِنْ أَرَادَ ٱلنَّبِىُّ أَن يَسْتَنكِحَهَا خَالِصَةً لَّكَ مِن دُونِ ٱلْمُؤْمِنِينَۗ قَدْ عَلِمْنَا مَا فَرَضْنَا عَلَيْهِمْ فِىٓ أَزْوَٰجِهِمْ وَمَا مَلَكَتْ أَيْمَٰنُهُمْ لِكَيْلَا يَكُونَ عَلَيْكَ حَرَجٌۗ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا
অনুবাদঃ হে নবী! আপনার জন্য আপনার স্ত্রীগণকে হালাল করেছি, যাদেরকে আপনি মোহরানা প্রদান করেন। আর দাসীদেরকে হালাল করেছি, যাদেরকে আল্লাহ আপনার করায়ত্ব করে দেন এবং বিবাহের জন্য বৈধ করেছি আপনার চাচাতো ভগ্নি, ফুফাতো ভগ্নি, মামাতো ভগ্নি, খালাতো ভগ্নিকে যারা আপনার সাথে হিজরত করেছে। কোন মুমিন নারী যদি নিজেকে নবীর কাছে সমর্পন করে, নবী তাকে বিবাহ করতে চাইলে সেও হালাল। এটা বিশেষ করে আপনারই জন্য-অন্য মুমিনদের জন্য নয়। আপনার অসুবিধা দূরীকরণের উদ্দেশে। মুমিনগণের স্ত্রী ও দাসীদের ব্যাপারে যা নির্ধারিত করেছি আমার জানা আছে। আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।(2)
আবার আল্লাহ বলেনঃ
لَّا يَحِلُّ لَكَ ٱلنِّسَآءُ مِنۢ بَعْدُ وَلَآ أَن تَبَدَّلَ بِهِنَّ مِنْ أَزْوَٰجٍ وَلَوْ أَعْجَبَكَ حُسْنُهُنَّ إِلَّا مَا مَلَكَتْ يَمِينُكَۗ وَكَانَ ٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍ رَّقِيبًا
অনুবাদঃ এরপর আপনার জন্যে কোন নারী হালাল নয় এবং তাদের পরিবর্তে অন্য স্ত্রী গ্রহণ করাও হালাল নয় যদিও তাদের রূপলাবণ্য আপনাকে মুগ্ধ করে, তবে দাসীর ব্যাপার ভিন্ন। আল্লাহ সর্ব বিষয়ের উপর সজাগ নজর রাখেন।(3)

Reference..............
(1)https://blog.mukto-mona.com/2009/12/21/4041/
(2)সূরা আল আহযাব ৩৩ঃ৫০;
(3)সূরা আহযাব ৩৩ঃ৫২;

কুরআন ও হাদীস নিয়ে এক অমুসলিমের অজ্ঞতা?

কুরআন ও হাদীস নিয়ে এক অমুসলিমের অজ্ঞতা নাকি অপপ্রচার?


"তারপর ধরা যাক আদম-হাওয়ার বিষয়টা। বলা হয়ে থাকে, আদম-হাওয়া হলো দুনিয়ার প্রথম সৃষ্টি মানব-মানবী। তাদের দুই সন্তান–হাবিল, কাবিল। কোরান-হাদিস বা ইসলামের কোনো নির্ভযোগ্য সোর্স থেকে আদম-হাওয়া হাবিল-কাবিলের কাহিনীটা কেউ দিতে পারবেন?"(1)
এই কথাটা একজন অমুসলিমের। তার বক্তব্য থেকে বুঝা যায় যে তিনি ইসলাম সম্পর্কে কতটা জানেন?মুসলিম বা মানুষদের বিভ্রান্তি মধ্যে রাখা এ এক বড় হাতিয়ার যে ইসলাম সম্পর্কে না জেনে বড় বড় মন্তব্য করা। যাই হোক পবিত্র কুরআনে অনেক জায়গায় আদম (আ)ও হাওয়া(আ) নিয়ে বলা আছে, যে কেউ দেখে নিতে পারেন,নিচে দেওয়া হলোঃউল্লেখ্য যে, আমার জানা মতে হযরত আদম (আঃ)ও হাওয়া(আ) সম্পর্কে পবিত্র কুরআনের ১০টি সূরায় ৫০টি আয়াতে বর্ণিত হয়েছে।
যথাক্রমেঃ
সূরা বাক্বারাহ ২/৩১-৩৭= ৭;
আলে ইমরান ৩/৩৩,৫৯;
মায়েদাহ ৫/২৭-৩২= ৬;
আ‘রাফ ৭/১১, ১৯, ২৬, ২৭, ৩১, ৩৫, ১৭২-৭৩= ৮; হিজর ১৫/২৬-৪২= ১৭;
ইসরা ১৭/৬১, ৭০;
ইয়াসীন ৩৬/৬০।
..................................................................................
                     সর্বমোট = ৫০টি।
আর তাদের সন্তানদের সম্পর্কে বলা হয়েছেঃ
وَٱتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَأَ ٱبْنَىْ ءَادَمَ بِٱلْحَقِّ إِذْ قَرَّبَا قُرْبَانًا فَتُقُبِّلَ مِنْ أَحَدِهِمَا وَلَمْ يُتَقَبَّلْ مِنَ ٱلْءَاخَرِ قَالَ لَأَقْتُلَنَّكَۖ قَالَ إِنَّمَا يَتَقَبَّلُ ٱللَّهُ مِنَ ٱلْمُتَّقِينَ
অনুবাদঃ আপনি তাদেরকে আদমের দুই পুত্রের বাস্তব অবস্থা পাঠ করে শুনান। যখন তারা ভয়েই কিছু উৎসর্গ নিবেদন করেছিল, তখন তাদের একজনের উৎসর্গ গৃহীত হয়েছিল এবং অপরজনের গৃহীত হয়নি। সে বললঃ আমি অবশ্যই তোমাকে হত্যা করব। সে বললঃ আল্লাহ ধর্মভীরুদের পক্ষ থেকেই তো গ্রহন করে থাকে।
لَئِنۢ بَسَطتَ إِلَىَّ يَدَكَ لِتَقْتُلَنِى مَآ أَنَا۠ بِبَاسِطٍ يَدِىَ إِلَيْكَ لِأَقْتُلَكَۖ إِنِّىٓ أَخَافُ ٱللَّهَ رَبَّ ٱلْعَٰلَمِينَ
অনুবাদঃ যদি তুমি আমাকে হত্যা করতে আমার দিকে হস্ত প্রসারিত কর, তবে আমি তোমাকে হত্যা করতে তোমার দিকে হস্ত প্রসারিত করব না। কেননা, আমি বিশ্বজগতের পালনকর্তা আল্লাহকে ভয় করি।
إِنِّىٓ أُرِيدُ أَن تَبُوٓأَ بِإِثْمِى وَإِثْمِكَ فَتَكُونَ مِنْ أَصْحَٰبِ ٱلنَّارِۚ وَذَٰلِكَ جَزَٰٓؤُا۟ ٱلظَّٰلِمِينَ
অনুবাদঃ আমি চাই যে, আমার পাপ ও তোমার পাপ তুমি নিজের মাথায় চাপিয়ে নাও। অতঃপর তুমি দোযখীদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাও। এটাই অত্যাচারীদের শাস্তি।
فَطَوَّعَتْ لَهُۥ نَفْسُهُۥ قَتْلَ أَخِيهِ فَقَتَلَهُۥ فَأَصْبَحَ مِنَ ٱلْخَٰسِرِينَ
অনুবাদঃঅতঃপর তার অন্তর তাকে ভ্রাতৃহত্যায় উদুদ্ধ করল। অনন্তর সে তাকে হত্যা করল। ফলে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল।
فَبَعَثَ ٱللَّهُ غُرَابًا يَبْحَثُ فِى ٱلْأَرْضِ لِيُرِيَهُۥ كَيْفَ يُوَٰرِى سَوْءَةَ أَخِيهِۚ قَالَ يَٰوَيْلَتَىٰٓ أَعَجَزْتُ أَنْ أَكُونَ مِثْلَ هَٰذَا ٱلْغُرَابِ فَأُوَٰرِىَ سَوْءَةَ أَخِىۖ فَأَصْبَحَ مِنَ ٱلنَّٰدِمِينَ
অনুবাদঃ আল্লাহ এক কাক প্রেরণ করলেন। সে মাটি খনন করছিল যাতে তাকে শিক্ষা দেয় যে, আপন ভ্রাতার মৃতদেহ কিভাবে আবৃত করবে। সে বললঃ আফসোস, আমি কি এ কাকের সমতুল্যও হতে পারলাম না যে, আপন ভ্রাতার মৃতদেহ আবৃত করি। অতঃপর সে অনুতাপ করতে লাগল।(2)
এখানে তাদের নাম সরাসরি উল্লেখ না থাকলে ও তাদের নাম ছিল হাবিল ও কাবিল যা আহলে কিতাব ইতিহাস দ্বারা প্রমানিত(3)
Reference..........

(1)https://www.google.com/amp/s/chutrapata.wordpress.com/2016/02/28/%E0%A6%87%E0%A6%B8%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%AE-%E0%A6%A7%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AD%E0%A7%81%E0%A6%B2/amp/
(2)সূরা আল মা'য়েদাহ ৫ঃ২৭-৩১;
(3)কুরআনের উক্ত বর্ণনা ছাড়াও ‘জাইয়িদ’ (উত্তম) সনদ সহ আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ও আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস (রাঃ) থেকে ‘মওকূফ’ সূত্রে যা যা বর্ণিত হয়েছে এবং হাফেয ইবনু কাছীর যাকে পূর্ববর্তী ও পরবর্তী একাধিক বিদ্বানগণের ‘মশহূর’ বক্তব্য বলে স্বীয় তাফসীরে ও তারীখে উল্লেখ করেছেন, সে অনুযায়ী আদম পুত্রদ্বয়ের নাম ছিল ক্বাবীল ও হাবীল (قابيل وهابيل ) এবং ক্বাবীল ছিল আদমের প্রথম সন্তান ও সবার বড় এবং হাবীল ছিল তার ছোট।

সোমবার, ১৩ আগস্ট, ২০১৮

ফিতরাহ ও আল্লাহ অস্তিত্ব

                                                                "ফিতরাহ ও আল্লাহ অস্তিত্ব"



আল্লাহ তা'য়ালা আমাদের সৃষ্টি করেছেন।তাই তার অস্তিত্বের বিষয় আমরা বুঝতে পেরেছে যখন আমরা সম্পূর্ণ অস্তিত্ব লাভ করেছ।আসলে প্রতিটি শিশুই জন্মগ্রহণ করে থাকে এই বিশ্বাস নিয়ে যে এই মহাবিশ্বের একজন সৃষ্টিকর্তা আছে।
মহানবি মুহাম্মাদ(সা)বলেছেনঃ
" প্রতিটি নবজাতকই জন্মলাভ করে ফিতরাতের উপর। এরপর তা মা-বাপ তাকে ইয়াহুদী বা খ্রিস্টান বা অগ্নিপূজারী রূপে গড়ে তোলে। যেমন, চতুষ্পদ পশু নিখুঁত বাচ্চা জন্ম দেয়। তোমরা কি তাদের মধ্যে কোন কানকাটা দেখতে পাও? (বরং মানুষেরাই তার নাক কান কেটে দিয়ে বা ছিদ্র করে তাকে বিকৃত করে থাকে। অনুরূপ ইসলামের ফিতরাতে ভূমিষ্ট সন্তানকে মা-বাপ তাদের শিক্ষা-দীক্ষা ও জীবন ধারায় প্রবাহিত করে ভ্রান্ত ধর্মী বানিয়ে ফেলে) পরে আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিলাওয়াত করলেন ‏فِطْرَةَ اللَّهِ الَّتِي فَطَرَ النَّاسَ عَلَيْهَا‏ আল্লাহর দেওয়া ফিতরাতের অনুসরণ কর যে ফিতরাতের উপর তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন। (সূরা রূম: ৩০)"(1)
তাই তার অস্তিত্বের নির্দশন খুঁজতে হবে না কোনো ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কপের নিচে বা হতে হবে না কোনো বড় মাপের বিজ্ঞানী বা দার্শনিক বা এর জন্য কোনো PHD Degree 'র    দরকার নেই। কারণ সেই তা জন্মগতভাবে তা লাভ করে থাকে।
এখন দেখা যাক, আধুনিক বৈজ্ঞানিক গবেষণাতে এর সমর্থনে পরীক্ষালব্ধ প্রমাণ আছে কিনা? অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভলোপমেন্টাল সাইকোলজিস্ট ড. জাস্টিন এল. ব্যারেট শিশুদের উপর গবেষণা করেন। এ ব্যাপারে বেশ কিছু বইও লিখেছেন তিনি। বইগুলোর মাঝে একটি হল “বর্ন বিলিভার্‌স”, যেখানে তিনি সুস্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করেছেন, “… শিশুরা জন্মগতভাবে বিশ্বাসী, যাকে আমি বলি ‘সহজাত ধর্ম’ …” (2)
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানী (নাস্তিক) ড. অলিভেরা প্যাট্রোভিচ Peer Reviewed জার্নালে তাঁর গবেষণার ফল জানান,
“কিছু ধর্মীয় বিশ্বাস যে সার্বজনীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে (যেমন কোন বিমূর্ত সত্তাকে বিশ্বজগতের স্রষ্টা হিসেবে মৌলিক বিশ্বাস), এর (স্বপক্ষে) শক্তিশালী প্রমাণ ধর্মগ্রন্থের বাণীর চেয়ে বরং (বৈজ্ঞানিক) গবেষণা থেকেই বেশি বেরিয়ে আসছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।” (3)
ইনি হলেন একজন বিজ্ঞানী। তিনি নিজের বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলাফল দিয়ে প্রমাণ দেখিয়েছেন যে, মানুষ সহজাত ও স্বতঃস্ফূর্তভাবে অদ্বিতীয়-সর্বোচ্চ এক বুদ্ধিমত্তায় বিশ্বাস গড়ে তোলে। তিনি আরো বলেছেন যে, ধর্মীয় গ্রন্থের চেয়ে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষালব্ধ প্রমাণ দ্বারাই তা শক্তিশালীভাবে সমর্থিত হচ্ছে। কিন্তু তিনি যদি ইসলামি ধর্মমত অধ্যয়ন করতেন তবে অবশ্যই জানতে পারতেন যে, ফিতরাহ্‌-এর এই ধারণা তথা আল্লাহ্‌র অস্তিত্বের প্রতি সহজাত বিশ্বাস ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। ইসলামি গ্রন্থগুলোর পাতার পর পাতা জুড়ে এর উপস্থিতি। একে অস্বীকার করার কোনই উপায় নেই। এর শেকড় ইসলামি ধর্মমতে প্রোথিত। এদিকে ইয়েল ইউনিভার্সিটির আরেক (নাস্তিক) গবেষক পল ব্লুম Peer Reviewed গবেষণাপত্রে প্রমাণ দেখিয়েছেন ঐশ্বরিক সত্ত্বার পাশাপাশি মানুষের যে মন বলে কিছুর অস্তিত্ব আছে এ ধারণাও সহজাতভাবেই শিশুদের মাঝে উদ্ভূত হয়। (4)
সাম্প্রতিক কালে আরো অনেক সেক্যুলার গবেষকদের গবেষণায় প্রতীয়মান হচ্ছে, ধর্মবিশ্বাস প্রাথমিকভাবে ব্যক্তির ভেতর থেকেই উৎপত্তি হয়… যা মৌলিকভাবে মানব মনের এক অংশ…। (5) তাদের সংগৃহীত তথ্য থেকে নতুন তত্ত্ব বেরিয়ে আসছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি তত্ত্ব হল, Strong Naturalness Theory যা পূর্বের প্রভাবশালী Anthropomorphism Theory কে ছুঁড়ে ফেলেছে। Strong Naturalness Theory এর বক্তব্য হল, ধর্মবিশ্বাসের উদ্ভব স্বয়ংক্রিয় ও অভ্যন্তরীণ এবং তা প্রকৃতপক্ষে স্বত:স্ফূর্তভাবে শিশুদের মাঝে উদ্ভূত হয়…। (6)
কথা এখানেই শেষ নয়। এইতো কিছু দিন আগেই প্রায় দুই মিলিয়ন পাউন্ড ব্যয়ে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জন গবেষকের নেতৃত্বে পরিচালিত তিন বছরব্যাপী এক আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রকল্পে ৫৭ জন গবেষক ২০টি দেশে ৪০টি ভিন্ন ভিন্ন গবেষণা পরিচালনা করেন। তাঁদের এই গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল স্রষ্টা ও পরকালের ধারণা কি পিতামাতা বা সমাজ কর্তৃক চাপিয়ে দেওয়ার ফল নাকি মানব প্রকৃতির মৌলিক অভিব্যক্তি তা খুঁজে বের করা। দীর্ঘ গবেষণার পর তাঁরা সিদ্ধান্তে উপনীত হন, স্রষ্টার পাশাপাশি মৃত্যু পরবর্তী জীবনে বিশ্বাসও মানুষের সহজাত প্রবণতার অন্তর্গত। (7)
তাহলে আমরা কী বুঝলাম? এখন পর্যন্ত আমার বক্তব্যের সারমর্ম হচ্ছে, আমাদের আল্লাহ্‌র অস্তিত্বে বিশ্বাস করার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল এই বিশ্বাস ফিতরাহ্‌-এর অংশ, এই বিশ্বাস সহজাত-প্রাকৃতিক। বিশ্বজগতকে প্রকৃতই অস্তিত্বশীল বলে বিশ্বাস করা যেমন যৌক্তিক, আল্লাহর অস্তিত্বে আমাদের এই বিশ্বাসও সম্পূর্ণ যৌক্তিক।

রেফারেন্স:
(1) বুখারী, আস-সহীহ, জানাযা অধ্যায়; খণ্ড ০২, হাদীছ ১২৭৫-১২৭৬ (ঢাকা, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, ৫ম সংস্করণ এপ্রিল ২০০৪)
(2) Dr. Justine L. Barrett, Born Believers: The Science of Children’s Religious Belief; p. 136 (Simon and Schuster, Mar 20, 2012)
(3) Olivera Petrovich, Key psychological issues in the study of religion; Psihologija (2007), Volume 40, Issue 3, p. 360; Available at: https://doi.org/10.2298/PSI0703351P
(4) Paul Bloom, Religion is natural (2007), Journal of Developmental Science 10:1, p. 147-151. DOI: 10.1111/j.1467-7687.2007.00577.x
(5) Patrick McNamara Ph.D., Wesley J. Wildman (etd.), Science and the World’s Religions; vol. 02 (Persons and Groups), p. 206, 209 (Publisher ABC-CLIO , July 19, 2012)
(6) প্রাগুক্ত, p. 210; এ বিষয়ে স্বল্প দৈর্ঘ্যের প্রামাণ্য ভিডিও দেখুন: http://callingtotheone com/is-believe-in-god-natural

(7) University of Oxford. “Humans ‘predisposed’ to believe in gods and the afterlife.” ScienceDaily, 14 July 2011. Available at: http://www. sciencedaily.com/releases/2011/07/110714103828.htm

বিভিন্ন ধর্মে শিশু বিবাহ?

বিভিন্ন ধর্মে শিশু বিবাহ?
 
ইসলাম ধর্মকে যখন বিদ্বেষীরা আক্রমন করতে যায়, তখন যে যে টপিকগুলো তারা সামনে আনে, তার মধ্যে নবিজী সঃ ও আয়শা রাঃ এর বিবাহ অন্যতম। কারন তথ্যমতে আয়শা রাঃ ছিলেন বয়সে অত্যন্ত কম। তাই বিদ্বেষিরা এই ঘটনার সাথে বাল্য বিবাহ, পেডোফিল ইত্যাদি শব্দগুলো জুড়ে দিতে চায়। যাই হোক, নবিজির ও আয়শা রাঃ এর বিবাহ নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষন ও বিদ্বেষীদের জবাব জানার জন্য নিম্নোক্ত লেখাটি পড়ুন, এটি চমৎকার একটি লেখা,
https://www.facebook.com/notes/shihab-ahmed-tuhin/%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%82%E0%A6%B2-%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%83-%E0%A6%93-%E0%A6%86%E0%A7%9F%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A6%BE-%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%83-%E0%A6%95%E0%A7%87-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A7%87-%E0%A6%AF%E0%A6%A4-%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%A5%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%9A%E0%A6%BE%E0%A6%B0/1202195303148076
কিন্তু যেসব ধর্মের লোকেরা ইসলামের শীশু বিয়ের অভিযোগগুলি করতছে তারা মূলত নিজেরাই নিজেদের ধর্মের ব্যাপারে অজ্ঞ। তাই তাদেরকে চোখে আংগুল দিয়ে দেখিয়ে দিতেই এই লেখা।
প্রথমেই আনি হিন্দু ধর্মের কথা।
ফেসবুকিয় দাদারা নবিজির বিবাহ নিয়ে অত্যন্ত বিকৃত প্রপাগন্ডা ছড়িয়ে বেরায়। তারা হরহামেশাই আয়শা রাঃ এর বিয়ে নিয়ে মুসলিমদের খোটা দেয়। তাই আসুন দেখা যাক, তাদের অবতার, ভগবান ও দেবতারা কি করেছেন,
শ্রী রাম বিয়ে করেন মাত্র ৬ বছর বয়স্ক সীতাকে।
হ্যা ঠিকই শুনেছেন। রাম হিঁদুদের কারো কাছে ভগবান, কারো কাছে মহাপুরুষ। আর সীতা হচ্ছে হিঁদুদের নিকট সবথেকে আদর্শ নারী চরিত্র। কিন্তু হিন্দুরা অনেকেই জানে না কিংবা যারা জানে তারা জানতে দেয় না যে সীতার বয়স ছিল মাত্র ৬ বছর যখন রাম তাকে বিবাহ করে। ৬ বছর বয়স থেকেই সে রামের সাথে সংসার শুরু করে রাজা দশরথের প্রাসাদে।
রেফারেন্স, বাল্মিকি রামায়ন, অরন্য খন্ড, ৩.৪৭.৩-১০,
বলা আছে,
সীতার বয়স ছিল ১৮ বছর যখন সে ভগবান রামের সহিত বনবাসে গমন করে। বনবাসের পুর্বে তিনি স্বামী রাম সহিত ১২ বছর কাটিয়েছেন রাজা দশরথের প্রাসাদে। এখানে যদি আমরা সিম্পল অংক করি, তবে দেখতে পাব বিবাহের সময় সীতার বয়স,
১৮-১২= ৬ বছর।
নীচের লিংক থেকে বিস্তারিত পড়ে ও অংক কষে নিজেরাই দেখুন।
http://www.valmikiramayan.net/utf8/aranya/aranya_contents.htm
রামের সাথে বিয়ের সময় সীতার বয়স ৬ বছর ছিল এটি স্পষ্টভাবে পুরানেও উল্লখে আছে।
রেফারেন্স, স্কন্দ পুরাণ ৩.২.৩০.৮-৯, বলা আছে,
রাম বিয়ে করেন রাজা মিথিলার ৬ বছর বয়সী সুন্দরী কন্যা, সীতাকে।
এবার হিন্দু দাদারা রামের ব্যপারে কি বলবে ? (নীচে স্ক্রীনশট)
Skanda Purana, Translated By: Sri Desiraju Hanumantha Rao
কৃষ্ণ বিয়ে করেন ৮ বছর বয়স্ক রুক্মনীকে।
হ্যা ঠিকই শুনেছেন। হিঁদুদের সর্বাধিক জনপ্রিয় অবতার ভগবান শ্রী কৃষ্ণ, যখন রুকমনীকে বিয়ে করেন তখন রুকমনীর বয়স ছিল মাত্র ৮ বছর।
রেফারেন্স, স্কন্দ পুরাণ, ৫.৩.১৪২.৮-৭৯,
Screenshot 1
Screenshot 2
আর সেই শিশু রুকমনীর সাথেই শ্রী কৃষ্ণের যৌনাচার,
রেফারেন্স, ব্রাক্ষ বৈবর্ত পুরান, কৃষ্ণ জন্ম খন্ড, ১১২,১-১০,
"কৃষ্ণ তাহার স্ত্রী রুকমনীর পানে বিমুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছেন, যে কিনা এখনো পরিপুর্নভাবে বেড়ে ওঠে নি এবং যার বয়োসন্ধি শুরু হয়েছে মাত্র এবং যৌনতা সম্বন্ধে এখনো যার কোন ধারনাই গড়ে ওঠে নি । এমন মুহুর্তে কৃষ্ণ তার সহিত যৌনক্রিড়া শুরু করে দিল এবং রুকমনী জ্ঞান হারিয়ে ফেলল "
নীচে স্ক্রীনশট
Brahma Vaivarta Purana, Translated by:  T. R Rajendra Nath Sen
শিব বিয়ে করে ৮ বছর বয়স্ক পার্বতীকে।
হ্যা, অবাক হলেও এটাই সত্য, শিব পার্বতীকে অতি অল্প বয়সেই বিবাহ করে হিমাচলে নিয়ে এসে সংসার শুরু করে। পার্বতীর বয়স ছিল তখন ৮ বছর।
রেফারেন্স, শিবপুরাণ, রুদ্রসংহিতা, পার্বতীখন্ড, ৩.১১.১-২,
Shiva Purana, Translated by: J. L. Shastri
এখানে Himavat  হচ্ছে পার্বতীর আরেক নাম।
হিন্দু দাদাদের কি কিছু বলার আছে তাদের প্রধান প্রধান অবতারদের শিশু বিবাহ নিয়ে ?
খ্রিষ্টানধর্মে শিশু ধর্ষন ও বিবাহঃ
বাইবেলে সরাসরি শত্রুপক্ষের মেয়ে শিশুদেরকে নিজের করায়াত্তে ব্যাবহার করার অনুমতি দিয়েছে ।
বাইবেল কিং জেমস ভার্সন ৩১,১৭-১৮, বলা আছে,
“তাদের প্রত্যেক পুরুষ শিশূকে হত্যা কর, প্রত্যেক নারীকে হত্যা কর যারা পুরুষের সাথে শয্যাযাপন করেছে।
কিন্তু মেয়েশিশু যারা কোণ পুরুষের সহিত শয্যাযাপন করেনি, তাদের জীবিত রাখ নিজের জন্য।”
অনলাইন লিংক
https://www.biblegateway.com/passage/?search=Numbers+31%3A17-18&version=KJV
অর্থাৎ শত্রুদের সকল পুরুষ শীশু ও নারীদের হত্যার আদেশ দিচ্ছে বাইবেল কিন্তু তাদের মেয়ে শিশূদেরকে নিজের জন্য রেখে দিতে বলেছে। কি অমানবিক ও জঘন্য আদেশ বাইবেলের।
অনেক খ্রিষ্টানরা আবার এখানে দাবি করে বসতে পারে যে, মেয়ে শিশূ নিজের জন্য রাখা মানেই সেক্স এর জন্য রাখা নয়, বরং এর মানে তাদের ভরনপোষন এর ভার নেয়া। তবে এই দাবি এখানেই নস্যাত হয়ে যায়, কারন বাইবেল যদি শীশুদের সুরক্ষার জন্য ওই শ্লোক লিখে থাকে, তবে পুরুষ শিশুদের ক্ষেত্রেও একি আদেশ দিত। কিন্তু আমরা প্রথম লাইনে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি সকল পুরুষ শিশুদেরকে হত্যার আদেশ দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ নিঃসন্দেহে মেয়ে শিশুদের ভরনপোষন বা নিরাপত্তার জন্য বাইবেল এই কথা বলেনি বরং তাদের দ্বারা যৌনলিপ্সা বা যেকোন প্রকার লিপ্সা চরিতার্থের অনুমতি প্রদান করেছে বাইবেল।
মাতা মেরীর নাম আমরা নিশ্চয়ই শুনেছি। জানেন কি তার বিয়ে হয়েছিল কত বছর বয়সে ? তার বয়স ছিল ১২ থেকে ১৪ বছর যখন জোসেফের সাথে তার বিয়ে হয়েছিল। আর জোসেফের বয়স ছিল তখন ৯০ বছর। এবার খ্রিষ্টান বিদ্বেষিরা কি বলবে ? জোসেফকে কি তারা পেডোফিল বা শিশু ধর্ষক বলতে পারবে ?
নীচে ক্যাথলিক এনসাইক্লোপিডিয়া দেয়া হল, এখানে Marriage সেকশনটা পড়ুন
http://www.newadvent.org/cathen/08504a.htm

ঈহুদী ধর্মে শিশু বিয়েঃ
ঈহুদী ধর্মানুসারে নবী ঈসহাক ৪০ বছর বয়সে বিয়ে করেন মাত্র ৩ বছর বয়সী রেবকা কে।
এখন ইহুদিরা কি নবী ঈসহাক কে পেডোফিল বলতে পারবে ?
বিস্তারিতঃ
http://jewishworker.blogspot.com/2008/11/how-old-was-rivka-when-she-married.html
  

‘ইসলাম’ অর্থের খোঁজে?


‘ইসলাম’ অর্থের খোঁজে?
“ইসলাম” অর্থ কি? এর অর্থ কি শান্তি, অনেক নামধারী মুসলিমকে যেমনটা বলতে শোনা যায়?
নাকি এর অর্থ “জঙ্গিবাদ”? যা পশ্চিমা মিডিয়া ও এর বিশ্বব্যাপী দোসররা আমাদের বিশ্বাস করাতে উঠেপড়ে লেগেছে। আর এজন্য ব্যয় করছে কোটি কোটি ডলার! বিশ্বাস হচ্ছে না, তাই না? মাসজিদের হুজুররা  কি শুধুশুধু বলে বেড়ায় – ইহুদি খ্রিস্টানরা আমাদের পিছে লেগেছে?
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের Berkeley Center for Race and Gender ও কাউনসিল অন অ্যামেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস (CAIR) কর্তৃক যৌথভাবে পরিচালিত সাম্প্রতিক গবেষণা অনুযায়ী ‘ইসলামোফোবিয়া’ অর্থাৎ ইসলামের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বিদ্বেষ ছড়াতে নিয়োজিত গোষ্ঠিসমূহকে ২০০৮ থেকে ২০১১ সালের মাঝে অনুদান প্রদান করা হয়েছে ২০৫ মিলিয়ন ডলারেরও বেশী অর্থ !! (1)
ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক পরিচালিত সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা যায় যে, ব্রিটেনের মুসলিম সম্প্রদায়কে নিয়ে মূলধারার মিডিয়ার প্রচারণা মুসলিমদের বিরুদ্ধে শত্রুIssভাবাপন্ন পরিবেশ তৈরীতে অবদান রেখে চলছে … (2)
কিন্তু এরপরও ইসলাম বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল ধর্ম। (3) ওয়াশিংটন ভিত্তিক আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা পিউ রিসার্চ সেন্টার কর্তৃক পরিচালিত প্রায় ছয় বছর ব্যাপী চলমান গবেষণার ফল এই শতকের মাঝেই বিশ্বের প্রধান ধর্ম হবে ইসলাম। (4)
অনেকে বলতে চান এই বৃদ্ধির জন্য দায়ী শুধু “বায়োলজিক্যাল গ্রোথ” বা অধিক জন্মহার !! (5) এটা একটি কারণ ঠিকই। তবে তারা সুকৌশলে এড়িয়ে যেতে চান যে শুধু জন্মহার নয়, বরং অন্য ধর্ম বা নাস্তিকতা থেকে ইসলামে আসা এর অন্যতম কারণ। যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নারী !! (6)
তবে কেন এই প্রত্যাবর্তন ?
“ইসলাম” শব্দটির উৎস আরবি মূলশব্দ (সিন লাম মিম) (যার অর্থ আত্মসমর্পন, শান্তি, নিরাপত্তা ইত্যাদি)। প্রাচীন আরবি ভাষার প্রখ্যাত অভিধান লিসানুল্‌ আ’রব অনুযায়ী, “ইসলাম” এর শাব্দিক অর্থ “ইস্‌তিস্‌লাম্‌” অর্থাৎ আত্মসমর্পন করা, অনুগত হওয়া ইত্যাদি। (7)
সামগ্রিকভাবে ইসলাম হল, জীবনের সকল ক্ষেত্রে স্রষ্টার ইচ্ছার কাছে পরিপূর্ণ রূপে আত্মসমর্পন করে শান্তি অর্জন করা। ইসলাম কোন জন্মগত বা বংশগত পরিচয়ের নাম নয়, বরং এর ভিত্তি আদর্শে ও কর্ম। অর্থাৎ ইসলামকে কেবল ধর্ম বলা সম্পূর্ণ ভুল। এটি একটি জীবনব্যবস্থা, একটি সংবিধান, একটি লাইফস্টাইল, একটি ওয়ার্ল্ডভিউ। ভাবতে অবাক লাগে, অনেক অমুসলিম গবেষক ইসলামের সঠিক অর্থ বুঝতে পেরেছেন যা বহু মুসলিম দাবিকারীও পারে নি !! (8)
সুতরাং ইসলামকে বুঝতে হলে আমাদের তিনটি বিষয় সম্পর্কে সম্যক ধারণা রাখতে হবে-
১। স্রষ্টা আছেন তো ? কিভাবে জানব তিনি আছেন কিনা ? তার বৈশিষ্ট্যই বা কি ?
২। তার ইচ্ছা কি ? কিভাবে তার ইচ্ছা আমরা জানতে পারি ?
৩। আর কিভাবে তাঁর ইচ্ছার কাছে পরিপূর্ণভাবে আত্মসমর্পন করে শান্তি অর্জন করা যায় ?
তথ্যসূত্র:
(1) Hamila Kazem, Funding Islamophobia: $206m went to promoting ‘hatred’ of American Muslims. The Gurdian, 20 Jun 2016. Available at: https://www.theguardian.com/us-news/2016/jun/20/islamophobia-funding-cair-berkeley-report
(2) Miqdaad Versi, Why the British media is responsible for the rise in Islamophobia in Britain. The Independent, 4 April 2016. Availabe at: https://www.independent.co.uk/voices/why-the-british-media-is-responsible-for-the-rise-in-islamophobia-in-britain-a6967546.html
(3) Guinness World Records 2003; p. 142 (https://tinyurl.com/mz99w5g)
(4) Nadia Whitehead, A Religious Forecast For 2050: Atheism Is Down, Islam Is Rising. NPR, December 25, 2015. Available at: https://www.npr.org/sections/goatsandsoda/2015/12/25/460797744/a-religious-forecast-for-2050-atheism-is-down-islam-is-rising
(5) The Future of World Religions: Population Growth Projections, 2010-2050. Available at: http://www.pewforum.org/2015/04/02/religious-projections-2010-2050
(6) Why ARE so many modern British career women converting to Islam? The Daily Mail, 28 October 2010. Available at: http://www.dailymail.co.uk/femail/article-1324039/Like-Lauren-Booth-ARE-modern-British-career-women-converting-Islam.html
Jack Doyle, How 100,000 Britons have chosen to become Muslim… and average convert is 27-year-old white woman. The Daily Mail, 5 January 2011. Available at: http://www.dailymail.co.uk/news/article-1343954/100-000-Islam-converts-living-UK-White-women-keen-embrace-Muslim-faith.html
(7) Ibn Manzur, Lisanul A’rab; vol. 7; p. 243 (Al Maktabatul Islamiyyah Online); Lane’s Arabic-English Lexicon; vol 4, p. 1413 (Beirut, Librairie Du Liban, 1968)

(8) Britannica Encyclopedia of World’s Religion; p. 515 (2006 by Encyclopedia Britannica Inc.); Karen Armstrong, Islam A Short History; p. 05 (New york, Modern Library, Paperback Edition 2002); John L. Esposito, Islam: The Straight Path; p. 69 (Oxford University Press, Edition: 2, Illustrated, reissue, 199

নাস্তিক্যবাদ: পরিচিতি [Atheism: An Introduction]

নাস্তিক্যবাদ: পরিচিতি [Atheism: An Introduction]


ইংরেজি Atheist (এথিইস্ট) শব্দটি মূলত গ্রীক থেকে আসা। দুটি গ্রীক শব্দ (a+theos) মিলে গিয়ে এর অর্থ দাঁড়িয়েছে – “এক বা একাধিক স্রষ্টার অস্তিত্বে যে অবিশ্বাসী”।  (1)
তবে এথিইস্ট শব্দের শুরুটা কিন্তু এই অর্থে হয় নি। ইতিহাস থেকে জানা যায় খ্রিস্ট পরবর্তী দ্বিতীয় শতকে খ্রিস্টানরা মুখ বেজার করে অভিযোগ করতো, দেখো! ওরা আমাদের এথিইস্ট বলছে, অথচ এই অভিযোগ ওদের ঘাড়েই বর্তায়! তো ওরা, মানে রোমান পৌত্তলিকেরা খ্রিস্টানদের ‘এথিইস্ট’ বলে অভিহিত করত কেন? কারণ খ্রিস্টানরা রোমান পৌত্তলিকদের প্রচলিত ধর্মকর্মে বিশ্বাসী ছিলো না, তাই। (2) গবেষকদের মতে সেই প্রাচীন যুগে আজকের প্রচলিত অর্থে নাস্তিক কারো হদিশ মেলা ভার। (3) প্রচলিত ধর্মাচারের বিরোধীদের গায়েই নাস্তিক তকমা লাগানো হতো।
অন্যদিকে আজকের বাংলা ভাষায় Atheist এর প্রতিশব্দ হলো ‘নাস্তিক’। এই শব্দের বুৎপত্তিতেও কিন্তু মজার ব্যাপার আছে। উমেশচন্দ্র ভট্টাচার্য তাঁর ‘ভারত দর্শনসার’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন,
“বেদে অবিশ্বাসীরাই নাস্তিক বলে আখ্যায়িত। চার্বাক এই অর্থে নাস্তিক” (4)
বোঝা যাচ্ছে এক্ষত্রে চার্বাকের দোষ ছিলো দ্বিতীয় শতকের খ্রিস্টানদের মতই। খ্রিস্টানরা রোমান পৌত্তকদের আচার-বিশ্বাস মানে নি, আর চার্বাক মহাশয় বেদের বিধিবিধান মানে নি। একই কাতারে শামিল হয় বৌদ্ধধর্ম ও জৈনধর্ম।
ভাষা ও শব্দ যেহেতু বিবর্তনশীল তাই সময়ের স্রোতে নাস্তিক অর্থ স্রষ্টার অস্তিত্বে অবিশ্বাসে এসে থিতু হয়েছে। কিন্তু ঝামেলা হলো, বিদ্যানগণ নাস্তিক্যবাদের কোন সংজ্ঞতেই এখন পর্যন্ত একমত হতে পারেন নি। (5) তো দার্শনিক কামড়াকামড়ি বাদ দিয়ে চলুন প্র্যাকটিকেল চিন্তাভাবনা করা যাক। মোটাদাগে চিন্তা করলে নাস্তিক হতে পারে এমন কেউ যে:
ক) জোরের সাথে দাবী করবে – কোন স্রষ্টা নেই।
খ) স্রষ্টার অস্তিত্বের পক্ষে কোন যুক্তিই তার মন:পূত হচ্ছে না। (কানে কানে বলে রাখি এরা আসলে অজ্ঞেয়বাদের কাতারে শামিল।)
গ) এমনিতেই স্রষ্টায় বিশ্বাস করে না।
আসলে এমন ভাগাভাগি কিন্তু সহজ কাজ না। মানুষ তো আর সোফিয়া রোবটের মত না। আমাদের জীবনদর্শনের পিছে নানা নিয়ামক কাজ করে – আবেগ, পারিপার্শ্বিক চাপ, আধ্যাত্মিক ও মনস্তাত্ত্বিক প্রভাবক, আরো কত কী। তবে আমার অভিজ্ঞতা থেকে বললে, নাস্তিকতা যুক্তি ও বিজ্ঞানপ্রসূত কোন কটমটে বুদ্ধিবৃত্তিক অবস্থান না কিন্তু। এটি গভীরভাবে মনস্তত্ত্বে গ্রথীত। তবে ব্যতিক্রম যে নেই তা বলব না।
নাস্তিক্যবাদ ও অস্তিত্বগত বস্তুবাদ
নাস্তিকদের অধিকাংশ জীবনদর্শন হিসেবে অস্তিত্বগত বস্তুবাদকে গ্রহণ করেন। দার্শনিক বা অস্তিত্বগত বস্তুবাদ বলতে চায় সুবিশাল এই মহাবিশ্বে ঘটে চলা সকল ঘটনাই জাগতিক বা ভৌত প্রক্রিয়ার দ্বারা ব্যাখ্যা করতে হবে। এই ভৌত প্রক্রিয়াগুলো উদ্দেশ্যহীন, এলোমেলো, অযৌক্তিক স্রেফ জড় প্রক্রিয়া। নব্য নাস্তিক্যবাদের অন্যতম পুরোধা রিচার্ড ডকিন্স নাস্তিকদের এই বিশ্বাস সম্পর্কে বলেন,
“দার্শনিক বস্তবাদি অর্থে নাস্তিক হলো এমন ব্যক্তি যে বিশ্বাস করে পার্থিব, ভৌত জগতের বাইরে কিছু নেই। কোনো স্রষ্টা নেই যিনি দৃশ্যমান এই মহাবিশ্বের পিছনে চুপিসারে কলকাটি নাড়ছেন। আত্মার কোন অস্তিত্ব নেই যা মৃত্যুর পরও বেঁচে থাকে, নেই অলৌকিক বলে কোনো কিছু। কেবলই রয়েছে জাগতিক ঘটনাবলী, যা আমরা এখনো বুঝে উঠতে পারি নি।” (৬)
সাহিত্যিক হুমায়ুন আজাদ তাঁর আমার অবিশ্বাস গ্রন্থে লিখেন,
“… আমি কোনো মহাপরিকল্পনা নই, কোনো মহাপরিকল্পনার অংশ নই, আমাকে কেউ তার মহাপরিকল্পনা অনুসারে সৃষ্টি করে নি; একরাশ প্রাকৃতিক ক্রিয়ার ফলে আমি জন্মেছি, অন্য একরাশ প্রাকৃতিক ক্রিয়াকলাপের ফলে আমি ম’রে যাবো, থাকবো না; যেমন কেউ থাকবে না, কিছু থাকবে না।…” (৭)
যদিও এমন নাস্তিকও পাওয়া যায় যারা স্রষ্টার অস্তিত্ব না মানলেও অতিপ্রাকৃত কিছু থাকতে পারে এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দেন না। তবে কানে কানে বলে রাখি, এই দার্শনিক বস্তুবাদও কিন্তু অন্ধবিশ্বাস! কি, অবাক হলেন! এটা আমার কথা না কিন্তু, নাস্তিক গবেষকের কথা যিনি ডকিন্স গংদের চেয়ে তুলনামূলকভাবে সৎ। সুপরিচিত নাস্তিক বিজ্ঞান-দার্শনিক প্রফেসর মাইকেল রুজ বলেন,
“আপনি যদি স্বীকারোক্তি চান তবে শুনুন, আমি সবসময় স্বীকার করেছি বস্তুবাদ হলো স্রেফ অন্ধবিশ্বাস… ” (৮)
আমি হলফ করে বলতে পারি, এমন স্বীকারোক্তি আপনি বঙ্গীয় মুক্তমণাদের লেখাজোকায় পাবেন না। আপনি দেখতে পাবেন এরা পাতার পর পাতা লিখে বুক ফুলিয়ে তা অস্বীকার করে চলছে। (৯) মিডিয়া ফিগার, নাস্তিক ও ফেমিনিস্ট লেখিকা ইজিওমা ওলু’র কলমে এই স্বীকারোক্তি পাওয়া যায়,
“… স্রষ্টা নেই আমার এহেন দৃঢ় বিশ্বাস কেবলই অন্ধবিশ্বাস। আমরা যেমন (বস্তুগতভাবে) প্রমাণ করতে পারবো না যে স্রষ্টা আছেন, একইভাবে এও প্রমাণ করতে পারবো না যে স্রষ্টা নেই। স্রষ্টা না থাকার অনুভূতির স্বীয় সত্তার মাঝে পুরেই আমি দিনানিপাত করি। কিন্তু আমি মোটেও এই ঘোরের মধ্যে থাকি না যে, আমার এই অনুভূতি আস্তিকদের স্রষ্টার অস্তিত্বে দৃঢ় বিশ্বাসের তুলনায় বেশি তথ্যপ্রমাণ নির্ভর।” (10)
[কিছু কথা: এই লেখাটি মূলত আমার পরিকল্পনায় থাকা একটি বইয়ের সূচনার অংশ। নাস্তিক্যবাদে উপর একক একটি বই লিখার ইচ্ছা রয়েছে। চিকিৎসা জীবন খুব ব্যস্ত ও ক্লান্তিকর। এর মাঝে সময় বের করা বাড়তি পড়া, পাশাপাশি লিখার সময় ও শ্রমসাপেক্ষ ব্যাপার। তবুও মহান রবের নিকট প্রার্থনা করি, তিনি যেনো সহায় হন।]
রেফারেন্স:
(1) জুলিয়ান বাগিনি, এথিইজম: এ ভেরি শর্ট ইনট্রোডাকশন; পৃ. ০৩ (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ২০০৩)। অক্সফোর্ড অনলাইন ডিকশনারিতে উপরের সংজ্ঞার সাথে “বা যার বিশ্বাসে ঘাটতি রয়েছে” অংশটুকুও যুক্ত করা হয়েছে। যদিও অন্যান্য প্রথম সারির ইংরেজি অভিধানগুলোতে এই বাড়তি অংশটি পাওয়া যায় না।
(2) স্টিফেন বুলিভ্যান্ট, মাইকেল রুজ (সম্পাদিত), দি অক্সফোর্ড হ্যান্ডবুক অফ এথিইজম; পৃ. ১৫৪-১৫৫ (অক্সফোর্ড, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ২০১৩)
(3) প্রাগুক্ত, পৃ. ১৫২
(4) উমেশচন্দ্র ভট্টাচার্য, ড. আর এম দেবনাথ রচিত সিন্ধু থেকে হিন্দু গ্রন্থে উদ্ধৃত; পৃ. ২০৯ ()
(5) Bullivant, S. (2015). Defining ‘Atheism’. In: The Oxford Handbook of Atheism. Oxford: Oxford University Press, pp. 11-21.
(6) Dawkins, R. (2006) The God Delusion. London: Bantam Press, p. 14
(7) হুমায়ুন আজাদ, আমার অবিশ্বাস; পৃ. ১৩ (ঢাকা, আগামী প্রকাশনী, সপ্তম মুদ্রণ ফেব্রুয়ারী ২০১১)
(8) Stewart, R. B. (ed.). (2007) Intelligent Design: William A. Dembski & Michael Ruse in Dialogue. Minneapolis, MN: Fortress Press, p.37.
(9) অভিজিৎ রায় ও রায়হান আবীর, অবিশ্বাসের দর্শন; পৃ. ২৬৫-২৬৭ (ঢাকা, শুদ্ধস্বর প্রকাশন, ২য় সংস্করণ, ফেব্রুয়ারী ২০১২)

(10) Ijeoma Oluo, My atheism does not make me superior to believers. It’s a leap of faith too. The Guardian, 24 Oct 2015. Available at: https://www.theguardian.com/commentisfree/2015/oct/24/atheism-does-not-make-me-superior-to-believers-its-a-leap-of-faith-too

সত্যকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য  বড় একটি হাতিয়ার ইসলামকে নিন্দা করা!


সত্যকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য  বড় একটি হাতিয়ার ইসলামকে নিন্দা করা!
ইসলামোফোবিয়া (১)
একবিংশ শতকের সূচনালগ্নে মিডিয়া জুড়ে কোন ধর্মের আলোচনা-সমালোচনা-নিন্দা সবচেয়ে বেশি চলে? এ প্রশ্নের উত্তর খুব সহজেই আঁচ করা যায় – সে ধর্ম হলো ইসলাম! এথনিক/কালচারাল/ফোক মুসলিমরা (যদিও এমন কোনো পরিভাষা মূল ইসলামে নেই) ইসলামের কথা শুনলেই কেমন এক হীনমন্যতায় ভোগেন! সন্ত্রাসবাদী ও বর্ণবাদী পশ্চিমাদের মিডিয়া আগ্রাসনে বিচ্ছিন্ন হয়ে ইসলাম নিয়ে অমুসলিম তো বটেই, নামে মুসলিমদের মাঝেও বিরক্তি, আশংকা, ভয় কাজ করতে দেখা যায়।
এর কারণ কী হতে পারে? এর কারন কী সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনাবলী যা আমরা ঘটতে দেখছি? না এর কারন হতাতের সংখ্যা ? তাই যদি হয়, তবে যুক্তির আলোকে অন্য কোন ধর্ম বা মতবাদকে আমাদের ততটুকু “ভয় বা ঘৃণা” করা উচিত হবে কি? যদি আরও বেশী ভীত আমরা হতে না চাই! মুসলিম হিসেবে তা আমরা কখনোই সমর্থন করি না, বরং আমরা আশা ও ভালোবাসার বাণী শোনাতে চাই। কিন্তু কেন এই নেতিবাচক মনোভাব শুধুমাত্র ইসলামের প্রতি? একই কাজ অন্য মতবাদ বা ধর্মের মানুষের ক্ষেত্রে কেনো এতো প্রচার পায় না? কেনো আমাদের ভেতর বিরক্তি ও ভয় উদ্রেক করে না?
এটা কি প্রায় ৪৩ মিলিয়ন ডলার অর্থায়নের ফল যা সরাসরি ইসলামের প্রতি ঘৃণা ও ভয় ছড়াতে অনুদান দেয়া হয়েছিল! অবাক হলেন নাকি? বানিয়ে বলছি না কিন্তু। Center for American Progress এর গবেষণা অনুযায়ী ২০০১ থেকে ২০০৯ সালের মাঝে সাতটি গোষ্ঠি প্রায় ৪২.৬ মিলিয়ন ডলারের বেশি অনুদান প্রদান করেছে ইসলামোফোবিয়া ছড়াতে নিয়োজিত দলগুলোকে !! (1) তাদের প্রচারিত মিথ্যা তথ্য এরপর ছড়িয়ে পড়ে আরও বড় নেটওয়ার্কের মাধ্যমে যাতে অংশ নেয় অ্যাকটিভিস্ট, মিডিয়া, রাজনীতিবিদ এবং আরও অনেকে যা ইসলাম একটি সহিংস ধর্ম এই ভুল ধারণার প্রতিধ্বনি ঘটায়। সাম্প্রতিক সময়ে এই অনুদানের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে আশংকাজনক হারে !
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ভিত্তিক সর্ববৃহৎ মুসলিম সিভিল রাইটস এবং অ্যাডভোকেসি সংস্থা কাউনসিল অন অ্যামেরিকান -ইসলামিক রিলেশনস (CAIR) কর্তৃক ২০১৩ সালে প্রকাশিত “Legislating Fear: Islamophobia and its Impact in the United States” প্রতিবেদনে জানা যায় ইসলাম বিরোধী গোষ্ঠীগুলো ২০০৮-২০১১ সালের মাঝে অনুদান পেয়েছে ১১৯ মিলিয়ন ডলারেরও বেশী অর্থ !! (2) ২০১৬ সালে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের Berkeley Center for Race & Gender এবং CAIR যৌথভাবে গবেষণার ফল প্রকাশ করে “Confronting Fear: Islamphobia and its Impact in the United States” প্রতিবেদনে, এবং জানায় যে ২০০৮-২০১৩ সালের মাঝে ইসলামোফোবিয়া ছড়াতে নিয়োজিত দলগুলো অনুদান পেয়েছে ২০৫ মিলিয়ন ডলারেরও বেশী অর্থ!! (3)
আচ্ছা, যদি এই পরিমাণ অর্থ অন্য কোন মতবাদ (যেমন: গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র) বা কোনো ধর্মের বিরুদ্ধে ঘৃণার আগুন ছড়াতে ব্যবহৃত হয় তবে কি পরিণতি হবে?
সেক্যুলার পশ্চিমা গবেষকদের গবেষণায় জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ইসলামোফোবিয়া নেটওয়ার্কের অন্তঃকেন্দ্রে রয়েছে প্রায় ৩৩টি গোষ্ঠী যাদের মূল লক্ষ্য হল ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে ভুল ধারণা ও বিদ্বেষ ছড়ানো। এছাড়া আরও ৪১টি দল ইসলামোফোবিয়ার সমর্থনে কাজ করে যাচ্ছে যাদের দ্বারা নেটওয়ার্কের বহিঃকেন্দ্র গঠিত। (4) ইসলাম বিরোধী আইন প্রণয়নের ধারাবাহিকতায়, ২০১৫ সালে ৩১টি বিল বা সংশোধনী প্রণয়ন করা হয়েছে ১৭টি অঙ্গরাজ্যের আইন সভায় যার মূল লক্ষ্য মুসলিমদের ধর্মীয় আচারসমূহের প্রতি নিন্দা জ্ঞাপন করা। এর মধ্যে ২৩টি বিল সেই ভাষা বহন করে যা ডেভিড ইয়েরুশ্যালমাই এর “অ্যামেরিকান ল’স ফর অ্যামেরিকান কোর্টস (ALAC)” থেকে গৃহিত। কেন এই বিষয়টি জানা জরুরি? কারণ ডেভিড অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে মুসলিম বিরুদ্ধে ঘৃণা ও ভীতি ছড়াতে সিদ্ধহস্ত। এরপরও আইন নেয়া হচ্ছে তার থেকে? এই বিলগুলোর মাঝে ৩০টি বিল প্রণয়নে অর্থায়ন করেছে শুধুমাত্র রিপাবলিকান নেতারা। বাকি একটি বিল প্রণয়নে রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক উভয় পক্ষ অংশ নিয়েছে!
মূল ইসলামকে পরিবর্তন করে কিভাবে ‘মডারেট ইসলাম’কে প্রচলিত করা যায় সে উদ্দেশ্যে একের পর এক গবেষণা পত্র প্রকাশিত হচ্ছে! (5) কিন্তু কেন তারা এই নিচু কৌশল অবলম্বন করছে? কারণটা সহজ, তারা দূর্বলের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায় বা তারা ‘ইনফিরিয়রিটি কমপ্লেক্স’ এ আক্রান্ত কারণ তারা এমন বিক্রেতা যার পন্য নিম্নমানের। তাই আপনাদের কাছে তাদের পণ্য বিক্রির জন্য তাদের মনোনিবেশ করতে হয় অন্যের ব্যাপারে অতিরঞ্জিত মিথ্যা ছড়াতে। (6) অধিকাংশ সময় তাদের এই চেতনার প্রকাশ ঘটে, কারণ তারা জানে যা তাদের নিকট আছে তা কোনক্রমেই উত্তম নয়। তাছাড়া এই নেতিবাচক মানুষগুলো আত্মিকভাবেও ব্যর্থ।
তাহলে আমরা কেন ভীত?
কারণ কিছু মানুষের অন্তর ঘৃণায় পরিপূর্ণ, আর তারা এই ঘৃণার আগুন ছড়িয়ে দিচ্ছে যাতে করে আমরাও ‘ঘৃণা ও ভয়ের’ মহামারীতে আক্রান্ত হই। বিশ্বায়নের যুগে এই আগুন ছড়িয়ে পড়ছে সারা বিশ্বে দাবানলের মত। (7) ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে মাসজিদগুলোর ওপর ৭৮ বার হামলা করা হয়েছে যা আগের বছরগুলোর তুলনায় ৩গুন! (8) যুক্তরাজ্যে মুসলিম বিদ্ধেষী আক্রমণের হার ২০১৫ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২৬%, যার লক্ষ্যবস্তুর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নারী, প্রায় ৬১% ! (9)
এর মানে কি মুসলিমরাও ঘৃণা ছড়াবে? না। বরং তাদের আরও বেশী উদ্যমী হতে হবে সত্য প্রকাশে এবং ইসলামের সৌন্দর্যকে যৌক্তিকভাবে মানুষের সামনে উপস্থাপন করতে। আশার কথা হলো, এত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অসংখ্য অমুসলিম ইসলামকে অধ্যয়ন করে নিজের জীবন ব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করছে ! (10) অবাক হচ্ছেন?
অবাক হওয়ার কিছু নেই। আমাদের প্রত্যেকেরই নিজস্ব চিন্তাশক্তি ও মনন হয়েছে। যখন আমাদের চিন্তা ও চেতনায় গণমাধ্যমের অনধিকার প্রবেশ আমরা বন্ধ করতে পারব, কেবল তখনই মুক্তি সম্ভব। তা না হলে আমরা মিডিয়ার দাসে পরিণত হব। ম্যালকম এক্স (11) বলেছিলেন,
“The media’s the most powerful entity on earth. They have the power to make the innocent guilty and to make the guilty innocent, and that’s power. Because they control the minds of the masses.”
“মিডিয়া হল পৃথিবীর বুকে অত্যন্ত ক্ষমতাধর সত্ত্বা। তাদের ক্ষমতা আছে নির্দোষকে অপরাধী ও অপরাধীকে নির্দোষে পরিণত করার, এবং এটা সত্যিই এক শক্তি। কারণ, তারা জনসাধারণের মনকে নিয়ন্ত্রণ করে।” (12)
তাই আসুন নিজের অন্তরকে সত্যের পানে উন্মুক্ত করি, সত্য জানতে সচেষ্ট হই। কারণ, সত্য মুক্তির পথ দেখায়।
রেফারেন্স:
(1) https://www.americanprogress.org/issues/religion/report/2011/08/26/10165/fear-inc/
(2) http://www.cair.com/press-center/press-releases/12149-cair-report-islamophobia-network-funded-with-119-million-2008-to-2011.html ; http://www.nydailynews.com/news/national/anti-muslim-groups-rake-millions-u-s-article-1.1461566
(3) Confronting Fear: Islamphobia and its Impact in the United States, p. vii
http://crg.berkeley.edu/content/confronting-fear
https://www.theguardian.com/us-news/2016/jun/20/islamophobia-funding-cair-berkeley-report
http://www.nbcnews.com/news/asian-america/mosque-attacks-apparent-anti-islam-spending-report-n595826
http://www.aljazeera.com/indepth/features/2016/06/report-islamophobia-multi-million-dollar-industry-160623144006495.html
(4) Confronting Fear: Islamphobia and its Impact in the United States, p. vii
(5) মডারেট ইসলাম (Moderate Islam) বাস্তবায়নে RAND Corporation এর পরিকল্পনা পত্র Civil Democratic Islam, Building Moderate Muslims Network ইত্যাদি।
(6) http://money.cnn.com/2015/01/18/media/fox-apologizes-for-anti-islam-comments
(7) http://www.gallup.com/poll/157082/islamophobia-understanding-anti-muslim-sentiment-west.aspx
(8) Confronting Fear: Islamphobia and its Impact in the United States, p. viii
(9) http://www.independent.co.uk/news/uk/home-news/brexit-muslim-racism-hate-crime-islamophobia-eu-referendum-leave-latest-a7106326.html
(10) https://m.youtube.com/watch?v=_DeBzL9TJBs ; https://m.youtube.com/watch?v=vSGNybMDTgI
(11) Malcolm X (১৯২৫-১৯৬৫) ছিলেন একজন আফ্রিকান-মার্কিন মুসলিম রাজনীতিবিদ ও ধর্মীয় নেতা, যিনি যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গদের মানবাধিকার আদায়ের আন্দোলনে অন্যতম অংশগ্রহণকারী ছিলেন। জন্মের পর তাঁর নাম দেওয়া হয় Malcolm Little । পরবর্তীতে Nation of Islam এর নেতা ও নব্যুওয়াতের দাবীদার এলিজা মুহাম্মদের আদর্শ (Elijah Muhammad) দ্বারা প্রভাবিত হন ও তার মত গ্রহন করেন। তাঁর নতুন নাম হয় ম্যালকম এক্স।
ঘটনাচক্রে তিনি Elijah Muhammad এর গোপন চারিত্রিক কলুষণের সংবাদ পান ও গভীরভাবে আহত হন কারণ তিনি তাকে নবী মনে করতেন। পরবর্তীতে তিনি মক্কাতে হজ্জে গমন করেন। সেখানে বিশ্বভ্রাতৃত্বের স্বরূপ দেখে তিনি উজ্জীবিত হন ও মূল ধারার ইসলাম গ্রহণ করেন। তিনি আল-হাজ্জ মালিক আল-শাব্বাজ নামেও পরিচিত।
দেখুন: http://malcolmx.com/biography

(12) https://www.goodreads.com/quotes/74430-the-media-s-the-most-powerful-entity-on-earth-they-have

আইয়ুব (আ) সম্পর্কে বিভ্রান্তি?

আইয়ুব (আ) সম্পর্কে বিভ্রান্তি?
কুরআনে বলা হয়েছে যে, আইঊব (আ) বিপদগ্রস্থ হয়ে সবর করেন এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। আল্লাহ তাঁর দোয়া কবুল করেন এবং তাকে বিপদাপদ থেকে উদ্ধার করেন। তাঁকে তাঁর সম্পদ ও সন্তান ফিরিয়ে দেন।[1]
আইঊব (আ)-এর বালা-মুসিবত বা বিপদাপদের প্রকৃতি, ধরন, বিবরণ, সময়কাল, তাঁর স্ত্রীর নাম, আত্মীয় স্বজনের নাম ইত্যাদি সম্পর্কে কোনো বর্ণনা কুরআন কারীম বা সহীহ হাদীসে নেই। এ বিষয়ক যা কিছু বলা হয় সবই মূলত ইসরাঈলীয় রেওয়ায়াত। অধিকাংশ বিবরণের মধ্যে লাগামহীন কাল্পনিক বর্ণনা রয়েছে। বিভিন্ন মুফাস্সির এ বিষয়ে বিভিন্ন কথা বলেছেন। বিশেষত, ওয়াহ্ব ইবনু মুনাবিবহ, কা’ব আল-আহবার প্রমুখ তাবিয়ী আলিম, যারা ইহূদী ধর্ম থেকে ইসলাম গ্রহণ করেন এবং ইহূদীদের ধর্মগ্রন্থ ও তাদের মধ্যে প্রচলিত কাহিনী সম্পর্কে অভিজ্ঞ ছিলেন তাঁরাই এ সকল গল্প ‘গল্প’ হিসেবে বলেছেন।[2]
এগুলোকে গল্প হিসাবে বলা যেতে পারে, কিন্তু কখনোই সত্য মনে করা যাবে না। বিশেষত এ সকল গল্পে আইয়ূব (আ)-এর রোগব্যাধির এমন কাল্পনিক বিবরণ রয়েছে যা একজন নবীর মর্যাদার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। কোনো সহীহ হাদীসে বর্ণিত হলে আমরা তা গ্রহণ করতাম ও ব্যাখ্যা করতাম। কিন্তু যেহেতু কোনো সহীহ হাদীসে এ বিষয়ে কিছুই বর্ণিত হয় নি এবং এগুলো ইসরাঈলীয় বর্ণনা ও গল্পকারদের গল্প, সেহেতু এগুলো পরিত্যাজ্য। এ বিষয়ে দরবেশ হূত (১২৭৬ হি) বলেন, ‘‘আইয়ূব (আ)-এর গল্পে বলা হয় যে, আল্লাহ তাঁর উপরে ইবলিসকে ক্ষমতাবান করে দেন। তখন ইবলিস তাঁর দেহের মধ্যে ফুঁক দেয়। এতে তাঁর দেহ কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হয়। এমনকি তার শরীরের গোশত পচে যায় ও পোকা পড়তে থাকে ... ইত্যাদি। এগুলো গল্পকাররা বলেন এবং কোনো কোনো মুফাস্সির উল্লেখ করেছেন। ... এ সকল কথা সবই নির্ভেজাল জাল, মিথ্যা ও বানোয়াট কথা। যে-ই একথা বলুন বা উদ্ধৃত করুন না কেন, তাঁর মর্যাদা যত বেশিই হোক না কেন, তাতে কিছু আসে যায় না।  এ সকল কথা আল্লাহর কিতাবে বলা হয় নি এবং তাঁর রাসূলের () কোনো হাদীসেও তা বর্ণিত হয় নি। এমনকি কোনো যয়ীফ বা বাতিল সনদের হাদীসেও তা বর্ণিত হয় নি। এ সহীই সনদ বিহীন বর্ননা..।’’[3] মূলত এই গুলো বাইবেলের বনর্ণা যা মুসলিম সমাজে প্রবেশ করেছে। বাইবেল বলছেঃ
" তখন শয়তান প্রভুর কাছ থেকে চলে গেল| শয়তান যন্ত্রণাদাযক ফোড়ায আইয়োবের পা থেকে মাথা পর্য়ন্ত ভরিয়ে দিল তখন আইয়োব ছাইযের গাদার মধ্যে বসলেন| একটা ভাঙা খোলামকুচি (সরা বা হাঁড়ির ভাঙা টুকরো) দিয়ে তিনি তাঁর ক্ষত চাঁছতে লাগলেন"[4]
"তাই, পচনশীল কাঠের মত, পোকা খাওয়া কাপড়ের মত আমি দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়ে যাচ্ছি|”[5]

Reference........
[1] সূরা (২১) আম্বিয়া: ৮৩-৮৪ আয়াত; সূরা (৩৮) সাদ: ৪১-৪৪ আয়াত।
[2] ইবনু কাসীর, কাসাসুল আম্বিয়া ১/২৩০-২৩৬; আবূ শুহবাহ, আল-ইসরাইলিয়্যাত, পৃ. ২৭৫-২৮২।
[3] দরবেশ হূত, আসনাল মাতালিব, পৃ. ২৮৪।
[4]Book of job 2:7-8
[5]Book ofcjob 13:28

কোরান কি সঠিকভাবে সংরক্ষন করা হয়েছে?

কোরান কি সঠিকভাবে সংরক্ষন করা হয়েছে পর্ব-১ কি যেন বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এটা কি আলোচনা নাকি সমালোচনা ঠিক বুঝি উঠতে পারছিলাম না। আমরা উপ...